ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভুটানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের হতাশার ড্র

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৫ অক্টোবর ২০১৫

ভুটানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের হতাশার ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ধারাবাহিকহীনতার অনুপম নিদর্শন বোধ হয় একেই বলে! আগের ম্যাচে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আশাব্যঞ্জক জয়। অথচ পরের ম্যাচেই তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের সঙ্গে হতাশাজনক ড্র। আর এই হতাশাজনক কাজটি করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এএফসি অনুর্ধ-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বের ‘এ’ গ্রুপের খেলায় রবিবার বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করেছে ভুটানের সঙ্গে। ম্যাচের প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ভুটান। আবহাওয়া, পরিবেশ, দর্শক ও মাঠÑ সবকিছুতেই সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। উল্টো আগেই এক গোল হজম করে উল্টো হারার আশঙ্কায় ছিল তারা! যে ভুটান তাদের আগের ম্যাচে ০-৭ গোলে শোচনীয়ভাবে হেরেছিল উজবেকিস্তানের কাছে, সেই ভুটান অবিশ্বাস্য ফুটবল খেলে প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারানো বাংলাদেশকে রবিবারের ম্যাচে মনে হয়েছে অতি আত্মবিশ্বাসী। এরই খেসারত দিতে হয়েছে গোল হজম করে। ভুটানের চেয়ে বেশি আক্রমণ করে খেললেও বাংলাদেশের আক্রণগুলোর বেশিরভাগই ছিল পরিকল্পনাহীন, ধারহীন এবং বিরক্তিকর! কোচ টিটু ম্যাচের আগে চেয়েছিলেন দ্রুত গোল। সেটা ঠিকই হয়েছে। তবে তার দলের পক্ষে নয়, বিপক্ষে! ম্যাচ শেষে টিটুকে যথেষ্ট ক্ষিপ্ত মনে হচ্ছিল তার শিষ্যদের ওপর। তবে এই ড্রয়েও শেষ হয়ে যায়নি বাংলাদেশের গ্রুপ রানার্সআপ হওয়ার স্বপ্ন। শেষ ম্যাচে ভুটান শ্রীলঙ্কাকে হারালে এবং বাংলাদেশ উজবেকিস্তানের কাছে হারলেও গোলপার্থক্যে বাংলাদেশই হবে গ্রুপ রানার্সআপ। আর যদি ভুটান জেতে আর বাংলাদেশ ড্র করে, তাহলে পয়েন্ট ব্যবধানেই বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ হবে। অবশ্য সেটা হলেও বাছাইপর্বের সেরা পাঁচ রানার্সআপ দলের একটি হয়ে চূড়ান্তপর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশের জন্য অনেক কঠিনই হওয়ার কথা। ম্যাচের ৬ মিনিটেই এগিয়ে যায় ভুটান। কর্নার থেকে ছোট বক্সে বল পেয়ে শট নেন ভুটানের ডিফেন্ডার সোনম টবগে। কিন্তু সেখানে দাঁড়ানো বাংলাদেশের ডিফেন্ডার বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন। টবগে সুযোগ কাজে লাগিয়ে বল জড়ান জালে (১-০)। ৩৩ মিনিটে বাংলাদেশের ইব্রাহিমের ক্রস বক্সে পেয়ে মান্নাফ রাব্বি শট নিলে বল ফিস্ট করেন ভুটান গোলরক্ষক জ্যাংপো। ফিরতি বলে শাহরিয়ার বাপ্পি শট নিলেও বল ধরে ফেলেন জ্যাংপো। ৪২ মিনিটে ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। কিন্তু ইব্রাহিমের ফ্রি কিক ভুটানের রক্ষণ দেয়ালে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে মাসুক মিয়া জনি শট নিলেও বারের ওপর দিয়ে চলে যায় বল। অনেক সাধ্য-সাধনার পর অবশেষে ৭৮ মিনিটে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। বা প্রান্ত থেকে ইব্রাহিমের ফ্রি কিকে পোস্টের খুব কাছ থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাসুক মিয়া জনি (১-১)। তারপর অনেক চেষ্টা করেও আর গোল করতে না পেয়ে খেলা শেষে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে টিটুর শিষ্যরা। বাংলাদেশের শেষ ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার, উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ধ্যা ৬টায়। এই আসরে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ছয়বার অংশগ্রহণ করেছে। প্রথম ১৯৭৫ সালে, সর্বশেষ অংশগ্রহণ ২০০২ সালে। প্রতি আসরেই গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যতিক্রম ১৯৮০ সালে। সেবার অবশ্য পাঁচটি দল লিগ পদ্ধতিতে খেলেছিল। সর্বোচ্চ ৪ ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। চার ম্যাচে দুই পয়েন্ট সংগ্রহ করা বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ জাতীয় দলটি এ আসরে খেলতে প্রস্তুতি নিয়েছে প্রায় তিন মাস। দলটি বাফুফে ফুটবল একাডেমি ও অন্যান্য বয়সভিত্তিক পর্যায়ের খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া হয়েছে।
×