ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

জ্বলে ওঠে আগুন বজ্র হেন ভারি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৫ অক্টোবর ২০১৫

জ্বলে ওঠে আগুন  বজ্র হেন ভারি

জঙ্গীবাদ দমনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানানোর দু’সপ্তাহের মাথায় ব্রিটিশরা আবিষ্কার করেছে যে, বাংলাদেশে তাদের লোকজনের চলাফেরা নিরাপদ নয়। এমনকি জঙ্গী হামলা হতে পারে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। একই সময়ে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দল নিরাপত্তার কাল্পনিক অজুহাত তুলে সফর স্থগিত করেছে। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রিটেনের মতো দেশ তাদের লোকদের বাংলাদেশে সতর্ক হয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে। ঠিক একই সময়ে গুলশানে ইতালির নাগরিকের গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার পাঁচদিনের মাথায় রংপুরে জাপানী নাগরিক খুন হওয়ার ঘটনাগুলো নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। দুটি হত্যাকা-েই তিনটি করে বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে। হত্যাকারীরা মোটর সাইকেলযোগে এসে গুলি করে। দুটি খুনের নেপথ্য কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও দু’জন বিদেশী নাগরিকের এই আকস্মিক খুন হওয়া ঘটনায় স্পষ্ট হয়Ñ কোথাও ষড়যন্ত্র গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি যখন সুনসান, জনজীবন স্বাভাবিক, রাজনৈতিক কলুষতামুক্ত পরিবেশ তখন নিরাপত্তাজনিত সমস্যা বাংলাদেশে খুঁজে পেয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলো। আর এসবই ঘটেছে, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধরিত্রী কন্যার পুরস্কার নিচ্ছেন, ওবামার সঙ্গে কো-চেয়ারম্যান হচ্ছেন, বিশ্বে তাঁর নেতৃত্ব প্রশংসিত হচ্ছে, বাংলাদেশের অবস্থান অনেক উন্নত হচ্ছে, দেশ গর্ববোধ করছে, স্বপ্ন দেখছে, ঠিক সে মুহূর্তে এসব ঘটনার ঘনঘটা অনেকটা আকস্মিক হলেও এর নেপথ্যে যে একটা ধারাবাহিকতা রয়েছে, তা বোঝা যায় গত দেড় দশকের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে। বিস্ময় জাগে, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস জঙ্গীবাদকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আখ্যায়িত করে তা মোকাবেলার জন্য সব রাষ্ট্রকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। এমনকি এটাও বলেছেন, বিশ্বে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আজ আমরা সবচেয়ে বড় দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি, যার একটি সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস জঙ্গীবাদ। এটি বিশ্ব শান্তিরও অন্তরায়। সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই, সীমানা নেই। এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যখন শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দাঁড়িয়ে সব রাষ্ট্রকে আহ্বান জানাচ্ছেন, তখন বাংলাদেশে আকস্মিক জঙ্গীর আশঙ্কা নিয়ে বিদেশী রাষ্ট্রের ঘোষণা, বাংলাদেশবাসী হিসেবে বিচলিত করবেই। কারণ বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে সন্ত্রাস এবং সহিংস জঙ্গীবাদের শিকার। শেখ হাসিনা নিজেও এর শিকার হয়েছেন। আর এই সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি পালন করে আসছে। জাতির গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে যারা জড়িত, সেসব চরমপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তৎপর সরকার। যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার জন্য যারা উঠেপড়ে লেগেছে, তারা নিশ্চয় হাত গুটিয়ে বসে নেই। তাদের দেশী-বিদেশী সংযোগ দুর্বল নয়। বেশ শক্তিশালী বলা যায়। বর্তমান মুহূর্তে দেশে-বিদেশে এক অশুভ শক্তির উত্থানের অপচেষ্টা চলছে বলে সরকারী দলের নেতারা বলছেন। কিন্তু বাস্তবে দেশে এই উত্থান রুখে দিতে শক্তিরা সংঘবদ্ধ নয়। আন্তর্জাতিক পরিসরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া যারা মেনে নিতে পারছে না, তাদের মধ্যে অশুভ চিন্তার বিস্তার ঘটা অসম্ভব নয়। এরূপ ঘটনা অতীতেও দেখা গেছে। মার্কিন সংবাদপত্রের চিঠিপত্র কলামে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে যাতে জিএসপি সুবিধা দেয়া না হয়, সেজন্য আবেদন জানিয়ে লবিস্টের মাধ্যমে পত্র ছাপানো হয়েছিল। আর তা করেছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোট নেত্রী। যিনি এদেশে জঙ্গী সংগঠন গড়ে তোলা, তার বিস্তার ঘটানো, অস্ত্র সংগ্রহ, অপারেশন চালানো এবং তাদের নির্বিঘেœ দেশত্যাগ- সবই করেছেন। ক্ষমতায় বসে বেগম জিয়ার তদীয় হাওয়াভবন খ্যাত পুত্র এই জঙ্গীদের ছিল পৃষ্ঠপোষক। এমনকি দুবাইয়ে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেক এবং সে সময়ের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে নিয়ে দু’দফা বৈঠক করেছে। ১৯৯৩ সালের মার্চে মুম্বাই বিস্ফোরণের পর দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তান অবস্থান করলেও দুবাইয়ে তার ঘাঁটি রয়েছে। সেই দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেকের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গেছে, এমনটা হিসেবে মেলে না। বাংলাদেশে সন্ত্রাস পরিচালনায় দাউদ ইব্রাহিম যে তারেকের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী অংশ নিয়েছেন, তা আজো উদঘাটন করা হয়নি। যাদের দায়িত্ব, তাদের অজ্ঞতা বা অদক্ষতার জন্য সব তথ্য বেরিয়ে আসছে না। বাংলাদেশে জঙ্গী নেই, এমন কথা বিএনপি-জামায়াতই বলে আসছে। বাংলাভাই নামক জেএমবি নেতাকে খালেদা-নিজামী মিডিয়ার সৃষ্টি বলে মন্তব্য করে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে চেয়েও পারেননি। বাংলাদেশ সরকার অবশ্য বলছে, বাংলাদেশে সে অর্থে কোন জঙ্গী বা সন্ত্রাসী নেই। মাঝে মাঝে দু’একটা সন্ত্রাসী কর্মকা- দেখা গেলেও কঠোরভাবে দমন করা হচ্ছে। কাজেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন হুমকি নেই বাংলাদেশে। আর তা না থাকাটাই দেশবাসীর কাম্য। যদিও এ পর্যন্ত আটক জঙ্গীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। তাই সন্ত্রাসী ও জঙ্গী হামলার মামলাগুলো ঝুলে আছে যথাযথ চার্জশীট দিতে না পারায়। আইনের গতি ধীরলয়ে চলার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। এটা তো পরিষ্কার যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সুবিধাবাদের জন্যই কিছু কিছু চিহ্নিত রাজনৈতিক দল তথা বিএনপি-জামায়াত জোট আদর্শিক এবং সামাজিকভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীগুলোকে। তাই তাদের শাসনামলে এই উগ্রবাদ জঙ্গীবাদে রূপ নিয়েছিল। ২১ আগস্ট, ১৭ আগস্ট ছাড়িয়ে ২০১৩, ১৪ ও চলতি বছরের প্রথম তিন মাস যে উগ্র, জঙ্গী ও সন্ত্রাসকে আশ্রয় করে নিজের অবস্থান জঙ্গী নেত্রীত্বে পরিণত করেছিলেন, সেই তিনি টানা তিন মাস নিজ দলের কার্যালয়ে অবস্থান করে অবরোধ-হরতাল শীর্ষক জীবন্ত মানুষ হত্যা, বোমা নিক্ষেপ, যানবাহনসহ সম্পত্তি পোড়ানো নামক জঙ্গী তৎপরতা চালিয়ে গেলেন। ২০০১ সাল থেকে ২০১৫ সালের এই সময়কাল পর্যালোচনা করলে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে, বেগম জিয়া মূলত জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের ওপর নির্ভরশীল শুধু নন, গুরুমাতার মতো তাদের গুরু নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। গত এপ্রিলে বাড়ি ফিরে যাবার পর তিনি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের প্রচারণায় বেরিয়ে গণরোষে পতিত হয়ে রাজপথবিমুখ হয়ে পড়েছেন। জঙ্গীপনা একবার আছর করলে, তার থেকে ফিরে আসা সহজসাধ্য নয় বলেই বেগম জিয়া স্বাভাবিক রাজনীতি তথা সংসদীয় রাজনীতির প্রতি বিমুখ হয়ে পড়েছেন। আস্তরণে ঢাকা বয়সের ভার এড়িয়ে রাজপথ-জনপদ কাঁপানোর দিন তার গিয়েছে ফুরিয়ে। উত্তরসূরিকে ক্ষমতাসীন তথা গদিনশীন করার যে খোয়াব তিনি দেখে আসছেন, তা স্বাভাবিক রাজনীতির পন্থায় আর সম্ভব হবে না ভেবেই তিনি সরকারের গদি উল্টাতে ষড়যন্ত্রে শামিল হবেনÑ এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। জঙ্গীবাদ লালন-পোষণ বেগম জিয়া উত্তরাধিকার সূত্রেই পেয়েছেন। আর তার দুর্নীতির বরপুত্র ইন্টারপোলের রেড এ্যালার্ট থাকা গুণধর পুত্র জঙ্গীদের ব্যবহার করে ক্ষমতা দখলে মরিয়া বলেই ধারণা অনেকের। ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত অনেক বাংলাদেশী মুজাহিদিন আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে এলে জিয়াউর রহমান এদের মদদ দিয়েছিলেন বলে সুইডিশ সাংবাদিক ও লেখক বারটিল লিটনার উল্লেখ করেছেন। এই সব মুজাহিদিনের নেতা মোহাম্মদ গোলামের সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন ২০০২ সালে। তাতে উল্লেখ করেছেন, জিয়া দেশকে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। মুজাহিদরাও শরিয়াভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতের ছত্রছায়ায় তাদের ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে উগ্রবাদের বিকাশ ঘটায়। আফগান-সোভিয়েত যুদ্ধে মুজাহিদরা আফগান মুজাহিদিনের পক্ষে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। ১৯৮৯ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশে তাই উগ্রবাদী কর্মকা- দেখা যায়নি। মূলত ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সময়কালকে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ‘ইনকিউবেশান পিরিয়ড’ বলে মনে করেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশীয় জঙ্গী গোষ্ঠীর উত্থান হয়। দেশে-বিদেশে তাদের নেটওয়ার্কের ব্যাপক প্রসার ঘটে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ সালের শেষ পর্যন্ত জঙ্গীবাদের ভয়াবহ রূপ দেশবাসী দেখেছে। খালেদা জিয়া একবার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রয়োজনে আরেকটি ১৫ আগস্টের সৃষ্টি করা হবে। সে শপথ পূরণে ২১ আগস্টেও গ্রেনেড হামলা হয়েছে। বহু হতাহত হয়েছিল। দেখা যায়, ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত যে সব জঙ্গী সংগঠন অবাধে তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল, তার মধ্যে ৪টি গোষ্ঠী হাওয়াভবন ও জামায়াত-বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতা, সক্ষমতা, দক্ষতা ও জনবলের জন্য গণমাধ্যমে আলোচিত হয়ে উঠেছিল। জেএমবি, জেএমজেবি, হরকত-উল-জিহাদ ও হিযবুত তাহরীরÑ এসব সংগঠন শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে নিষিদ্ধ করে। জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিহ্নিত করে যে জামায়াতে ইসলামীকে আজ যুক্তরাষ্ট্রও বলছে জঙ্গী সংগঠন এই তারাই বছরদশেক আগেও জামায়াতকে মডারেট ইসলামী দল বলে অভিধা দিয়েছিল। ২০০৩ সালে কানাডিয়ান ইন্টেলিজেন্স সিকিউরিটি সার্ভিসেস এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছিল, ‘‘ইধহমষধফবংয মড়াবৎহসবহঃ রং হড়ঃ ফড়রহম বহড়ঁময ঢ়ৎবাবহঃ ঃযব পড়ঁহঃৎু ভৎড়স নবপড়সরহম ধ যধাবহ ভড়ৎ ওংষধসরপ ঃবৎৎড়ৎরংঃং রহ ঝড়ঁঃয অংরধ ধহফ ঢ়ড়রহঃবফ ড়ঁঃ ঃযধঃ ৎবষরমরড়ঁং বীঃৎবসরংঃং ধৎব পড়হহবপঃবফ ঃড় ধষ য়ঁবফধ (দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামী জঙ্গী ও ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী যারা আল কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্বর্গ হয়ে উঠছে, বাংলাদেশ সরকার এদের ঠেকাতে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।) বিএনপির অনেক নেতাই জঙ্গী সংগঠনগুলোর গডফাদার হিসেবে কাজ করছিলেন। জামায়াতের এবং বিএনপির একাংশের সঙ্গে শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের জেএমজেবির সম্পর্ক ছিল গভীরতর। সংবাদপত্রেও ছাপা হয়েছে। কোন কোন বিএনপি ও জামায়াত নেতা তাদের পৃষ্ঠপোষক। বিএনপি আমলে জঙ্গী সংগঠনের সংখ্যা পুলিশী হিসেবে ছিল ছোটবড় মিলিয়ে ৭০টি। ২০০৫ সালে সংসদে বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ৩৩টি ইসলামী জঙ্গী গোষ্ঠীকে শনাক্ত করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছিল। বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের বিকাশে বা জঙ্গী গোষ্ঠীর উত্থানের আশঙ্কার পেছনে ধর্মীয় উগ্রতার চেয়ে এই জোটের ক্ষমতা দখলই মূল কারণ। ক্ষমতা দখল মানেই যুদ্ধাপরাধীদের কারামুক্ত করা, খালেদার মামলাগুলো থেকে রেহাই প্রাপ্তি এবং জঙ্গীদের কাঁধে ভর করে দেশ শাসন, মুক্তিযুদ্ধের সবকিছু নস্যাত, ব্যাপকহারে আওয়ামী লীগ নিধন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়ানোসহ অরাজকতার এক নরক গুলজারের ব্যবস্থা করতে চায়। এখন বেগম জিয়া লন্ডনে অবস্থান করে মাতা-পুত্র মিলে নয়া ফন্দিফিকির নিশ্চয় বের করেছেন। হয়ত মাতা-পুত্র মিলে এমন কোন বার্তা দিয়েছেন, যে কারণে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গী হামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য আছে। বেগম জিয়া জিএসপি সুবিধা বন্ধ করাতে সচেষ্ট ছিলেন। তা হাসিল হয়েছে। এখন লন্ডনে বসে রিমোট কন্ট্রোলে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীপনা সংঘটিত করে বহির্বিশ্বে ছড়াতে পারছেনÑ বাংলাদেশ জঙ্গীর দেশ। দু’সপ্তাহ আগে বিদেশী কূটনীতিকদের নিজ বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিএনপি নেতা মঈন খান। আর সেই তিনিই ইতালীয় নাগরিক নিহত হওয়ার পর যে বক্তব্য রেখেছেন, শেখ হাসিনা তাতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যে নাশকতা ও বিনাশের রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট তারা তা আগুন হয়ে ঝলসে উঠবে। কিন্তু দমনও হবে।
×