ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বোলারদের দায় দেখছেন ধোনি

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৪ অক্টোবর ২০১৫

বোলারদের দায় দেখছেন ধোনি

স্পোর্টস রিপোর্টা ॥ ১৯৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও প্রথম টি২০তে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে ভারত। স্বভাবতই নিজ দলের বোলারদের দায়ী করেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। একই সঙ্গে রুদ্রমূর্তির ব্যাটিংয়ে জয় ছিনিয়ে নেয়া প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান জেপি ডুমিনির একটি নিশ্চিত আউট না দেয়ায় আম্পায়ারদেরও দুষছেন ‘ক্যাপ্টেন কুল!’ ফল দেখে মনে হবে একতরফা, তবে ধর্মশালার ম্যাচটি ছিল রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তায় ভরা। জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রোটিয়াদের প্রয়োজন ছিল ১০ রান, ২ বল হাতে রেখেই তা তুলে নেন ডুমিনি-ফারহান বিহারদিয়ানরা। কটকে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি২০ সোমবার। ‘বল হাতে মাঝের ওভারগুলোতে আমরা প্রচুর রান দিয়েছি। এক একটা ওভারে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা ২০টি করে রান তুলে নিলে চাপে তো পড়তেই হবে, সেটাই হয়েছে।’ ২০ ওভারের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২০০ টার্গেট দিয়েও লড়তে ব্যর্থ ক্রিকেটের মোড়লরা। হার বিশাল ব্যবধানে। নিয়মিত বোলারদের খেই হারানো পরিস্থিতিতে অতীতে বহুবার ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন সুরেশ রায়না, ধর্মশালায় এদিন তার হাতে বল দিতেই ভয় পেলেন ধোনি। এ নিয়ে অধিনায়কের ব্যখ্যা, ‘রায়নাকে দিয়ে হয়ত বোলিং করানো যেত। কিন্তু ধর্মশালার উইকেট ও কন্ডিশন দেখে সেটি করিনি। প্রথমত শিশির সমস্যা, তার ওপর উচ্চতা। বেশ কঠিন অবস্থা ছিল। তাছাড়া ডুমিনি এত ভাল ব্যাটিং করছিল! ওকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিতে পারলে ভাল হতো। মূলত ফারহানের সঙ্গে ওর দাঁড়িয়ে যাওয়াটাই আমাদের জন্য কাল হয়েছে।’ স্পিনার অক্ষর প্যাটেলের এক ওভারে ২২ রান তুলে নেন ডুমিনি-বিহারদিয়ান। ওই ওভারেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন তারা। ‘অক্ষর তো ভালই বল করে, সে ডান হাতি কিংবা, বাম হাতিকে হোক। এরকম উইকেটে আউটফিল্ডে ঠিকঠাক বল করাটাই আসল কথা। আমার মনে হয় পরের ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের আরও বেশি করে ফল্স শট খেলতে বাধ্য করতে হবে! যাতে তারা আউট হয়।’ বলেন অধিনায়ক। ১৯৯ রানের পথে বড় অবদান রোহিত শর্মার। সুরেশ রায়নার পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে এদিন টি২০তে সেঞ্চুরি (৬৬ বলে ১০৬) হাঁকান হার্ডহিটার ওপেনার। ভাল সঙ্গ দেন ভিরাট কোহলি (২৭ বলে ৪৩) আর এমএস ধোনি (১২ বলে ২০*)। কিন্তু ম্যাচের ‘নায়ক’ ডুমিনির ম্যারাথন হাফ সেঞ্চুরির কাছে ম্লান সেঞ্চুরিয়ান রোহিত। ১ চার ও ৭ ছক্কায় ৩৪ বলে অপরাজিত ৬৮ রান করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়া তারকা। ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা উল্লেখ করে ডুমিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। যেভাবে চেয়েছিলাম সব সেভাবেই হয়েছে। ফাজের সঙ্গে (ফারহান) পার্টনারশিপটা ছিল দারুণ সময়োপযোগী। আমরা পাল্টা আক্রমণে গিয়েছি এবং সফল হয়েছি। শেষ ওভারে ১০-১২ রান তুলে নেয়া সম্ভব, এমন আত্মবিশ্বাস ছিল। ভারত সফরের শুরুটা ভাল হয়েছে, এখন এ ধারা ধরে রাখতে হবে।’ যার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ১০৫ রানের জুটির সৌজন্যে অবিশ্বাস্য জয়, সেই বিহারিদায়ন বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে কৌশল অবলম্বন করে এগোতে চাইছিলাম। মূলত জেপির ব্যাটই সেটি করতে সাহায্য করেছে। মাইক হাসির (ব্যাটিং পরামর্শক) সঙ্গে থাকাটা কাজে দিয়েছে। ব্যাটিংয়ে নামার আগ মুহূর্তেও জেপির সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল, ও বলছিল, ক্রিজে এসে যেন সবসময় ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি। মাঝের ওভারগুলোয় এই কৌশল কাজে লেগেছে। জেপি আরও একবার ওর ক্লাসটা প্রমাণ করেছে। আশা করছি সফর জুড়ে সে এমনই ব্যাটি করে যাবে।’ টেস্ট ছেড়ে দিয়ে ওয়ানডে ও টি২০তে অধিনায়কত্ব করছেন ধোনি। বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সফরটা ভাল যায়নি। মাঝে শ্রীলঙ্কা সফরে কোনো ওয়ানডে-টি২০ ছিল না। এদিন তাই ধোনির নেতৃত্ব দেখতে নতুন করে মুখিয়ে ছিল গ্যালারি ভর্তি দর্শক। ব্যাট হাতে রোহিত-কোহলিরা আনন্দ দিলেও, পারলেন না ‘ক্যাপ্টেন কুল’। আগামী বছর ঘরের মটিতে টি২০ বিশ্বকাপের রসদ যোগাতে ধোনির সামনে অবশ্য এখনো সিরিজ জয়ের সুযোগ রয়েছে।
×