ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

মিথ্যাচারে আমরা কি এগিয়ে? মিথ্যার রকমফের যে কত তা বলে কি আর শেষ করা যায়। চাকরিজীবীদের মধ্যে অনেকেই বিদেশে যাওয়ার আগে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখেন- ‘তীর্থস্থান আজমীর শরীফে যাব-২০ দিন ছুটি অনুমোদনের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’ আদৌ তিনি আজমীর শরীফে কি আর যান। বরং ভারতের অন্যান্য স্থানে যান চিত্তবিনোদনের জন্য। এভাবে মিথ্যাচার করেই নেন ছুটি। অধিকাংশ বাঙালী ছেলে-মেয়ে ফেসবুকে সঠিক নাম-ঠিকানা, ছবি দেন না। বাঙালী ছেলেরা মেয়েদের নাম ও ছবি দিয়ে মিথ্যাচার করেই চলছে। আবার এরাই দাবি করে, আমরা যে মুসলমান। কেউবা মায়ের অসুস্থতার কথা আবেদনপত্রে লিখে ছুটি নেন। বস্তুত দেখা যায়, মা অসুস্থ নন, বরং প্রেমিকাকে নিয়ে চলে যান কোন এক নির্জন পর্যটন এলাকাতে। অফিসে গিয়ে অনেকে বসের রুমে ঢুকেই নানা রকম মিথ্যা বানোয়াট কল্পকাহিনী শুনিয়ে তার অতি প্রিয়ভাজন হতে চেষ্টা করেন। কেউ আবার বাবার পরিচয় দিতেও লজ্জাবোধ করেন। বাবা ছিলেন কৃষক অথচ অনেকেই কাগজপত্রে লেখেন জমির মালিক। কারও বাবা চাপরাশি। তিনি স্ট্যাটাস রক্ষার জন্য বলেন, বাবা তো খাদ্য অফিসে প্রশাসনিক কর্মকর্তা। কেউবা প্রেমিকার মন জয় করার জন্য বলেন, ফরিদপুর শহরে রাজেন্দ্র কলেজের একটু পেছনে তিনতলা বাড়িটি আমাদের। অথচ ওই বাড়িটি অন্য একজনার। আর তার বাড়িটি একতলা টিনের ঘর পৌরসভার বাইরে। এভাবে আমরা অর্থাৎ বাঙালীরা কত যে মিথ্যাচার করছি প্রতিনিয়ত তার হিসাব কি আর আছে! ইদানীং ইতিহাসও মিথ্যাচার শুরু হয়েছে। মিথ্যাচার করে প্রচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির বিষয়টি নিয়ে। বলা হচ্ছেÑ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। কবে যে বাঙালী বলবে- সীতা ছিলেন রামের বাবা! বাবর ছিলেন বাংলাদেশের রাজা! কেনেডি-জর্জ বুশ এরা কখনও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। গৃহনির্মাণের ঋণের কথা বলে এই বাঙালীরাই পরবর্তীতে ওই টাকা ঋণ পেয়ে গৃহনির্মাণে ব্যয় না করে টেলিভিশন, ফ্রিজ কিনে আর শ্বশুর-শাশুড়িকে পোলাও-কোর্মা খাওয়ান। আরেক ধরনের মিথ্যাচার আছে, যেমন- নির্বাচনের সময় যে যত মিথ্যাচার করতে পারেন জনগণ তার দিকেই বেশি আগান। যেদিকে তাকাই দেখি মিথ্যাচার চলছে সমানে। আজ আমরা বেমালুম ভুলে গেছি- ‘মিথ্যা বলা মহাপাপ’। মিথ্যা নিয়ে যদি জরিপ শুরু হয় তাহলে দেখা যাবে বাঙালী ১০০ মার্কে লেটার পেয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সবার মধ্যে বোধোদয় হবে এ প্রত্যাশা করলে দোষ কোথায়? লিয়াকত হোসেন খোকন রূপনগর, ঢাকা। শ্রীনগরে অবরুদ্ধ হাসপাতাল রোগে-শোকে, অসুস্থ হয়ে গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষ হাতের নাগালে স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা পেতে চায়। সেকালের মানবসেবার জন্য হিন্দু জমিদার বিক্রমপুরের ভাগ্যকূলের হরেন্দ্রলাল বাবু শ্রীনগর বাজারের কেন্দ্রস্থলের পশ্চিম পাশে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় নির্মাণ করেন। তৎকালীন এটি ছিল থানাভিত্তিক একমাত্র হাসপাতাল, যা সরকার কর্তৃক পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে পুরনো ভবনের পাশে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে চিকিৎসাসেবা শুরু করে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন লাল ইটের ছোট আকারের দাতব্য চিকিৎসালয়ে গর্ভবতী মা, পরিবার পরিকল্পনাসহ শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা চালু থাকলেও হাসপাতালটিকে বন্দী তথা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের দুটি প্রবেশপথ বন্ধ রাখা হয়েছে। ভেতরে প্রবেশের প্রথম প্রবেশদ্বার দেড় হাত ও দ্বিতীয় প্রবেশদ্বারের জন্য ৩৬ ইঞ্চি পথ দয়াপরবশ হয়ে খোলা রাখা হয়েছে। প্রবেশের সময় কাঁটাতারের বেড়ায় রোগীদের জামাকাপড় আটকে যায়, যে কারণে কিছুটা বাঁকা বা কাত হয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করতে হয় রোগীদের। মাটির হাঁড়ি-পাতিলের ব্যবসা প্রবেশপথকে এক হাত বা ১৮ ইঞ্চিতে পরিণত করেছে। দোকানঘর নির্মাণ করে পায়ে চলার রাস্তা দখলে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। রোগী বহনে রিক্সা, ভ্যানগাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঠ ও বাঁশ ব্যবসায়ীরা রাস্তা দখলে রেখেছে। হাসপাতালের আঙিনায় বিএনপি ঘর নির্মাণ করে অফিস স্থাপনের মাধ্যমে মানবসেবার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ দাতব্য চিকিৎসালয়টিকে কার্যত অবরুদ্ধ করে চিকিৎসাসেবায় বিঘœ সৃষ্টি করে আসছে। হাসপাতাল সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে পরিবেশ বিপর্যয়ের মাত্রা অতিক্রম করেছে। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে হাসপাতাল যেন নিজেই অসুস্থ। স্থানীয়রা মনে করছেন, পরিত্যক্ত ভবনটি না ভেঙ্গে জমিদারের স্মৃতি ধরে রাখতে এটিকে সংস্কারপূর্বক হাসপাতালের আয়তন বৃদ্ধি করে চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধি করা যায়। চিকিৎসালয়ের পূর্বে সরকারী পরিত্যক্ত পুকুর ও মাছবাজার এবং উত্তরে বাঁশ ও কাঠ ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। পশ্চিমের আঙিনা অবরুদ্ধ। দক্ষিণে পরিত্যক্ত ভবন। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী সারাদিন খোঁজার পরেও হাসপাতালটিকে খুঁজে পাবেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসপাতালটিকে মুক্ত এবং যাতায়াতের পথ খোলা রাখতে যথাযথ ভূমিকা নিয়েও রহস্যজনক কারণে ব্যর্থ। মেছের আলী শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ
×