ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সম্পাদক সমীপে

চাই সৃষ্টিধর্মী প্রজন্ম এ প্রজন্ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানে অগ্রগামী। এটা আশার কথা। বিশ্বায়নের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। তবে ভাল জিনিসের চাই সুষ্ঠু, পরিকল্পিত ও যথাযথ ব্যবহার। এক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা ও ত্রুটি চোখে পড়ার মতো। প্রযুক্তির নিত্যনতুন ধারণার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার বাসনায় উদগ্রীব এ প্রজন্ম। অজানাকে জানার আগ্রহ মনুষ্য মাত্রেই স্বাভাবিক। তবে সবকিছুর ক্ষেত্রে একটা মাত্রাজ্ঞান থাকা প্রয়োজন। ইন্টারনেট সুবিধা দ্রুতগতিতে আমাদের হাতের নাগালে আসছে। ইন্টারনেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত সমকালীন অন্যতম সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা, ব্যবহার ও প্রয়োজন আমাদের মধ্যেও বাড়ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারী ফেসবুকে অনায়াসে নিজের অভিমত, অনুভূতি, মতামত এবং নানারকম ছবি প্রকাশ করছে। ফেসবুকের বহুবিধ ব্যবহার অনস্বীকার্য। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এ প্রজন্মের অধিকাংশেরই রয়েছে ইন্টারনেট ও ফেসবুক উন্মাদনা এবং আসক্তি। অনেক সময় নিজের অজান্তেই তারা মূল্যবান সময় হারাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অনেকেই পড়াশোনার মূল্যবান সময়টাতে ফেসবুক ব্যবহার করছে। এমনকি পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তেও তারা অনেকেই ফেসবুকে সক্রিয় থাকছে। গভীর উদ্বেগের বিষয় হলো, পাঠ্যপুস্তক অথবা পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বই পড়ার প্রতি তাদের অনীহা ও উদাসীনতা বিদ্যমান। এ বিষয়টি আমাদের বেদনা ভারাক্রান্ত করে তোলে। যদি তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ প্রমুখের প্রেমে পড়ত অথবা তাদের মধ্যে জন্মাত সাহিত্যানুরাগ ও বিদ্যানুরাগ, তাহলে আমরা পেতে পারতাম একটি সময়নিষ্ঠ, মননশীল ও সৃষ্টিশীল প্রজন্ম। এমন প্রজন্মই আমাদের উপহার দিতে পারত একটি অভিনব বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মকে মেধাবী, মননশীল, সৃষ্টিধর্মী এবং একই সঙ্গে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিবার, শিক্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে। বই পড়ার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। পড়াশোনার বাইরে নানান সৃষ্টিশীল কর্মকা-ের সঙ্গে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিদ্যমান সৃষ্টিশীলতার যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। মোহাম্মদ শরীফ ঢাকা। অপপ্রচার চলছেই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে এখনও নানা রকমের বিচার বিশ্লেষণ চলছে। এ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য নানা মহল থেকে নানাভাবে মন্তব্য করা হচ্ছে। এক শ্রেণীর তথাকথিত ‘নিরপেক্ষ সুশীল’ সমাজও নির্বাচন নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনা না করেই ঢালাও মন্তব্য করছেন যা খুবই দুঃখজনক। সম্প্রতি জাতীয় দৈনিকের একটি সংবাদে বলা হয়েছে যে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দুটি কেন্দ্রে ৯৯% ভোট পড়েছে। এ রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে ওই দুটি কেন্দ্রসহ মোট দশটি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৮ লাখ ১৩ হাজার এবং কেন্দ্রের সংখ্যা ৭১৯টি । তাহলে ১০টি কেন্দ্রে অনিয়ম অর্থাৎ ১,৩৯% বা প্রায় ২% কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। এ ১০টি কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি নয় যা মোট ভোটার সংখ্যার মাত্র ১.৬৫% বা ২%। শতভাগ বিশুদ্ধ নির্বাচন আমাদের মতো দেশে কখনও হয়েছে বলে ইতিহাস নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকেও আমাদের দেশে স্থল বা সূক্ষ্ম কারচুপির নির্বাচন বলা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এলাকার কমিশনার প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা থাকে। তারাই নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করেন। এর ফলে স্থানীয় নির্বাচনে কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বেড়ে যায়। তবে ৮০% থেকে ৯৯% ভোট যে সব কেন্দ্রে পড়েছে সেগুলো তদন্ত করে দেখা উচিত। কিন্তু মনে রাখতে হবে এই ২% অনিয়ম কখনও সামগ্রিক ভোটের ফলাফলে তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারে না বা পুরো নির্বাচনকে বিতর্কিতও করতে পারে না। এছাড়া এ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচন বয়কট করলেও তাদের কমিশনার প্রার্থীরা কিন্তু নির্বাচন বর্জন করেননি। তাদের ভোটাররা কেন্দ্রে ঠিকই এসেছেন এবং তাদের দলের মেয়র ও কমিশনার প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন। এজন্য বর্জন করা সত্ত্বেও তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেই বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা যথেষ্ট ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনের মাঠে থাকলে হয়ত তারাও জয়ী হতে পারতেন। এর আগের পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন। বর্তমান সরকার তখন ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও সরকার ওই নির্বাচনে কোন প্রভাব বিস্তার করেনি। সাম্প্রতিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপির ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। ঢালাওভাবে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের দেশের কতিপয় গণমাধ্যম ইচ্ছাকৃতভাবেই অনিয়মগুলো বার বার তুলে ধরছেন। কিন্তু বেশিরভাগ কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের খবর তারা প্রচার করছে না। প্রতিটি গণমাধ্যমের উচিত সঠিক ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচার করা। বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে কোন গণমাধ্যমই বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। বিপ্লব ফরিদপুর
×