ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রায় ব্রাদার্সের ঘড়ি পেরিয়েছে শতবর্ষ

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

রায় ব্রাদার্সের ঘড়ি পেরিয়েছে শতবর্ষ

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা শহরের বনেদি কাপড়ের দোকান রায় ব্রাদার্সের দেয়ালঘড়িটি শতবর্ষ পূর্ণ করে আজও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে টিকে আছে। দোকানের টিনের ঘর, কাঠের পাটাতন কিছুই নেই। সেখানে এখন বিশাল তিনতলা ভবন। তার মাঝে এখনও ঢং ঢং করে সময়ের জানান দেয় ঘড়িটি। রায় ব্রাদার্স শুধু গলাচিপা শহরে নয়, এটি এক সময়ে সমগ্র পটুয়াখালী তথা দক্ষিণাঞ্চলের বড় কাপড়ের দোকান হিসেবে পরিচিত ছিল। কম মুনাফা, বেশি বিক্রি এবং ভাল মানের কাপড়Ñ এটি এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিক্রমপুর থেকে এসে আজ থেকে অন্তত ১২০-১৩০ বছর আগে সচ্ছিদানন্দ রায় ও ব্রজবল্লভ রায়, দু’ভাই গলাচিপা শহরে ‘রায় ব্রাদার্স’ নামে কাপড়ের দোকানের গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তীতে সচ্ছিদানন্দ রায় ভারত চলে যান। দোকানের হাল ধরেন ব্রজবল্লভ রায়। সে সময়ে দোকানে কলকাতা থেকে কাপড় আসত। এখনও দোকানে পুরনো কাগজপত্রের মাঝে কলকাতার অসংখ্য ক্যাশ মেমো আছে। ওই সময়েই ব্রজভল্লব রায় কলকাতা থেকে দেয়ালঘড়িটি কিনে এনে দোকানের তাকের ওপর ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। সে সময়ে গলাচিপা নিতান্তই ছোট্ট বাজার। বেশ কয়েক প্রবীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন, তখন গাঁও গ্রাম থেকে লোকজন এসে ঘড়িটির দিকে হা করে তাকিয়ে থাকত। পেন্ডুলামের ঢং ঢং আওয়াজ জানান দিত সময়ের। বর্তমান তৃতীয় পুরুষের প্রতিনিধি অরুণ কুমার রায় জানান, ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে এখনও ঘড়িটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এখনও এটি ঠিক সময়ের জানান দেয়। কলকাতা থেকে এটি কেনা হলেও ঘড়িটি মূলত ব্রিটেনের তৈরি। ডায়ালের চারপাশে পিতলের আস্তর। বাক্সটি সেগুন কাঠের। এখনও ঘুণ ধরেনি। মাঝে ২/৩ বার বার্নিস করা হয়েছে। এটির ভেতরের লেখাগুলো এখন আর পড়া যায় না। তারপরেও ধারণা করা হচ্ছেÑ এটি (ঝ) এস নামে একটি কোম্পানির তৈরি। ঘড়িটির বয়স এক শ’ বছর ছাড়িয়েছে অনেক আগে। সময়ের বিবর্তনে আমাদের অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে। এখন আর সেসবের চিহ্ন নেই। তার মাঝেও রায় ব্রাদার্সের ঘড়িটি ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। Ñশংকর লাল দাশ, গলাচিপা থেকে
×