ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাট প্রত্যাহারের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ভ্যাট প্রত্যাহারের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিজেরা আন্দোলন কর্মসূচী দিয়ে সফল করতে না পারলেও এবার কোমলমতি ছাত্রদের আন্দোলনে উস্কানি দিচ্ছে বিএনপি। ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বিএনপির পক্ষে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান। তিনি বলেন, শিক্ষা কোন পণ্য নয়। তাই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ভ্যাট আরোপ করাকে বিএনপি সমর্থন করে না। এদিকে আজ ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ৮ম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ভোটাধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়ার লড়াই অব্যাহত থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে রিপন বলেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিভ্রান্ত করার জন্যই রাজস্ব বোর্ড থেকে কোন শিক্ষার্থীকে ভ্যাট দিতে হবে নাÑ এমন ধরনের কথা বলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীদের ওপর ভ্যাট কমানোর কোন পদক্ষেপই তারা গ্রহণ করেনি। তিনি বলেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সঙ্গে সঙ্গে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি। এখনও তাই দাবি করছে। এখন যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলন করছে, এ জন্য যেন তাদের পরীক্ষা স্থগিত না হয়। আমরা অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। রিপন বলেন, সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে হবে ভ্যাট কমানো হবে কিনা? যদি না কমানো হয়, তাহলে সরকারকে বলতে হবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কিনা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুল হালিম, দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউর রহমান, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহিন প্রমুখ। আজ খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস ॥ আজ ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ৮ম কারামুক্তি দিবস। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী। গ্রেফতারের পর তাকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার একটি সাবজেলে রাখা হয়। এক বছর পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তাকে মুক্তি দেয়া হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ভোটাধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়ার লড়াই অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে বিএনপি চেয়ারপার্সনের অবিচল সংগ্রাম কোন চক্রান্তকারী শক্তিই নস্যাত করতে পারেনি। রিপন বলেন, খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এ দিনে আমরা তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, বহুদলীয় গণতন্ত্রে উত্তরণ ও জনগণের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপিকে আজ তেত্রিশ বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। তিনি দেশে স্বৈরাচারী শাসন অবসানে আপোসহীন ভূমিকা পালন করায় দেশবাসী তাকে আপোসহীন হিসেবে বরণ করে নিয়েছেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাজনৈতিক সংগ্রামে সামিল হতে পেরে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা তার নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সংকল্পবদ্ধ। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে নিহত করার পর ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের কেড়ে নেয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে জিয়ার জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রের রাজনীতির পতাকাকে উড্ডীন করে খালেদা জিয়া রাজনৈতিক মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেই থেকে তিনি এ দেশে সকল অগণতান্ত্রিক দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই অব্যাহত রেখেছেন এবং জনগণ তাকে আপোসহীন নেত্রীর অভিধায় অভিষিক্ত করেছেন। দীর্ঘ ৯ বছরের সামরিক শাসনবিরোধী নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলনে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে তিনি দেশে সাংবিধানিক গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা পুনর্প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের গণতান্ত্রিক-সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করতে দৃঢ় ভূমিকা পালন করেন। বিবৃতিতে রিপন বলেন, ২০০১-২০০৬ সময়ে তার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা তার কাছ থেকে স্বার্থ আদায় করতে না পারায় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সংবিধানবহির্ভূত পন্থায় ক্ষমতা দখলকারীরা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নতুন খেলায় মেতে উঠেছিল। এরই অংশ হিসেবে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতার করে। মাইনাস টু তত্ত্বসহ নানাবিধ অপকৌশল অবলম্বন করে ও অপপ্রচার চালিয়ে খালেদা জিয়াকে তার স্বদেশ ও জনগণের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও আস্থা এবং দেশ ও জনগণের প্রতি খালেদা জিয়ার দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কাছে ষড়যন্ত্রকারীদের কূটকৌশল ব্যর্থ হয়ে যায় এবং এক বছর পর তাকে তারা মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
×