ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে গত অর্থবছরে ৩৯৩১ অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে গত অর্থবছরে ৩৯৩১ অভিযোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সেবা নিতে গিয়ে প্রায়ই ব্যাংকের সাধারণ গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৯৩১ অভিযোগ করেন গ্রাহকরা। এই অভিযোগের সংখ্যা আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে ৫৪৫টি। এছাড়া এবার শতভাগ অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। অভিযোগের শীর্ষে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ হাজার ৯৩১টি অভিযোগ আসে। এবারই প্রথম আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অভিযোগের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। এর আগের অর্থবছরে অভিযোগ এসেছিল ৪ হাজার ৪৭৬টি। হিসাব অনুযায়ী এক বছরের ব্যবধানে অভিযোগ ৫৪৫টি বা ১২ দশমিক ২০ শতাংশ কমেছে। গত অর্থবছরে অভিযোগ নিষ্পত্তির হারও অনেক ভাল। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে ৩ হাজার ৯৩০টি। নিষ্পত্তির এই হার আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ২৯১টি বা ৯৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রাহকদের অভিযোগের শীর্ষ সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ২৫৬টি অভিযোগ এসেছে। ব্র্যাক ব্যাংকের বিরুদ্ধে মোট ১৭৫টি অভিযোগ করেন গ্রাহকরা। এছাড়া রূপালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১৪৯, অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১৪০, ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১২৩, জনতা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১০৬, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৮২, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৭৯টি অভিযোগ এসেছে। ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের দেয়া তথ্যমতে, ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট গত অর্থবছরে ই-মেইল, ফ্যাক্স, ওয়েবসাইট ও ডাকযোগে ১৭৭টি এবং টেলিফোনে ২৬৬টি সর্বমোট ৪৪৩টি অভিযোগ পাওয়া যায়, যার মধ্যে ৪৪২টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। অভিযোগ নিষ্পত্তির হার ছিল ৯৯.৭৭ শতাংশ। প্রাপ্ত অভিযোগগুলোর মধ্যে সাধারণ ব্যাংকিং সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ১৫৬, ঋণ ও অগ্রিম সংক্রান্ত ৮২, আমদানি বিল পরিশোধ না করা সংক্রান্ত ৫৩ (অভ্যন্তরীণ ৩০ ও বৈদেশিক ২৩টি), কার্ড সংক্রান্ত ৩৪টি, মোবাইল ব্যাংকিং সংক্রান্ত ২৭টি, রেমিটেন্স সংক্রান্ত ২৩টি ও ব্যাংক গ্যারান্টি সংক্রান্ত ১০টি। এছাড়া অন্য অভিযোগ ছিল ৫৮টি। সর্বোচ্চ অভিযোগ ছিল সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে। এ দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক এবং তৃতীয় অবস্থানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রতিটি ব্যাংকেই আলাদা গ্রাহক অভিযোগ কেন্দ্র খোলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ছোটখাটো অভিযোগগুলো সেখানেই নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যদি কোন গ্রাহক সুনির্দিষ্ট ব্যাংকে তার অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে না পারেন তখন পুনরায় বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করতে পারবেন বলেও নির্দেশনা ছিল। এসব কারণেই বিদায়ী অর্থবছরে অভিযোগের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। তবে এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎপরতায় শতভাগ অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরিসর অনেক বড়। এর গ্রাহক অনেক বেশি। গ্রাহক অনুযায়ী অভিযোগের আনুপাতিক হার বের করলে সেটি খুবই নগণ্য।
×