ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এজিএম জটিলতায় ঝুলে গেল বিচ হ্যাচারীর সভা

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

এজিএম জটিলতায় ঝুলে গেল বিচ হ্যাচারীর সভা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ নির্ধারণ করতে না পারায় জটিলতায় পড়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। যৌথ মূলধনী কোম্পানি নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) থেকে বিলম্বিত এজিএমের অনুমোদন না পাওয়ায় লভ্যাংশ নির্ধারণী পর্ষদ সভা স্থগিত করেছে কোম্পানিটি। এতে পরিচালনা পর্ষদে কোম্পানির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের বিষয়টি আবারও ঝুলে গেছে। সভা বুধবার না হলেও আগামীতে দ্রুত এজিএমের অনুমোদন পাওয়া যাবে এমন প্রত্যাশা কোম্পানি কর্তৃপক্ষের। তারপর বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন বিষয়ে পরবর্তী পর্ষদ সভার তারিখ নির্ধারণ করে জানাবে। স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত পর্ষদ সভা স্থগিতের কথা বুধবার জানায় খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানিটি। আইন অনুযায়ী, ডিসেম্বর হিসাব বছর শেষ হওয়ার পর বিচ হ্যাচারির পর্ষদে ২০১৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন গ্রহণের সর্বশেষ সময় ছিল ৩০ এপ্রিল। তবে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কারণে নির্ধারিত সময়ের পর বিধি অনুযায়ী আরও তিন মাস সময় নেয় তারা। তবে বর্ধিত সময়ের মধ্যেও আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। বার্ষিক প্রতিবেদন বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদনও ঝুলে থাকে। গত সপ্তাহে বিচ হ্যাচারি কর্তৃপক্ষ জানায়, বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৯ সেপ্টেম্বর সভা করবে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। আরজেএসসি থেকে নির্ধারিত সময়ের পর এজিএম করার অনুমোদন না পাওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের নির্ধারিত সভাটি স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সভার তারিখও জানাতে পারেনি কোম্পানি। এ বিষয়ে বিচ হ্যাচারির কোম্পানি সেক্রেটারি মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী এজিএম অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করে আরজেএসসির নিকট আমরা আবেদন জানিয়েছি। তবে দুর্ভাগ্যবশত তাদের কাছ থেকে এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি। এ কারণে বুধবারের নির্ধারিত পর্ষদ সভাটি স্থগিত করতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তবে আমরা আশা করছি বৃহস্পতিবার এজিএমের অনুমোদন পাওয়া যাবে। এর পর আমরা বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন বিষয়ে পরবর্তী পর্ষদ সভার তারিখ নির্ধারণ করতে পারব। কোম্পানি আইনের ৮১ ধারা অনুযায়ী, কোম্পানির সর্বশেষ পর্ষদ সভার পরবর্তী ১৫ মাসের মধ্যে এজিএম অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে কোম্পানি আরজেএসসির রেজিস্ট্রারের অনুমোদন সাপেক্ষে এজিএম অনুষ্ঠানের সময় আরও তিন মাস বাড়াতে পারবে। এ আইন অনুযায়ী বিচ হ্যাচারি রেজিস্ট্রারের নিকট আবেদন জানালেও বুধবার পর্যন্ত কোন অনুমোদন পায়নি। নিয়ম অনুযায়ী হিসাব বছর শেষ হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানিকে। পরবর্তী ১৪ দিনের মধ্যে সে আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে জমা দিতে হবে। তবে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর হিসাব বছর শেষ হওয়ার পর বিচ হ্যাচারি নির্ধারিত সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়। এ অবস্থায় কোম্পানিটি বিএসইসির কাছে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে আরও সময় চেয়ে আবেদন করে। কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি তিন মাসের সময় দেয় তাদের। বর্ধিত সময়ের মধ্যেও বিচ হ্যাচারির পরিচালনা পর্ষদ বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেনি কোম্পানিটি। ২০০২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। সেই বছরই কোম্পানিটিকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে যুক্ত করে ডিএসই। পরে ২০০৬ সালে বার্ষিক লভ্যাংশ না দেয়ায় জেড ক্যাটাগরিতে চলে যায়। তবে এজিএম ও সঠিকভাবে লভ্যাংশ দেয়ায় ২০০৮ সালে আবারও তাদের এ ক্যাটাগরিভুক্ত করে ডিএসই। এরপর প্রতি বছর যথাসময়ে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি ও বার্ষিক সাধারণ সভা করে আসছিল কোম্পানিটি।
×