ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অপারেশনের কষ্ট কমায় মিউজিক

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অপারেশনের কষ্ট কমায় মিউজিক

কোন কোন শল্য চিকিৎসক অস্ত্রোপচার কক্ষে মিউজিক বাজিয়ে থাকেন। কারোর কারোর এই বাতিকটা এমন যে, মিউজিক না শুনলে তারা সার্জারির ছুরি হাতে নিতে চান না। অস্ত্রোপচার চলাকালে মিউজিক শুনলে মনোসংযোগ নষ্ট হতে পারে এবং এতে রোগীর ক্ষতি হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে- এ জাতীয় কথা অনেকেই বলে থাকেন। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, অপারেশন চলাকালে মিউজিক বাজতে থাকলে শুধু সার্জনের ওপরই নয়, রোগীর ওপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ব্রিটিশ চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা বিষয়ক এক রিপোর্টে বলা হয় যে, অপারেশনের সময় ও তার পরে যেসব রোগী মিউজিক শোনেন, তাদের ব্যথা বেদনা ও কষ্ট কম হয় এবং তারা অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি সেরে ওঠেন। এমনকি এদের পুরোপুরি সংজ্ঞালোপ করে অপারেশন করা হলেও এই মিউজিকের প্রভাব থেকে যায়। এই গবেষণায় অংশ নেয়া বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণালব্ধ ফলাফলকে বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতালে মিউজিকের যন্ত্র ও প্লেলিস্ট রাখার সুপারিশ করেছেন। সেই প্লেলিস্টে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত থাকতে পারে, নন মিউজিক থাকতে পারে, যার যেটা পছন্দ। বস্তুতপক্ষে এমন মিউজিকের ব্যবস্থা অনেক ওটিতেই আছে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, সার্জনরা তাদের পছন্দের মিউজিক শুনতে শুনতে রোগীর অপারেশন করলে সেই অপারেশন বেশ ভাল হয়। কারণ পছন্দের মিউজিক তাদেরকে অপারেশনের কাজে মনোসংযোগ করতে ও সেরা নৈপুণ্যের প্রয়োগ ঘটাতে সাহায্য করে। রয়াল কলেজ অব সার্জনসের প্রেসিডেন্ট জন ব্ল্যাক বলেন, ‘আমিসহ অনেক সার্জন ওটিতে আবহসঙ্গীত কাজে লাগিয়ে এমন এক প্রশান্ত পরিবেশ রচনা করি, যা সচেতন রোগীমাত্র প্রশংসা না করে পারে না।’ অবশ্য সবাই এ ব্যাপারে একমত যে, কিছু কিছু মিউজিক ওটির জন্য উপযোগী নয়। তাছাড়া মিউজিকের পর্দাটাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ উঁঁচু পর্দায় মিউজিক বাজলে ওটির স্টাফদের মধ্যে যোগাযোগের অসুবিধা হতে পারে। গবেষকরা অপারেশনের সময় এবং তার আগে পিছে প্রায় ৭ হাজার রোগীর ওপর মিউজিকের ৭০টি পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালান। এদেরকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্নিগ্ধ ও মিষ্টি সুরের মিউজিক পরিবেশন করা হয়। দেখা যায় যে, এতে তাদের ধকল এবং ব্যথা-বেদনা উপশম হয়েছে। তবে তাই বলে হাসপাতালে অবস্থানের সময় কমেনি। ল্যানসেট সাময়িকীর সেই নিবন্ধের লেখিকা ডা. ক্যাথরিন মিডস বলেছেন গত এপ্রিলে হিপ সার্জারির তিন ঘণ্টা পর মিউজিক তার বেদনা লাঘবে সহায়ক হয়েছে। ব্যথার জায়গাটিতে আরামের পরশ বুলিয়ে দিয়েছে। তাঁর মতে মিউজিক হলো ব্যথা-বেদনা ও কষ্ট লাঘবের এক সস্তা ও নিরাপদ কৌশল, যা অস্ত্রোপচারের পর সবারই ব্যবহার করা উচিত। সূত্র : লাইফ সায়েন্স প্রকৃতি ও বিজ্ঞান ডেস্ক
×