ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মমতাজ লতিফ

মেয়রবৃন্দ, শহরগুলো ‘ব্যর্থ’ শহর হবে কেন?

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মেয়রবৃন্দ, শহরগুলো ‘ব্যর্থ’ শহর হবে কেন?

আমাদের স্মরণে আছে ’৮৮-এর বন্যা, ’৯৮-এর বন্যা। প্রকৃত অর্থে ’৮৮-এর জলজটের সময় প্রথম আমরা ঢাকাবাসী পরিবেশ বিপর্যয়, ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’, কার্বন নিঃসরণ, পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি ইত্যাদি শব্দ ও ধারণা, পৃথিবীকে রক্ষা, মরু দেশের বরফ গলার ফলে নদীর পানি, সমুদ্রের পানি বেড়ে উপকূলীয় দেশের স্থলভাগ হ্রাস পাওয়া, জলবায়ু-উদ্বাস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক কারণ ও ফলাফল জানতে পেরে ভয়ানক উদ্বিগ্ন হলাম। মনে আছে, ওই সময় নব্বইয়ের দশকে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিদেশে পাড়ি জমানোর হার বেশ বেড়ে গিয়েছিল। এমনকি, বহু পরিবার প্রবাসী হয়েছিল। দিব্যচক্ষে দেখতে পারছিলাম- ঢাকা, চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো ছাড়া সব সমতল বা নিচু স্থান নদী, সমুদ্রের পানির নিচে, উঁচু বহুতল বাড়িগুলোতে অল্প কিছু বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশু বাস করছে। কিন্তু তাদের খাদ্য সীমিত হয়ে পড়েছে। বহুতল বাড়ির ছাদে চাষ হচ্ছে, সহজে যা রান্না করে খাওয়া যায় বা সামান্য সিদ্ধ করে খেতে পারা সম্ভব, এমন ফল, সবজি, শাকপাতা। বিদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো মাঝে মাঝে জাহাজে পাউরুটি, বনরুটি-এসব পাঠায়, সাহায্য হিসেবে। সব পরিবারই ভাবছে, সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দেবে, নিজেরা থেকে যাবে দেশে। এরপর পানি নেমে যাবার পর পরবর্তী দশ বছরে সবাই এসব শঙ্কার কথা ভুলে গেল। যদিও বিদেশে সন্তানদের পাঠানোর হার কিছুটা কমলেও বন্ধ হয়নি। আবার ’৯৮-এ দেখা গেল জলবায়ুজনিত কারণগুলো কমে তো না-ই, বরং পরিবেশ ও জলবায়ুর উষ্ণায়ন যা সংঘটিত করছে উত্তর গোলার্ধের উন্নত পশ্চিমা দেশগুলো, তারা বড় বড় সভা-সমাবেশ র‌্যালি করে দোষী-নির্দোষী সব দেশকে বার্ষিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ কার্বন নিঃসরণ কমানোর আদেশ জারি করেছে! তাদের নিজেদের অবস্থান রয়ে গেল একই। একেই বোধ হয় বলে- কালনেমীর লঙ্কা ভাগ! ভুক্তভোগীকে একদিকে ধনীদের বিলাসের ফল ভোগ করতে হবে, আবার নিজেদের কার্বন নিঃসরণ যা একেবারেই কম, তা আরও কমাতে হবে এবং লাখ লাখ নদী ভাঙ্গা, উপকূল ডুবে গ্রাম, জমি, পুকুর, ক্ষেত, বাড়িঘর ডুবে সর্বস্বহারা মানুষের কঠিন-পুনর্বাসন কাজ করে যেতে হবে! ’৯৮-এ ঢাকা ডুবে যাওয়ার ফলে সম্ভবত সরকার ও বিশেষজ্ঞদের কাছে পানি নিঃসরণের নদী, খাল, ড্রেনেজ সিস্টেমের অকার্যকারিতার প্রতি এই প্রথম গভীর মনোযোগ ধাবিত হয় এবং সম্ভবত এর ফলেই ঢাকার আশপাশের জলাশয় রক্ষা, নদী, খাল পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্য নিয়ে ‘ড্যাপ’ বা ঢাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ’৯৮-এ ঢাকার কয়েকটি সামান্য উঁচু স্থান- ভরাট ধোলাইখাল ও এ সংলগ্ন ওয়ারী, নারিন্দাসহ পুরান ঢাকা এলাকা, শাহবাগ, মগবাজার, ধানম-ি, বিমানবন্দর এলাকা পানিতে ডোবেনি। কিন্তু গুলশান, বনানীসহ অন্যসব এলাকা জলমগ্ন ছিল প্রায় মাসখানেক। যে কারণে সে সময় ঢাকা থেকে জলপথে গার্মেন্ট সামগ্রী চট্টগ্রাম পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল! সে সময় রিক্সা এবং নৌকা চলেছিল ঢাকার রাজপথে অন্যতম যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে। এবার রাজনীতিক, বিশেষজ্ঞ এবং আমজনতা বুঝতে পারল জলবায়ুর উষ্ণতার চাইতে এই কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে জলাভূমি, খাল, বিল, নদী, ড্রেন ভরাট হয়ে বৃষ্টির পানি, নদী বেয়ে আসা পানি চারপাশে জমা হওয়ার কারণে। অথচ যখন ধোলাইখাল ভরাট করা হয়, মতিঝিলের খাল-ঝিল ভরাট হয়, এই সেদিন পরীবাগের বেশ বড় খালটিও ভরাট করা হচ্ছিল, তখনও কোন বিশেষজ্ঞের দৃষ্টিতে এই ভয়ঙ্কর দেশ বিধ্বংসী কার্যক্রমের ভয়াবহ পরিণতি ধরা পড়েনি কেন- এ প্রশ্ন না করে পারি না। এখন এই ২০১৫তে এসে ঢাকা, চট্টগ্রাম শহরের অধিকাংশ স্থান জলমগ্ন হয়ে যাবার পর, দেশের নদী, খাল, জলাভূমি ভরাট করা, রিয়াল এ্যাস্টেট কোম্পানির চরম অর্থ-মুনাফা লোভ, ভূমিগ্রাসী ননরিয়াল এ্যাস্টেট অসৎ ব্যক্তিদের নদী-খাল দখল কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গণপ্রতিবাদ জোরদার হয়েছে। তবে যেহেতু সদ্য নির্বাচিত দুই অঞ্চলে বিভক্ত ঢাকার দুই মেয়রের জলজট ও যানজট নিরসনের প্রতিশ্রুতি ছিল, সুতরাং জনমানুষের দুঃখ, কষ্টের ক্ষোভ এদের দু’জনের প্রতি বেশি প্রকাশ পেয়েছে। অথচ শোনা যাচ্ছে সরকার রিয়াল এ্যাস্টেটের অসাধু ধনীদের প্রতি দুর্বল হয়ে ‘ড্যাপ’ বাস্তবায়ন থেকে সরে এসেছে। এ তথ্যটি সত্য হলে বলতে হবে, কংক্রিট বিল্ডিংয়ের শহর ঢাকা ‘ব্যর্থ’ শহরে পরিণত হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং পুরো দেশকে অতিবৃষ্টির ফলে তৈরি অতিবন্যার হাত থেকে রক্ষা করা এখন দেশকে যুদ্ধাপরাধী ও দেশের শত্রু জঙ্গী ও খলনেত্রীর হাত থেকে রক্ষার চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি একটি প্রায়োরিটি কাজ, যা সরকার, মেয়র, বিশেষজ্ঞ এবং জনগণের সচেতন অংশের কঠিন, কঠোর, ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণের মাধ্যমে এই মুহূর্তে কাজে নেমে যেতে হবে। টাইম ইজ নাও। দেরি করার সুযোগ নেই, বিকল্পও নেই। যদি আমরা দেশকে ভালবাসি, তাহলে যার যা আছে তাই নিয়ে যেমন ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে নেমে পড়েছিল পুরো জাতি, তেমনভাবে জলজট, যানজট, কংক্রিট জট থেকে দেশরক্ষায় পুরো জাতিকে নামতে হবে। কি কি অবশ্য করণীয় করতে হবে, তা ঠিক করে নিতে হবে। যেমন- ১. সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলব, সাংসদদের ঢাকায় জমি পেতে হবে- এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত এখনই বন্ধ করতে হবে। সাংসদরা কি জনগণের মাথা কিনে নিয়েছে যে, তাদের সবাইকে ছোট্ট আয়তনের এই দেশের ছোট জলাভূমি, বদ্বীপের রাজধানীতে ৫ কাঠা, ১০ কাঠা জমি পেতে হবে? বর্তমানের প্রবল বন্যায় সাংসদরা ঢাকা ছেড়ে নিজ এলাকায় শুকনো খাবার, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি, কাপড়, ওষুধপত্র- স্যালাইন নিয়ে গিয়েছেন কি? তারা কি জানেন যে, ডুবন্ত বাড়ির চালে বা উঁচু রাস্তায় চাল রান্না করা রূপকথা মাত্র? এখন পাউরুটি, বনরুটি, রুটি, চিড়া, কলা, গুড়, চিনি ও পানি- এ খাদ্যই তাদের জন্য যথার্থ। আমি অন্তত টিভিতে মাইলকে মাইল বন্যায় ডুবে থাকা গ্রামের মানুষের মধ্যে ত্রাণ, শুকনো খাবার বিতরণ করতে কোন মন্ত্রী-সাংসদকে দেখিনি। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার ছবিসহ নিজের ছবি দিয়ে তৈরি বিলবোর্ড ঝুলিয়ে যারা আনুগত্যের পরাকাষ্ঠা দেখায়, তারা আর যাই হোক বঙ্গবন্ধু বা শেখ হাসিনার প্রকৃত মিত্র নয়, তা জনগণ জানে। সরকারী দলের স্থানীয়, কেন্দ্রীয় নেতা-নেত্রীদের এ বন্যায় কিছু করণীয় আছে কিনা, দেখতে পাচ্ছি না! এমনকি, আগে বন্যার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা যেভাবে রুটি তৈরি করেছে, এনজিওগুলো ত্রাণ সংগ্রহ করে আক্রান্ত স্থানে পৌঁছে দিয়েছে, তাও দেখা গেল না। এবার তারুণ্যও পিছু হটেছে, বৃদ্ধ, প্রৌঢ়দের মতোই পিছু হটেছে। এনজিও, বেসরকারী, সরকারী প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, কাউকে বন্যার্তদের পাশে দেখছি না। এ এক মানবিক বিপর্যয়, মানুষের মন থেকে বিবেক, অন্যের স্বার্থরক্ষার তাগিদ, অন্যকে সেবা দেয়া সব মূল্যবোধ যেন বিশাল এক লোভের গ্রাসে হারিয়ে গেল। ২। ঢাকা রক্ষার প্ল্যানটিকে যুগোপযোগী করে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেজন্য ঢাকার নদী, খাল দখলমুক্ত করতে হবে, যা সবাই জানে। এর জন্য হাজার হাজার ধনী, মধ্যবিত্ত ফ্ল্যাটবাসীকে উচ্ছেদ করা হবে যত কঠিন, ততটা সহজ হবে বস্তি উচ্ছেদ করে খাল-নদীকে দরিদ্রের দখলমুক্ত করা! সেজন্য অবশ্য কলকাতার মডেল অনুসরণ করা যায়। নদী-খাল-জলাভূমি যা বড় প্রতিষ্ঠান বা রিয়াল এ্যাস্টেট কোম্পানি দ্বারা দখল হয়েছে সেগুলো উদ্ধারে রিয়াল এ্যাস্টেট কোম্পানির বড় প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে দখল মুক্তির অভিযান চালাতে হবে। কেননা ওই সংস্থাগুলো যে লক্ষ-কোটি টাকা মুনাফা করেছে তার একটি অংশ দিয়ে কিছু আবাসিক এলাকার মানুষকে অন্য স্থানে পুনর্বাসন করার দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। উত্তরার রেললাইনের পাশের খালটি এই সেদিনও তো ছিল! রাজউক কি খাল, নদী ভরাট করে প্লট তৈরি করে সাংসদ, পেশাজীবীদের মধ্যে বিক্রি করার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান? এটিই কি তাদের কাজ? রাজউক কর্তৃক সাংসদসহ বিভিন্ন পেশাজীবীকে প্লট তৈরি করে লিজ দেবার দায়িত্ব থাকার অর্থ কি? সাংসদরা জনপ্রতিনিধি, তাদের জন্য সর্বোচ্চ একটি প্লটকে ৪/৫ জনের মধ্যে বিতরণ করা যেতে পারে, যদিও এর কোন দরকার আছে বলে মনে করি না। তেমনি শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার সুযোগ দেবার কারণ কি? তাদের বাসস্থান ফ্রি, তারা বেতনও পান। এগুলো সংসদে পুনর্বিবেচনা করা দরকার। বিশেষত প্লট দেয়ার বিষয়টি বন্ধ করতে হবে। ৩। দুই মেয়রকে নগরের সবরকম সেবাদাতা সংস্থার কর্তাদের নিয়ে কলকাতা শহরকে ওই পৌরমেয়র কিভাবে পরিচালনা করছেন তা দেখে আসার অনুরোধ জানাব। কলকাতা যা আগে জলজট, যানজাট ও লোডশেডিংয়ের শহর ছিল, সেটি কিভাবে একটি জলমুক্ত, সুন্দর পরিবহন ব্যবস্থা, বস্তিকে আড়াল করে নিম্নবিত্তের জীবিকা অর্জনের কেন্দ্র, আবার নিরাপদ নগরীতে পরিণত হয়েছে, কেন তাদের অটো এক টাকার গন্তব্যেও যায়, ট্যাক্সিক্যাব তুলনায় এত সুলভ যে, কলকাতা গেলে যে কোন স্থানে সস্তায়, সহজে ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারা ভ্রমণের জন্য একটি প্রণোদনা, যা ঢাকায় কল্পনাতীত। কলকাতার যত রকম সমস্যা ছিল সেসব সমস্যা দ্বারা বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম আক্রান্ত। প্রতিবেশী দেশের সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি এখানে কিছুটা রদবদল করে ব্যবহার করলে এখনই স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম হাতে নেয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া ঢাকার বড় সমস্যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বর্জ্য অপসারণ এবং রি-সাইক্লিং করার জন্য এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্জ্য সংগ্রহের সময় অবশ্যই সন্ধ্যা থেকে রাত- এটি মানতে হবে। আসলে তরল বর্জ্য ও শক্ত বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করতে পারলে ভাল হয়। সেজন্য স্যুয়ারেজ লাইন, পানির লাইন আলাদা করতে, আলাদা রাখতেই হবে! এর অন্য কোন বিকল্প নেই। ঢাকার বক্স কালভার্ট যদি বৃষ্টির পানি নিঃসরণে বাধা হয় তবে সেগুলো এখনই ভেঙ্গে আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অপেক্ষা করবেন না। ৪। এছাড়া, প্রতি এলাকার খেলার মাঠ, পার্কগুলো দখলমুক্ত করে শিশু, কিশোর, বয়স্কদের খেলা, হাঁটার স্থান হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। পুকুরগুলো, নদী-খাল, ঝিলকে দূষণমুক্ত করে সাঁতার শেখা, সাঁতার প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা দরকার। তাহলে এলাকার মানুষ এগুলো রক্ষা করার জন্য নিজেরাই এগিয়ে আসবে। ৫। বিহারীদের জেনেভা ক্যাম্প, অন্য ক্যাম্পকে বসবাসযোগ্য করে ওগুলোকে অপরাধের কেন্দ্র হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে হবে। নারিন্দাসহ পুরান ঢাকার কিশোর, তরুণরা মাদক নেশার কবলে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে তরুণী, বিবাহিত মেয়েদের সুস্থ স্বপ্ন ধ্বংস হচ্ছে। মনে হয় পুরান ঢাকাকে নিয়ে একটা আলাদা পরিকল্পনা করতে হবে। এত সুন্দর বলধা গার্ডেন, বর্তমানে কর্তৃপক্ষের অযতœ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। বলধা গার্ডেনকে উন্মুক্ত করে যতœ নিয়ে দ্রুত পার্কে পরিণত করা দরকার। ৬. ঢাকার যানজট নিরসনে অটো সিগন্যাল ব্যবহার করলে এত ফ্লাইওভারের দরকার হবে না। তাছাড়া, রাজপথে গণপরিবহন বাস কই? দশ-পনের বছর আগেও তো আমরা বাসে চেপে অফিসে গিয়েছি। জনসাধারণের চলাচলের বাহন না থাকা, সিএনজির গগনচুম্বী ভাড়া, ট্যাক্সিক্যাব তো এত উচ্চমূল্যের যে, যারা ৫০/৬০ লাখ টাকার গাড়িতে চড়ে তারাই চড়তে পারে। সুতরাং, এভাবে নাগরিক জীবন চলতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রচুর গণপরিবহন চলাচল করে। সবশেষে বলব, আরও বহু কাজ করার আছে। তবে দুই মেয়র অন্তত এলাকাভিত্তিক পার্ক, খেলার মাঠ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, স্কুলে সুন্দর পরিবেশ, বস্তিবাসীর নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা যদি করতে পারেন তাহলে অনেক কিশোর, তরুণ নেশা-মাদক থেকে খেলাধুলায় ফিরে আসবে। বিভিন্ন ঋতুভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে প্রত্যেক এলাকায়, যাতে শিশু-কিশোর, তরুণরা অংশ নেবে। যদি স্কুলে এসব অনুষ্ঠান হতে পারে তাহলে ছেলে-মেয়েরা স্কুলমুখী হবে, সুস্থ-স্বাভাবিক হয়ে বেড়ে উঠতে পারবে। লেখক : শিক্ষাবিদ, গবেষক
×