ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আসছে ব্রিটিশ বাণিজ্য প্রতিনিধি দল

বঙ্গোপসাগরে খনিজ অনুসন্ধানে আগ্রহ থাইল্যান্ডের

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বঙ্গোপসাগরে খনিজ অনুসন্ধানে আগ্রহ থাইল্যান্ডের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গোপসাগরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে থাইল্যান্ড। এছাড়াও দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে চায়। রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এসব আলোচনা করেন ঢাকায় নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাদুরাপোচানা ইত্তারং। এদিকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আজ সোমবার ঢাকায় আসছেন যুক্তরাজ্যের একটি শীর্ষ বাণিজ্য প্রতিনিধি দল। প্রায় সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব পালন শেষে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাদুরাপোচানা ঢাকা থেকে বিদায় নিচ্ছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বিদায়ী বৈঠকে তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে খনিজ ও পেট্রোলিয়ামজাত সম্পদ অনুসন্ধানে থাইল্যান্ডের বিনোয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে। এ অনুসন্ধান কার্যক্রম থেকে উভয় দেশই লাভবান হতে পারে বলেও তিনি জানান। বৈঠকে বাংলাদেশের ওষুধ রফতানির কথা উল্লেখ করে থাই রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে উভয় দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল সফর করতে পারে। বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য থাই রাষ্ট্রদূতের ভূমিকার প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ সময় থাই রাষ্ট্রদূতও বলেন, থাইল্যান্ডও বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী। ঢাকায় অবস্থানের সময়টি অধিক সুখকর উল্লেখ করে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, সবধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বৈঠকে গত ২৯ মে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিষয়ে ব্যাঙ্ককে একটি বিশেষ সভা আহ্বান করায় থাই সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। এদিকে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবলের কাছে নিজের পরিচয়পত্র পেশ করেছেন থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম। কূটনীতিক হিসেবে কোন দেশে নিযুক্ত হওয়ার নিয়ম অনুযায়ী এ পরিচয়পত্র পেশ করা হয়। এ সময় থাই রাজার কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রেরিত শুভেচ্ছাবার্তাও পৌঁছে দেন তিনি। থাইল্যান্ডের দূতাবাস জানায়, থাই রাজা ভূমিবল অসুস্থ থাকায় যুবরাজ ক্রাউন প্রিন্স মহা ভাজিরালংকরন বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেন। শনিবার ব্যাঙ্ককের আম্বারা প্যালেসে পরিচয়পত্র পেশকালে বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন থাই যুবরাজ। এ সময় থাই রাজা ভূমিবলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং জনসাধারণের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানানো হয়। থাই যুবরাজ আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় দুই দেশ একযোগে কাজ করে যাবে। এ সময় উপস্থিত থাই রাজকুমারী মাহা চাহরি সিরিনধরন ২০১০ ও ২০১১ সালের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন এবং বাংলাদেশে থাই রাজপরিবারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে আরও বিস্তৃত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সাঈদা মুনা তাসনিম গত বছরের ১৪ নবেম্বর থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ মিশনে যোগ দেন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেয়ার পর তিনি এই প্রথম থাই রাজার নিকট পরিচয়পত্র পেশ করলেন। ব্রিটিশ বাণিজ্য প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন ॥ বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আজ সোমবার ঢাকায় আসছেন যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিনিধি দল। যুক্তরাজ্যের কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রির (সিবিআই) পরিচালক সাইমন মুর ও ভারতের সিবিআই প্রধান শেহলা হাসান দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন। রবিবার ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য, বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে সিবিআই প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করবেন। সিবিআই ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন। এই সংগঠনের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে আগ্রহী। এ বিষয়ে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার মার্ক ক্লাইটন বলেছেন, সিবিআই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। এদিকে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে পৃথক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ব্রিটিশ নাগরিকদের সেবা বাড়ানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রামে একটি পরামর্শ সেবা চালু করেছে ব্রিটিশ হাইকমিশন। চট্টগ্রামের ব্রিটিশ কাউন্সিলে এই সেবা প্রদান করা হবে। চট্টগ্রাম থেকে ব্রিটিশ নাগরিকদের সেবা প্রদানের জন্য পরামর্শ সেবা চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার মার্ক ক্লাইটন বলেছেন, ব্রিটিশ নাগরিকদের সেবা প্রদানের জন্য চট্টগ্রামে পরামর্শ সেবা চালু করা হয়েছে। এই সেবা চালু হওয়ায় ব্রিটিশ নাগরিকরা এখান থেকে সুবিধা পাবেন। এছাড়া পরামর্শ সেবা চালু করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি জানান।
×