ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে সরকারী দফতর

চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য

প্রকাশিত: ০৬:২০, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। মুফতি ইজাহার গ্রেফতার অভিযান ব্যতীত গত একমাসে সিএমপির ১৬ থানার পক্ষ থেকে ইয়াবা আর চোলাইমদ উদ্ধারের ঘটনায় মিডিয়াকে প্রেস রিলিজ বিতরণ ছাড়া আর কোন কর্মতৎপরতা নেই। অথচ নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় থাকা সরকারী দফতরে টেন্ডার নিয়ে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য ক্রমশ বেড়ে চলছে। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা বিভাগের কাছে কোন তথ্য নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে। টেন্ডারবাজির ঘটনায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে কোন অভিযান পরিচালিত হওয়ার নজিরও নেই। ফলে সন্ত্রাসীদের আস্ফালনে রীতিমত সরকারী কর্মকতা ও কর্মচারী ছাড়াও সরবরাহকারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নগরীর প্রায় ১০ টিরও বেশি সরকারী প্রতিষ্ঠানে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় মাল ক্রয় ও মেরামতসহ নগরীর উন্নয়নে প্রতিমাসেই টেন্ডার আহ্বান ও বক্স ওপেনিং করা হয়। এই সময় অসাধু সরবরাহকারীদের পক্ষে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা অপতৎপরতা চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবার সম্ভাবনা বিষয়ে নগর বিশেষ শাখার সহায়তা নেয়া হয় সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তার পক্ষ থেকে। কিন্তু এরপরও গোয়েন্দা বিভাগ কোন ধরনের সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরবরাহকারী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। অথচ গোয়েন্দা বিভাগ তাদের নজরদারীর মাধ্যমে এসব সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজকে চিহ্নিত করে আইনের কাছে সোপর্দ করার ক্ষেত্রে কেন পিছিয়ে তা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশ্ন উঠেছে, নগর বিশেষ শাখা ও গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। পুলিশের সাপোর্ট চাওয়ার পরও টেন্ডার আহ্বানকারী দফতরগুলো থানা পুলিশের ৩/৪ সদস্যের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে টেন্ডার কাজ সম্পাদন করতে হয় নানা প্রতিকূলতা ও আতঙ্কের মধ্যেই। ফলে দফতরের কর্মকর্তাসহ সাধারণ সরবরাহকারীর নিরাপত্তাহানি ঘটছে। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ দফতরেই টেন্ডার নিয়ে নানা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি বন্ধ না হওয়ার পেছনে গোয়েন্দা বিভাগই দায়ী বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। জানা গেছে, সরকারী উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নগরীর প্রায় ১০টি সরকারী দফতরে টেন্ডার আহবানের মাধ্যমে ঠিকাদার বা সরবরাহকারী নিযুক্ত করা হয়। এসব দফতরের মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ রেলওয়ে, গণপূর্ত বিভাগ, ওয়াসা, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন, সিভিল সার্জন দফতর, পরিবেশ অধিদফতর, চট্টগ্রাম বন্দর, পিডিবি, সড়ক ও জনপথ(সওজ) বিভাগ। প্রায় প্রত্যেক মাসেই এসব সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত দফতরগুলো সরাসরি বা তাদের বিভিন্ন শাখা অফিসের মাধ্যমে নগরীর উন্নয়নকল্পে বা মেরামত কাজের বিপরীতে টেন্ডার আহবান করে। অপরদিকে, বাংলাদেশ রেলওয়ের কয়েকটি দফতরেও টেন্ডার আহবানের মাধ্যমে সরবরাহকারী সিলেকশন করা হয়। কিন্তু এসব দফতরে টেন্ডার বক্স ওপেনিংয়ের দিনে পর্যাপ্ত পুলিশী সহায়তার জন্য নগর বিশেষ শাখায় স্ব স্ব দফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। সে অনুযায়ী বিভিন্ন কার্যলয়ের পার্শ¦বর্তী থানা পুলিশ প্রহরায় টেন্ডার কার্য সম্পাদন হয়। কিন্তু থানা পুলিশের ৩/৪ সদস্যের টিম প্রহরায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে। ফলে টেন্ডারবাজদের বাধার মুখে সাধারণ ঠিাকাদার বক্সে টেন্ডার শিডিউল না ফেলে ফেরত নিয়ে ফেরেন। এ ব্যাপারে সিএমপির এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, একটিভ পুলিশ কর্মকর্তা ও টিম না থাকলে অভিযান না থাকাটাই স্বাভাবিক।
×