ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন প্রতিষ্ঠানের জরিপ সাংঘর্ষিক ॥ বিএনপির দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মার্কিন প্রতিষ্ঠানের জরিপ সাংঘর্ষিক ॥ বিএনপির  দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলে মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) জরিপ প্রতিবেদন সাংঘর্ষিক বলে দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি করেন। একই দিন জাতীয় প্রেসক্লাবে গাজীপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহ বলেছেন, আন্দোলনের ভয়ে মেয়র মান্নানকে জেলে আটকে রেখেছে সরকার। রিপন বলেন, যে দেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় সেদেশে বিনা ভোটের সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ে কীভাবে? আর যে জরিপে বলা হয়েছে সরকারের জনপ্রিয়তা বেড়েছে আবার সে জরিপেই বলা হয়েছে সকল দলের অংশগ্রহণে দ্রুত নির্বাচন দিতে। এ কারণেই আমরা এ জরিপকে সাংঘর্ষিক বলছি। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপের ফলে বিএনপির রাজনীতিতে কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, এই জরিপ নিয়ে শুধু দলের নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের মনেও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। জরিপের প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যে সংঘাত রয়েছে। তাই এ ধরনের জরিপে বিএনপির রাজনীতিতে কোন প্রভাব পড়বে না। সরকার যদি এ জরিপের ফল গ্রহণ করে তাহলে তো তাদের নির্বাচন দেয়া উচিত এবং সে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কারণ নেই। রিপন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা বেড়েছে জরিপে উঠে আসা এ বিষয়টির কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে বাংলাদেশের দুটি প্রথম শ্রেণীর দৈনিকের সহায়তায় জরিপ করে বলেছে, সঠিক নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া সত্ত্বেও একই প্রতিষ্ঠান কিভাবে বলে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের জনপ্রিয়তা বেড়েছে? যে সরকারের শাসনামলে দখল, লুটপাট, গুম, ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি থাকে এবং সুশাসন না থাকে সে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ে কি করে?। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক আফজাল এইচ খান, সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, গণশিক্ষা সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাম্মী আক্তার এবং এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম। আন্দোলনের ভয়ে মেয়র মান্নানকে আটকে রেখেছে সরকার -হান্নান শাহ: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান জনপ্রিয় নেতা হওয়ায় আইনের মারপ্যাঁচে সরকার তাকে গ্রেফতার করে জেলে আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে গাজীপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি অবিলম্বে মেয়র মান্নানের মুক্তি দাবি করেন। হান্নন শাহ বলেন, সরকার সারাদেশের বিএনপিদলীয় সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের বিভিন্ন অজুহাতে সরিয়ে দিচ্ছে। গণতান্ত্রিক স্বায়ত্তশাসিত কোন প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে দিচ্ছে না সরকার। এরই অংশ হিসেবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক আব্দুল মান্নানকে জেলে আটকে রেখেছে। হান্নান শাহ বলেন, গাজীপুর যেহেতু ঢাকার কাছে, তাই মেয়র মান্নানের মতো একজন জনপ্রিয় নেতা বাইরে থাকলে আন্দোলনের ঢেউ লাগবে। তাই সরকার পতনের ভয়ে তাকে আটক করে রেখেছে। তবে মেয়র মান্নানের মুক্তির জন্য আমরা আইনী সহায়তা নিচ্ছি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মেয়র মান্নানকে আইনী সহয়তা দেয়ার জন্য দলের আইনজীবীদের তাগাদা দিচ্ছেন। তিনি নিয়মিত মেয়র মান্নানের খোঁজখবরও রাখছেন। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা অনির্বাচিত উল্লেখ করে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি দেখলেই সরকারের লোকদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। মেয়র মান্নান বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় তাকে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেলে রাখা হয়েছে। মেয়র মান্নানের স্ত্রী সাজেদা মান্নান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, অধ্যাপক এমএ মান্নানের নামে ১১টি মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কারাগারে বন্দী রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। বিচার শেষ না হওয়ার আগেই মেয়র পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত ঘৃণিত ও দুঃখজনক। তিনি বলেন, মেয়র মান্নান দীর্ঘদিন যাবত হার্ট, কিডনি ও ডায়বেটিসে আক্রান্ত এবং অসুস্থ। তাকে গ্রেফতার করে একের পর এক রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার উন্নত চিকিৎসা খুবই জরুরী। উন্নত চিকিৎসা দেয়া না হলে তার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। তাই সরকারের কাছে দাবি করছি কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে তাকে মুক্তি দিন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মেয়র মান্নানের স্ত্রী সাজেদা মান্নান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুমায়ন কবির, গাজীপুর বারের সভাপতি শহিদুজ্জামান, ড্যাবের সিনিয়ির যুগ্ম মহামচিব রফিকুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।
×