ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

‘তোমার চোখে শিল্পী এসএম সুলতান’ চিত্র প্রদর্শনী শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

‘তোমার চোখে শিল্পী এসএম সুলতান’ চিত্র প্রদর্শনী শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাটি ও মানুষের চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। চোখের সামনে দেখেছেন দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগ, দেখেছেন স্বর্ণোজ্বল বিপ্লব এবং অপার আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ। সময়ের এই উত্থান-পতন আন্দোলিত করেছে পৃথিকৃৎ এই শিল্পীর চেতনাকে। উপলব্ধি করেছেন সেই শক্তিকে যে শক্তি লাঙ্গলের ফলায় জাগিয়ে তোলে মাটির সৃষ্টিসুখ, যার স্ফূরণে বদলে যায় সভ্যতা। মেহনতী মানুষের পেশীতে লুকিয়ে থাকা সেই অদম্য শক্তি বারবার চিত্রিত হয়েছে সুলতানের ক্যানভাসে। অন্যদিকে, বরেণ্য ও ব্যতিক্রমী এই শিল্পী আমৃত্যু কাজ করেছেন শিশুদের সৃষ্টিশীলতার বিকাশে। দেশের শিশুরা ছবি আঁকবে ও প্রকৃতিকে জানার মধ্যে দিয়ে সৃজনের আনন্দ নিয়ে বেড়ে উঠবে। সৃজনের শিক্ষায় শিশুরা এগিয়ে যাবে আগামীর পথে। জাতীয়তাবোধের অনন্য জ্ঞানে-মানে জয় করবে সারাবিশ্ব। আর সুলতানের চিত্রপট ও ভাবনার আলোড়িত সেই জাতীয়বোধের চেতনা শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই শিল্পগুরুর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদ্্যাপন উপলক্ষে আজ শুক্রবার থেকে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় শুরু হচ্ছে ‘তোমার চোখে শিল্পী এস এম সুলতান’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী চিত্রপ্রদর্শনী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এস এম সুলতানকে যৌথভাবে এই প্রদর্শনী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শিশুদের মানসিক বিকাশে কাজ করা সংগঠন চারুপুঁথি। আজ শুক্রবার বিকেলে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় প্রধান অতিথি হিসেবে চিত্র প্রদর্শনী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর । শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান ও কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটিডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হায়দার চৌধুরী। বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। আয়োজনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন চারুপুঁথির শিক্ষক ও সংগঠক এহসান প্রতীক, শিল্পী সৈয়দ গোলাম দস্তগীর, শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের প্রতিনিধি এস এম সালাউদ্দিন এবং আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেইলিসিমো আইসক্রিমের প্রতিনিধি রাজীব সাহা। এস এম সুলতানের দর্শনকে শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পথিকৃৎ এই শিল্পী শিশুদের সৃষ্টিশীলতার বিকাশের পাশাপাশি জাতীয়তাবোধ তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তাই শিশুদের মাঝে তাঁর দর্শনকে ছড়িয়ে দিতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সুলতানের ছবি দেখে শিশুরা পরিচিত হয় আবহমান বাংলার শ্যামলিমা আর তামাটে ব্রাত্যজনের নিত্যদিনের সংগ্রামের সঙ্গে। এ আয়োজনের মাধ্যমে শিশুরা শিল্পী ও দার্শনিক সুলতানের চেতনার সঙ্গে পরিচিত হবে। তাঁর ভাবনার চোখ দিয়ে সৃজন করবে আপন চিত্রপট। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী প্রসঙ্গে জানানো হয়, সুলতানের ভাবনাকে উপজীব্য সারাদেশের শিশুদের আঁকা ছবি থেকে ২০০টি চিত্রকর্ম নির্বাচন করা হয়। সেই ২০০ ছবি নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। আর শুক্রবার বেলা দুইটায় নির্বাচিত চিত্রকর্মের শিশু শিল্পীদের অনুষ্ঠিত হবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা থেকে ১০০ জন শিশুশিল্পীকে পুরস্কৃত করা হবে। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করবেন ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান ও চিত্রশিল্পী রবিউল ইসলাম। এছাড়া আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর চিত্রশালার গ্যালারিতে চলবে প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছায়ানট প্রকাশিত প্রবন্ধ সংকলনের প্রকাশনা ॥ ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট থেকে প্রকাশিত হলো বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ সংকলন বিশ্বভরা প্রাণ। ড. এ এম হারুণ অর রশীদ লিখিত প্রবন্ধ সংকলনটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানটির সূচনা ‘আকাশভরা সূর্য তারা’ শীর্ষক সম্মেলক সঙ্গীতের মাধ্যমে। এরপর স্বাগত কথনে অংশ নেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ডাঃ সারওয়ার আলী। সংকলনটি নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক আরশাদ মোমেন। প্রবন্ধ সংকলনটি নিয়ে আপন অনুভূতি প্রকাশ করেন লেখক ড. এ এম হারুন অর রশীদ। সভাপতির বক্তব্য রাখেন ছায়ানটের সভাপতি সন্্জীদা খাতুন। এরপর একক কণ্ঠে গান শোনান লাইসা আহমদ লিসা। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। বয়সভিত্তিক নৃত্য প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠান ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা দেশব্যাপী বয়স ও বিষয়ভিত্তিক একক ও দলীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। শোকের মাস আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্যরে মাধ্যমে গত ১৮ আগস্ট শিল্পকলা একাডেমিতে এ প্রতিযোগিতার সূচনা হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে নির্বাচিত প্রতিযোগীদেরকে অংশগ্রহণে গত ২৩ আগস্ট থেকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়। সকল বিষয় থেকে সেরা দশজন নৃত্যশিল্পীকে ‘সেরা দশ’ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বৃহস্পতিবার সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার বিজয়ী পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে ছিল বিজয়ী শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে সন্ধ্যা সেরা দশ নির্বাচিত নৃত্যশিল্পীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক এবং শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান।
×