স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুক্রবার রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশসহ তিনজন ও কবুতরকে খাবার দিতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে পেট্রোবাংলার এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে, পিতার সঙ্গে অভিমান করে এক যুবকের আত্মহত্যা এবং একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। যদিও আগুনে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বেলা আড়াইটায় কাওরানবাজার বিআরবি কেবলসের আরএমএস ভবনের সামনে মিনিবাসের ধাক্কায় কনস্টেবল সোহেল রানা (৩২) গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা জানান, সোহেল রানা মোটরসাইকেলযোগে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় মিরপুরগামী একটি মিনিবাস তাঁকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। গুরুতর আহত হন সোহেল রানা। ঘটনার সময় সেখান দিয়ে নৌবাহিনীর একটি গাড়ি যাচ্ছিল। নৌবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেই গাড়িতে করেই আহতকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সোহেল রানাকে বেলা তিনটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
তেজগাঁও থানা ও ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার সূত্র জানায়, নিহত সোহেল রানা পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) কর্মরত ছিলেন। তাঁর পিতার নাম খলিলুর রহমান। কুষ্টিয়া জেলা সদরের থানা পাড়ার পুলিশ লাইন এলাকায় তাঁর বাড়ি।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, চালক আব্দুল খালেকসহ (৪৫) মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ী যাতায়াতকারী ঢাকা মেট্রো-জ-১১-১৯৯৫ নম্বর বাসটি রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হচ্ছে। এদিকে সকাল ছয়টায় খিলক্ষেত থানাধীন কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে যাত্রীবাহী সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। চালক গাড়ি থামাতে দ্রুত ব্রেক কষে। ঝুঁকি সামলাতে না পেরে নাসরিন আক্তার (১৯) নামের এক বাসযাত্রী ছিটকে বাসের চাকায় নিচে পড়ে যান। চাক্কায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। নাসরিন আক্তার গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে একটি গার্মেন্টসের কর্মী ছিলেন। তার পিতার নাম আকতার বেপারী। বাড়ি বরিশাল জেলার হিজলা থানাধীন ছয়ঘর গ্রামে। খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, নাসরিন ছোটভাই নাসির হোসেনকে নিয়ে বরিশাল থেকে সদরঘাট এসে সুপ্রভাত পরিবহনের ওই বাসে টঙ্গীতে যাচ্ছিলেন। বাসটি জব্দ করা গেলেও চালক পালিয়েছে। আহত এক যাত্রীকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সকাল সাতটার দিকে যাত্রাবাড়ীর কলাপট্টি থেকে রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় মজিবুর রহমান (৪০) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকার কালিন্দায় বলে জানিয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবনী শংকর কর।
সকাল দশটায় খিলগাঁও তালতলা ৯২৪/সি নম্বর বাসায় কবুতরের খাবার দিতে গিয়ে আট তলার ছাদ থেকে পড়ে মনিরুজ্জামান (৫৩) নামে একজন গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর বারোটায় তাঁর মৃত্যু হয়। খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবিরুল ইসলাম জানান, মনিরুজ্জামান পেট্রোলবাংলায় কেরানী পদে কাওরানবাজার শাখায় কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে দুপুরে খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ-২ নম্বরের ১৮ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর ছয়তলা বাড়ির নিচতলা থেকে স্থানীয় একটি স্কুলের রিয়াজুল ইসলাম নামের এক নবম শ্রেণীর ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, রিয়াজুল পিতামাতার সঙ্গে ওই বাড়িতে ভাড়ায় থাকত। বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে লাশটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকালে লাশটি বাথরুমের গ্রিলের সঙ্গে গামছা দিয়ে ফাঁস দেয়া ছিল। পিতা নুরুল ইসলামের বকাবকিতে অভিমান করে রিয়াজুল আত্মহত্যা করে। নিহতের গ্রামের বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানা এলাকায়।
পিতা নুরুল ইসলাম জানান, জুমার নামাজ শেষে ছেলের পড়াশোনা বিষয়ে বকাবকি করি।