ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টাইগার বোলারদের প্রশংসা, আমলার উইকেট পেয়ে রোমাঞ্চিত মুস্তাফিজ

ডট বল তত্ত্বে সফল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২২ জুলাই ২০১৫

ডট বল তত্ত্বে সফল বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরু করেছিল মনে হচ্ছিল রানের পাহাড় গড়বে তারা। দাারুণভাবে দ্বিতীয় সেশন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথমদিনেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে দেন বাংলাদেশী বোলাররা। মূলত তরুণ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত এক স্পেলেই ধসে যায় প্রোটিয়া শিবির। দিনশেষে তাই স্বস্তি, তৃপ্তির ঢেঁকুর বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে। তরুণ পেসার মুস্তাফিজ অভিষেকেই চমক জাগানিয়া বোলিং করে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথাই জানালেন। তিনি নিজে প্রোটিয়া অধিনায়ক হাশিম আমলার উইকেট শিকার করেছেন। আর অভিষেক উইকেটটাই আমলার মতো ব্যাটসম্যানের হওয়াতে দারুণ রোমাঞ্চিত মুস্তাফিজ। জানিয়েছেন প্রথম সেশন খারাপ গেলেও বাংলাদেশের বোলারদের মূল লক্ষ্য ছিল যতবেশি সম্ভব ডট বল করা, তাহলেই সফলতা আসবে। এই তত্ত্বটাই কাজে লেগেছে বলে দাবি তার। টেস্ট ক্রিকেটে রান আটকানোর চেয়ে উইকেট শিকারটাই মূল লক্ষ্য। কিন্তু মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টে যেভাবে ব্যাটিং শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সে কারণে পরিকল্পনা বদলে যতটা সম্ভব রান আটকানো তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছিল বাংলাদেশ। সে কারণেই পরের দিকে দ্রুত উইকেট তুলে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। এ বিষয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘উইকেট বদলায়নি। প্রথম ৩০ ওভারে সবাই একটু এলোমেলো ছিল। সেভাবে বোলিং করতে পারেনি। মধ্যাহ্ন বিরতির পর আমরা চাপ দিয়েছি। অনেক রান কম দিয়েছি। এটাই কাজে লেগেছে। আমাদের পরিকল্পনা ছিল যত সম্ভব ডট বল করা। তাহলে উইকেট আসবে।’ আমলা টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর ব্যাটসম্যান। তাকে দারুণ এক অফকাটারে পরাস্ত করে ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাশিম আমলার উইকেট বেশি আনন্দ দিয়েছে। হাশিম আমলার মতো ব্যাটসম্যানের উইকেট নিয়ে প্রথম উইকেট পেয়ে অনেক রোমাঞ্চিত। ওয়ানডেতে অফকাটার হয় তো ওভারে ২-৩টা চেষ্টা করি। এখানে ২-৩ ওভার পরপর একটা চেষ্টা করেছি। টেস্টে ব্যাটসম্যানদের রানের তাড়া কম থাকে। এ জন্য বেশি চেষ্টা করিনি।’ আমলাকে দিয়ে শুরু করা মুস্তাফিজ একই ওভারে পরের বলে ফিরিয়ে দেন জেপি ডুমিনিকে। হ্যাটট্রিকের সুযোগ হারালেও ঠিক পরের বলেই আবার কুইন্টন ডি কককে বোল্ড করে অফস্টাম্প উড়িয়ে দেন তিনি। এ বিষয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘নিয়মিত ব্যায়াম করছি, অনুশীলন করছি। এইচপি দলে থাকার সময় কাজ করেছি। স্টাম্প উড়তে দেখলে ভাল লাগারই কথা। হ্যাটট্রিক হয়নি, চেষ্টা ছিল। বলটা যেভাবে করতে চেয়েছিলাম, সেটাই হয়েছে। কিন্তু ব্যাটসম্যান ভাল খেলেছে। উইকেট পাইনি।’ দারুণ একটি স্পেল করলেও প্রথমদিকে সুবিধা করতে পারেননি মুস্তাফিজ। এ কারণে বাতাসের সুবিধা কাজে লাগাতে পরবর্তীতে রাউন্ড দ্য উইকেট বোলিং করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম স্পেলে ভাল হচ্ছিল না বোলিং। তবে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। চেষ্টা করছিলাম যে অন্যপ্রান্তের বোলারের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলতে পারি। ভাল বোলিং না হলেও অন্তত যেন ডট বল করতে পারি। জানতাম দুই দিক থেকে চাপ দিলে উইকেট আসতে পারে। বাতাসটা কাজে লাগানোর জন্য রাউন্ড দ্য উইকেট বোলিং করেছি। ওদিক থেকে সুইং পাচ্ছিলাম না। টেস্ট ক্রিকেট ওয়ানডের চেয়ে অনেক কঠিন খেলা। কষ্ট বেশি করতে হয়। ওয়ানডে খেলায় জায়গায় বল রাখতে পারলেই হয়। ব্যাটসম্যানরা সবসময় রান করতে চায়, মারতে গিয়ে উইকেট দেয়। টেস্টে সহজে উইকেট পাওয়া যায় না। ভাল বল ব্যাটসম্যানরা ছেড়ে দেয়। টেস্টে উইকেট নিয়ে নিতে হয়।’ দলের অন্য বোলারদেরও দারুণ প্রশংসা করলেন এ তরুণ পেসার। বিশেষ করে নতুন বলের পার্টনার মোহাম্মদ শহীদকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘শহীদ ভাই অসাধারণ বোলিং করেছে। পুরো দলই আসলে দারুণ বোলিং করেছে।’
×