ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে সোনালী ব্যাংকের কোটি টাকা লোপাট ॥ আইটি কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ৩

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৬ জুলাই ২০১৫

রাজশাহীতে সোনালী ব্যাংকের কোটি টাকা লোপাট ॥ আইটি কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ৩

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর তানোর শাখা সোনালী ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ হিসাব থেকে এক কোটি ১৮ হাজার টাকা লোপাটের ঘটনায় আইটি কর্মকর্তাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন, ব্যাংকের আইটি কর্মকর্তা নাজির হোসেন সোহেল, তাঁর স্ত্রী সালমা জাহান লিমা ও এসএম মাসুদ হাসান। মঙ্গলবার রাতে তাদের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার বেলা ১১টায় রাজশাহী র‌্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আটক ওই প্রতারক চক্রকে হাজির করা হয়। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েক কর্মকর্তাও জড়িত থাকতে পার বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। র‌্যাব সূত্র জানায়, সোহলের স্ত্রীর দেয়া তথ্যমতে, প্রথমে সোহেলকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে আটক করা হয়। এরপর অন্য দুজনকে রাজশাহী নগরী থেকে আটক করা হয় রাতে। সূত্রমতে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের রাজশাহীর তানোর শাখা থেকে এক কোটি ১৮ হাজার টাকা লোপাট হয়। এ ঘটনায় ওই শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা খালেদ হাসান ও আইটি কর্মকর্তা নাজির হোসেন সোহেলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় কোটি টাকা লোপাটের সঙ্গে নাজির হোসেন সোহেল এবং প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের সঙ্গে খালেদ হাসান জড়িত বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত ২৪ জুন থেকে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এ টাকা আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই সোহেল আত্মগোপন করেন আর খালেদ হোসেন পরে আবারও ব্যাংক হিসাব নম্বরে আত্মসাতকৃত টাকা জমা দেন। আত্মগোপন করে সোহেল ১৫ দিনের ছুটি চেয়ে একটি দরখাস্ত সোনালী ব্যাংক তানোর শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে দেন। তবে ওই ছুটি অনুমোদন না দিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ব্যাংকের সূত্র মতে, সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয় থেকে আসা অভ্যন্তরীণ তদন্ত দল তানোর শাখার অনিয়ম তদন্ত শেষে গত ১৭ জুন বিকেলে রাজশাহী ছাড়েন। এ তদন্তে প্রাথমকিভাবে সোহেলের বিরুদ্ধে কোটি টাকা এবং সিনিয়র কর্মকর্তা খালেদ হাসানের বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে প্রায় ৪২ লাখ টাকা সরানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। এই টাকা লোপাটের বিষয়টি আগেই জানাজানি হয়ে যাওয়ায় এবং এর সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই শাখার আগের ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলামকে বদলি করে পুঠিয়া শাখায় দায়িত্ব দেয়া হয়। এদিকে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করার পর বের হয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। ওই টাকা আত্মসাতের মূল নায়ক নাজির হোসেন সোহেল ছাড়াও ব্যাংকটির মহাব্যবস্থাপক, উপমহাব্যবস্থাপক, সিনিয়র অফিসারসহ তিনটি অডিট টিমের কর্মকর্তারাও জড়িত বলে সোহেল স্বীকারোক্তিতে বলেছেন। ব্যাংকের আইটি কর্মকর্তা সোহেল গ্রেফতার হওয়ার পর এসব তথ্য দিয়েছেন র‌্যাবের কাছে। সোহেল স্বীকার করেন, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ হিসাব থেকে লভ্যাংশের মোট এক কোটি ১৮ হাজার টাকা সরিয়েছেন। তবে এই টাকা সরানোর পরে বিষয়টি একই শাখার মহাব্যবস্থাপককে ১৫ লাখ, উপ-মহাব্যবস্থাপককে ১০ লাখ, তিনটি অডিট দলকে পাঁচ লাখ এবং ওই শাখার সিনিয়র অফিসার হাসান মোহাম্মদ খালিদুলকেও কয়েক লাখ টাকা দিয়েছেন। তানোর শাখায় একটি আলাদা হিসাব খুলে টাকাগুলো তিনি প্রথমে ট্রান্সফার করেন। এরপর সেগুলো পর্যায়ক্রমে তার স্ত্রী ও বাবার এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করেন।
×