ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ঈদ উৎসবে লিজার এ্যালবাম ‘পাগলী সুরাইয়া’

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৫ জুলাই ২০১৫

ঈদ উৎসবে লিজার এ্যালবাম ‘পাগলী সুরাইয়া’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ঈদ উৎসবের ছোঁয়ায় উদ্দীপ্ত দেশের সঙ্গীত ভুবন। গানপ্রেমীদের জন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ করেছে রকমারি ধাঁচের শতাধিক সঙ্গীত সঙ্কলন। আর এই সুরের স্রোতধারায় যুক্ত হলেন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ কণ্ঠশিল্পী লিজা। প্রকাশিত হলো ক্লোজআপ ওয়ানখ্যাত এই গায়িকার দ্বিতীয় একক সঙ্গীত সঙ্কলন। ঈদ আনন্দ সামনে রেখে প্রকাশিত এ্যালবামটির শিরোনাম পাগলী সুরাইয়া। বৈচিত্র্যময় সঙ্গীতায়োজনে সুরেলা কণ্ঠের এগারোটি গানে সাজানো সঙ্কলনটি প্রকাশ করেছে ডেডলাইন মিউজিক। মঙ্গলবার দুপুরে এ্যালবামটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ডেইলি স্টার ভবনের এ.এস মাহমুদ মিলনায়তনে। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মাহবুব পারভেজ। এছাড়া লিজাকে শুভেচ্ছা জানান কণ্ঠশিল্পী কণা, কোনাল ও পূজা। এ্যালবাম প্রকাশের অনুভূতি ব্যক্ত করে লিজা বলেন, অনেক দিন সময় নিয়ে এ্যালবামটির কাজ করেছি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন শ্রোতাদের কাছে এটি গ্রহণযোগ্য হয়। মিউজিশিয়ানরাও সঙ্কলনটির জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। ঈদে আসা শতাধিক এ্যালবামের মাঝে এটি কেন শ্রোতাদের আকৃষ্ট করবেÑএ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সঙ্কলটির বৈচিত্র্যময়তাই শ্রোতাকে মুগ্ধ করবে। গানের বাণীর পাশাপাশি রয়েছে কম্পোজিশনের ভিন্নতা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, লিজার এই নতুন এ্যালবামটির শুভ যাত্রা কামনা করছি। প্রত্যাশা করছি এটি শ্রোতাদের নির্মল বিনোদন দেবে। সেই সঙ্গে সঙ্গীত ভুবনে এই শিল্পী আরও সমৃদ্ধি কামনা করছি। কণ্ঠশিল্পীর ছাড়াও অনেক গুণের অধিকারী তরুণী লিজা। সে যেমন ভাল গান গায়, তেমনি ভাল উপস্থাপনাও করে। ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে।। ব্যাডমিন্টনে জাতীয় পর্যায়ে পদকও পেয়েছে। আবার ছাত্রী হিসেবেও সে মেধাবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে চালিয়ে যাচ্ছে পড়াশোনার পর্ব। তবে সঙ্গীতশিল্পীর পরিচয়টিই তাঁর প্রতিভার প্রধান স্থান। আশা করব, সে মানুষের গান গাইবে এবং মানবতার পক্ষে কাজ করবে। সঙ্গীতের মাহাত্ম্য উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী এ সময় দার্শনিক প্লেটোর উদ্ধৃতি উচ্চারণ করে বলেন, সঙ্গীত বিশ্বকে প্রাণ দেয়, মনের পাখা মেলে দেয় ও কল্পনাকে ভাসিয়ে দেয়। ভাষা যেখানে ব্যর্থ হয়, সুর আর বাণীর সংযোগে গান সেখানে সফল হয়। আর সহজাতভাবেই সঙ্গীতশিল্পীরা জঙ্গীবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। যারা এই অবস্থানের বাইরে থাকে দলীয় সঙ্কীর্ণতায় ভোগে। তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে সংস্কৃতিকর্মীরা সব সময়ই ভূমিকা রেখেছে। তাই সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করা উচিত রাজনৈতিক কর্মীদের। কিন্তু সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের প্রতি রাজনৈতিক কর্মীদের তেমন আগ্রহ দেখা যায়। তাই রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটাতে হবে সংস্কৃতিকর্মীদের। তাহলেই অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, লিজা একজন সহজাত শিল্পী। তাঁদের কণ্ঠের মাধুর্য সহজেই শ্রোতাকে আকৃষ্ট করে। একইভাবে এই শিল্পীর গায়কীও সাবলীল। তাঁর পরিবেশনার কৌশলেও রয়েছে নান্দনিকতা। আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে এই শিল্পী সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ। সমাজ ও রাষ্ট্রের ভাল-মন্দ তাঁকে তাড়িত করে। শিল্পী হিসেবে এখানেই সে স্বতন্ত্র। তিনি আরও বলেন, আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির অংশ হচ্ছে সঙ্গীত। সে কথারই প্রমাণ দেয় ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামকে উপজীব্য করে রচিত গান। তাই সঙ্গীতকে শুধু বিনোদন না ভেবে সমাজ বদলের লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এগারোটি গান দিয়ে সাজানো হয়েছে পাগলি সুরাইয়া এ্যালবামটি। কয়েকটি গানের শিরোনাম হলোÑ প্রাণ জুড়ে রেখেছি তোমায়, বারটি মাস, আকাশ জুড়ে, তুমি আসবে বলে, চাইনি এমন করে, মনের ঘরে, সুরাইয়া, আসমানী ও যাবি কত দূরে। ১১টি গানের মধ্যে দু’টি গানে লিজার সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে গেয়েছেন আসিফ আকবর ও আরফিন রুমি। সঙ্কলনটিতে গানের কথা লিখেছেন জাহিদ আকবর, জীবন, শফিক তুহিন, মেহফুজ, দীপ ও তুষার। সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন নকীব খান, আরফিন রুমি, ফুয়াদ নাসের বাবু, জুয়েল মোর্শেদ, মুশফিক লিটু, জে.কে, অমিত ও বেলাল খান। গ্লোব থিয়েটারের হ্যামলেট মঞ্চায়ন আজ ॥ আজ বুধবার ঢাকার মঞ্চনাটকের দর্শকের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এক দিন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হব বিশ্ববরেণ্য নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের অমর সৃষ্টি হ্যামলেট। আর নাটকটি পরিবেশন করবে শেক্সপিয়ারের গড়া বিশ্বখ্যাত নাট্যদল লন্ডনের গ্লোব থিয়েটার। মঙ্গলবার রাতেই ১৬ সদস্যের দলটি ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। তবে স্বল্পসংখ্যক ভাগ্যবান পাবেন নাটকটি দেখার সুযোগটি পাবেন। কারণ, ৭০০ দর্শকের আসনবিশিষ্ট মঞ্চের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক টিকেট ছাড়া হয় অনলাইনে। গত ২৯ জুন অনলাইনে টিকেট ছাড়ার পর ওই দিনই সকল টিকেট বিক্রি হয়ে যায় বলে জানায় আয়োজক ঢাকা থিয়েটারের কর্মী ওয়াসিম আহমেদ। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এলো গ্লোব থিয়েটার। শেক্সপিয়ারের ৪৫০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে হ্যামলেট নাটকটি নিয়ে বিশ্বভ্রমণ করছে গ্লোব থিয়েটার। পৃথিবীর ২০০টি দেশে প্রযোজনাটি মঞ্চায়নের পরিকল্পনা রয়েছে ব্রিটেনের বিখ্যাত এই নাট্যদলটির। তারই অংশ হিসেবে ভিয়েতনাম সফর শেষে ঢাকা থিয়েটারের আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছে গ্লোব থিয়েটার। ঢাকার সৌভাগ্যবান দর্শকদের জন্য ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরা দেবে গ্লোব থিয়েটার পরিবেশিত হ্যামলেট নাটকটি । এদেশের মঞ্চনাটকের জন্যও এটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে। আড়াই ঘণ্টার প্রযোজনাটিতে দলটির অভিনয়, মঞ্চসজ্জা, আলোকসমাপ্ত থেকে শুরু সবকিছুই বিচিত্র স্বাদ দেবে দর্শকদের। এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ব্রিটিশ কাউন্সিল। গ্লোব থিয়েটারের হ্যামলেট নাটকের নির্দেশনায় রয়েছেন ডমিনিক ড্রমগুল ও বিল বাকহার্স্ট। প্রযোজনাটিতে হ্যামলেট চরিত্রে রূপ দেবেন নাঈম হায়াত অথবা লাডি এমেরুয়া । আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এ্যাফেলিয়ার ভূমিকায় অভিনয় করবেন ফোবি ফিল্ডস। এছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন কিথ বার্টলেট, মিরান্ডা ফস্টার, বেরুস খান, জেনিফার লিয়ং, টম লরেন্স, আমান্ডা উইলকিন প্রমুখ।
×