ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ছিটমহলে জনগণনা

ভারতে যাওয়ার নিবন্ধন বাতিল দাবি দুই হিন্দু পরিবারের

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৫ জুলাই ২০১৫

ভারতে যাওয়ার নিবন্ধন বাতিল দাবি দুই হিন্দু পরিবারের

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ওপারে (ভারত) যাওয়ার জন্য জনগণনায় নিবন্ধন করে এখন আফসোস করছেন নীলফামারীর ডিমলার অভ্যন্তরে থাকা ৩১ নম্বর নগর জিগাবাড়ি ছিটমহলের দুই হিন্দু পরিবারের নয় সদস্য। মঙ্গলবার এ দুই পরিবার জরিপকারীদের কাছে ছুটে গিয়ে ওপারে যাওয়ার নিবন্ধন বাতিল করে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য নতুন করে নিবন্ধনের দাবি জানায়। ভারতে যাওয়ার নিবন্ধন বাতিল করা না হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন তারা। এদিকে পঞ্চগড়ের ছিটমহলে প্রথমবারের মতো ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। নীলফামারীর ডিমলার ছিটমহল জনগণনাকারীদের সূত্রে জানা যায়, ওই ছিটমহলের মৃত অতুল চন্দ্র রায়ের তিন ছেলের মধ্যে ভরত চন্দ্র রায় (৪৭), তার স্ত্রী গীতা রানী ও তিন ছেলে সুশান্ত (১৪) জয়ন্ত (১২) ও শুভ (৬) গত ১১ জুলাই এবং সনাতন চন্দ্র রায় (৩৪), স্ত্রী মিনতী রানী, দুই কন্যা সুবর্ণা (১২) ও বন্যা ১৩ জুলাই ভারতের নাগরিকত্বের জন্য নিবন্ধন করেন। অপরদিকে এ দুইজনের বড় ভাই রঞ্জিত কুমার রায় (৫০), স্ত্রী জয়ন্তী রানী এবং ছেলে প্রশান্ত চন্দ্র রায় মঙ্গলবার বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য নিবন্ধন করেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই দুই পরিবার তাদের ভারতে যাওয়ার নিবন্ধন বাতিল করে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য জনগণনাকারীদের কাছে ছুটে যান। বিষয়টি নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন এবং ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের নজরে আনা হয়। ভরত চন্দ্র সাংবাদিকদের জানান, তিনি কলা বিক্রি করে সংসার চালান। কিছু না বুঝেই হুট করে পরিবারসহ ভারতের যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করি। এখন সেই হটকারী সিদ্ধান্তটির ভুল বুঝতে পেরে এটি বাতিলের জন্য আবেদন করেছি। তিনি বলেন, স্ত্রী ও সন্তানরা কেউ ওপারে যেতে রাজি নয়। তারা কান্নাকাটি করছে এবং বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে বলে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টির সমাধান করা হবে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ১৬২ ছিটমহলের যৌথ জনগণনা গত ৬ জুলাই থেকে শুরু হয়। চলবে আগামীকাল ১৬ জুলাই পর্যন্ত। পঞ্চগড় ॥ পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ছিটমহলের দরিদ্র পরিবারগুলোকেও সরকারী খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তবে ছিটমহলের কত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ছিটমহল বিনিময় না হওয়ায় উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে মানবিক সহায়তা হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে কিছু কার্ড কম দিয়ে ছিটমহলের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের বরাদ্দ বাড়িয়ে সেই বরাদ্দ থেকে তাদের চাল দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। জেলা সদর, বোদা ও দেবীগঞ্জে ৩৬ ছিটমহল রয়েছে। এ কারণে এই তিন উপজেলায় অন্য দুই উপজেলার চেয়ে কার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে তালিকা করে চাল বিতরণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে চাল বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবে বলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে। জেলা সদরের গারাতি ছিটমহলের নাগরিক কমিটির চেয়ারম্যান মফিজার রহমান বলেন, এ ছিটমহলে ৫৭৫ পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ শ’ পরিবারই দরিদ্র। এদের তালিকা উপজেলা পরিষদে জমা দেয়া হয়েছে। এরা সবাই খাদ্য সহায়তার চাল পাবেন বলে আশা করছি। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়নে ৫০টি করে কার্ড কম দিয়ে এসব কার্ডের আওতায় ছিটমহলবাসীদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। ৩১ জুলাই ছিটমহল বিনিময় হওয়ার পর থেকে তাদের সহায়তা করতে আর কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না বলে তিনি জানান।
×