ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইউরোতে রয়ে গেল গ্রীস

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৪ জুলাই ২০১৫

ইউরোতে রয়ে গেল গ্রীস

গ্রীস রবিবার রাতভর দীর্ঘ আলোচনার পর সোমবার ইউরোজোনের সঙ্গে এক জরুরী বেইল আউট চুক্তিতে পৌঁছেছে। এ ঐতিহাসিক চুক্তির ফলে দেশটি ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরো থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেল। খবর বিবিসি এএফপি ও গার্ডিয়ানের। দেশটির বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপরাস ১৭ ঘণ্টার উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনার পর কঠোর সংস্কার সাধনে সম্মত হন। এর বিনিময়ে গ্রীস ৮,৬০০ কোটি ইউরোর এক তিন বছর মেয়াদী বেইল আউট পাবে। এটি হবে পাঁচ বছরের মধ্যে গ্রীসের তৃতীয় আর্থিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচী। ইইউ প্রেডিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক টুইটারে ঋণগ্রস্ত গ্রীসের জন্য ওই চুক্তি হওয়ার ঘোষণা দেন। এর ফলে সিপরাসের কৃচ্ছনীতি বিরোধী সরকার এবং ইউরোজোনের অবশিষ্টাংশের মধ্যে ছয় মাসের তিক্ত বিরোধের অবসান হলো। টাস্ক বলেন, ইউরোজোন নেতারা বেইল আউট নিয়ে আলোচনা করতে ‘নীতিগতভাবে’ সম্মত হয়েছেন। এর অর্থ হলো গ্রীসের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে। সিপরাস বলেন, যে এক কঠোর সংগ্রামের পর গ্রীস ৩,৫০০ কোটি ইউরোর ‘প্রবৃদ্ধি প্যাকেজ’ নিশ্চিত এবং ঋণের পুনঃতফসিলীকরণ আদায় করেছে। গ্রীসকে ইউরোজোনের দাবি মতো বুধবারের মধ্যে সংস্কার কর্মসূচী পার্লামেন্টে পাস করতে হবে। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রধান জ্যাঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, কোন গ্রেক্সিট ঘটবে না। তিনি এ আশঙ্কার প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন যে, যদি কোন চুক্তি না হয় তা হলে গ্রীসকে ইউরোজোন ত্যাগ করতে হবে। সিপরাস বলেন, চুক্তিটি কঠিন কিন্তু আমরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা এড়াতে পেরেছি। রুদ্ধ করা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার পতন ঘটানোর পরিকল্পনা নিবৃত করেছি। ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীদের সমিতি ইউরো গ্রুপ প্রধান জেরোয়েন ভিজসেল ব্লোয়েম বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ৫০০০ কোটি ইউরোর এক গ্রীসভিত্তিক তহবিল গঠন করা হবে এবং এ তহবিলের সাহায্যে গ্রীসের সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণ বা পরিচালনা করা হবে। ৫০০০ কোটি ইউরোর মধ্যে ২,৫০০ কোটি ইউরো গ্রীক ব্যাংকগুলোতে নতুন করে পুঁজি যোগানোতে কাজে লাগাতে হবে। গ্রীক ব্যাংকগুলো দু’সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। এটিএমে অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ দৈনিক ৬০ ইউরোতে সীমিত করা হয়েছে। অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। এর আগে ব্রাসেলসে রবিবার রাতের ওই আলোচনায় ইউরোপীয় নেতারা বেইল আউটের বিনিময়ে একগুচ্ছ কঠোর কৃচ্ছ্রমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিশ্চয়তা দিতে গ্রীক সরকারের প্রতি দাবি জানান। ইউরোজোন নেতাদের ওই শীর্ষ বৈঠকে চরম উত্তেজনায় ইউরোপ বিভক্ত হয়ে পড়ার উপক্রম হয়। সেখানে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ সিপরাসের কাছে এক চরম পত্র পেশ করেন। চরমপত্রটি নিয়ে ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বির্তক হয়। এতে গ্রীসের আর্থিক পতন এবং একক মুদ্রা ইউরো থেকে বহিষ্কৃত হওয়া এড়ানোর মূল্য হিসেবে কয়েকটি কঠোর ব্যবস্থা নিতে একে চাপ দেয়া হয়। রবিবার রাতে সিপরাসের কাছে পেশ করা শর্তগুলোর আওতায় গ্রীক পার্লামেন্টকে কৃচ্ছ্রমূলক ব্যবস্থাগুলোর দাবি করা সবই সোমবার অনুমোদন করতে হবে। এরপর পার্লামেন্টকে বুধবারের মধ্যে পেনসন সংস্কার ও এক নতুন ভ্যাট ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাদা আলাদ আইন তৈরি করতে হবে। এরপরই এক নতুন তিন বছর মেয়াদী আর্থিক পুনরুদ্ধার প্রস্তাব নিয়ে কথা বলতে ইউরোজোন সম্মত হবে। এসব শর্ত গত পাঁচ বছর ধরে ঋণদাতাদের আরোপিত শর্তাদির চেয়ে অনেক বেশি কঠোর। ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি আকস্মিক গণভোটে ঋণদাতাদের শর্তাদির প্রতি না জবাবেরই পাল্টা ব্যবস্থা। সিপরাস এক সপ্তাহ আগে ওই গণভোট ডেকে ছিলেন।
×