ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরিতোষ বাড়ৈর ‘নরক নন্দনী’ নিয়ে চলচ্চিত্র

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৪ জুলাই ২০১৫

পরিতোষ বাড়ৈর ‘নরক নন্দনী’ নিয়ে চলচ্চিত্র

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ পরিতোষ বাড়ৈর ‘নরক নন্দনী’ উপন্যাস অবলম্বনে এবার চলচ্চিত্র নির্মিত হতে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে পরিতোষ বাড়ৈ জানান, চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রাথমিক আলোচনা এবং প্রস্তুতি প্রায় শেষ। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বাদবাকি চলচ্চিত্রের নাম এবং পাত্র-পাত্রীর বিষয় চূড়ান্ত হবে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হলেও লেখক, গীতিকার হিসেবে বেশ সুনাম আছে তার। ‘ভালবাসার নিমন্ত্রণ’ শিরোনামে তার একটা অডিও সিডি প্রকাশিত হয়। সুবীর নন্দী, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মুহীন ও পলাশসহ আরও অনেক সঙ্গীত শিল্পী তার কথায় গান করেছেন। পরিতোষ বাড়ৈর পাঠক প্রিয় উপন্যাসগুলো হলো ‘মায়ের চিঠি’, ‘নরক নন্দনী’, ‘অগ্নি নারী’, ‘আগুন পানির বধূয়া’, ‘হারিয়ে যাওয়া কানের দুল’। কিশোর পাঠক প্রিয় উপন্যাস ‘ভূত বনাম শয়তান’ ও ‘ক্যাপ্টেন রবিন’। প্রতিবছর একুশে বই মেলায় তার বই প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত ৩৭টি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।সাংস্কৃতিক কর্মীদের ঈদ ভাবনা আলী যাকের : আমাদের কিশোর বয়সে ঈদের আনন্দে এত বেশি প্রাচুর্য ছিল না। বাবা-মায়ের কাছ থেকে নতুন জামা-কাপড়ই ছিল যথেষ্ট। আমি বড় হয়েছি ঢাকার গে-ারিয়ায়। পাড়ার প্রতিটি বাড়িই ছিল যেন আমাদের আনন্দ প্রকাশের নিজস্ব জায়গা। তখন ধুপখোলা মাঠে গিয়ে গ্রাম থেকে আসা বিভিন্ন জিনিস কিনে বাড়ি ফিরে বাবা-মাকে সালাম করাই ছিল অন্য রকম এক আনন্দ। ঈদের আনন্দ উপভোগটা ছিল আন্তরিক। যেটা এখন হয়ে গেছে অনেকটা টেকনিক্যাল। আমার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণ বাড়িয়া। ঈদের পর দিন সেখানে যেতাম। সেখানে সবাই মিলে ঈদের আনন্দ করতাম। এখনকার তরুণদের মধ্যে এটা তেমন দেখি না। লায়লা হাসান : ঈদের আনন্দের বিকল্প নেই। ছোটবেলায় ঈদকে ঘিরে ছিল অন্যরকম এক উত্তেজনা। নতুন জামা-কাপড় পরব, শ্রদ্ধাভাজনদের সালাম করব এটা ছিল ধরাবাধা। আব্বা সাইকেলে করে মেলাতে নিয়ে যেতেন। সেখানে নতুন চুড়ি কেনা ছিল আমার সখ। একবার চুড়ি পরতে গিয়ে ভেঙে গেল। সেবার মন খুব খারাপ হয়েছিল। আমার হাতে এখনও সেই দাগ আছে। সব কিছুর মধ্যে যে আনন্দ অনুভব হতো, এখন আর সেই আনন্দ দেখতে পাই না। যখন বিয়ে হয়ে গেল, তখনের আনন্দ ছিল আর এক রকম। নতুন বউয়ের রান্না কেমন হলো এ নিয়ে চলত আলোচনা। সব মিলিয়ে আনন্দ প্রকাশের ভাবটা ছিল আন্তরিক। এখনের আনন্দ হয়ে গেছে রুটিনমাফিক। ড. ইনামুল হক : যুগ পাল্টাচ্ছে, মানুষের রুচিবোধেরও পরিবর্তন আসছে, সঙ্গে সঙ্গে আনন্দের বহির্প্রকাশও ঘটছে ভিন্ন ভিন্নভাবে। আমাদের ছোট বেলায় ঈদের আনন্দ আসত ভেতর থেকে। আমরা নতুন জামা ও নতুন জায়গায় যেতে পারলে খুশি। আমি যেহেতু যৌথ পরিবারের ছেলে ছিলাম। সববাই একসঙ্গে আনন্দ করতাম। এখন আর এগুলো তেমন নেই। পুরো সময় কাটে কর্মের মধ্যে। তারপরও আমার সংগঠনের ছেলে-মেয়েরা ঈদের দিনে আসে। টেলিভিশনে নাটক দেখি। আগের ঈদের আনন্দে যে আবেগ ছিল এখন আর সেটা নেই। এখনকার ঈদের আনন্দ হয়ে গেছে বিজ্ঞানভিত্তিক। এখন আবেগ কমে গেছে। সবাইকে মোবাইল করে ঈদের শুভেচ্ছা জানাই, অনেকে আমাকেও মোবাইলে ঈদের শুভেচ্ছা জানায়। ফেরদৌসী মজুমদার : বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আনন্দ-অনুভূতিও বদলায়। আমরা ১৪ জন ভাই-বোন ছিলাম। বাড়িয়ে সব সময় হৈ চৈ হতো। ঈদের সময় তো কথাই নেই, সবার মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করত। আমার বাবা খুব রাগী ছিলেন। সব সময় নিয়ম মেনে চলতেন। বাইরে গোছল না করে বেরুতে দিতেন না। আমাদের বাড়ি ছিল নোয়াখালী। একবার আমার এক ভাই এক জোড়া নতুন জুতা কিনেছিল। সে জুতা পরেই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল, কারণ নতুন জুতা সে পা থেকে খুলবে না। মোটামুটি আনন্দের প্রকাশটা ছিল অন্যরকম। এখন সেটা আর নেই। যথার্থ কারণেই নেই। রাজনৈতিক, সামাজিক সর্বোপরি মানুষের অসচেতনতাই মানুষের রুচিবোধ ও আনন্দ-অনুভূতিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। নির্মল ভালবাসা এখন আর হয় না। আগে থিয়েটারের ছেলে-মেয়েরা আসত ঈদের দিনে, এখন আর কেউ আসে না। তারা হয়ত আসতে পারে না। অনেক গরিব মানুষও আসত এখন আর আসে না।
×