ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে ২৪ বছরে সাত দফা টেন্ডার

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে লাখো মুসল্লি

প্রকাশিত: ০৫:২০, ১৩ জুলাই ২০১৫

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে  লাখো মুসল্লি

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ ॥ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন নরসুন্দা নদীর ওপর সেতু না থাকায় প্রতি বছর দুই ঈদে লাখো মুসল্লি ও এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রায় ২৪ বছর ধরে জনগুরুত্বপূর্ণ এ স্থানটিতে পাকা সেতু নির্মাণের চেষ্টা চললেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের বাধার মুখে বার বার তা ভেস্তে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সাত দফা দরপত্র আহ্বান করেও বাধার মুখে সেতুটি আর নির্মাণ হয়নি। সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধের প্রতিবাদে এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন, স্মারকলিপি পেশ এমনকি সড়ক অবরোধ করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে। এতেও কোন কাজ হয়নি। সরেজমিন দেখা গেছে, সেতু তৈরির নির্ধারিত স্থানে নদীর দুই পাড়ের সড়কের রাস্তা প্রায় পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। নদীর দুই পাড়ের জমি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও সমর্থকরা দখল করে নিয়েছে, যার ফলে সেতুটির নির্মাণকাজ দুই যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রতি বছর কিশোরগঞ্জ সদরসহ করিমগঞ্জ-নিকলি-তাড়াইল উপজেলা ও হাওড়াঞ্চলের লাখো মুসল্লি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সেতুর উপর দিয়ে দুই ঈদের নামাজ পড়তে আসে। বছরে দুই ঈদ ছাড়াও সারাবছর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের ভাঙ্গা সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। এতে তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শোলাকিয়া মাঠসহ বয়লা-তারাপাশার সঙ্গে শহরের দুই অংশের মানুষের সহজ যোগাযোগ ও যানজট নিরসনের জন্য সেতু নির্মাণের প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব এলজিইডির। ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের জন্য গত ২০১১ সালের ১৬ আগস্ট এলজিইডি দরপত্র আহ্বান করে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে শাহীল এন্টারপ্রাইজ এক কোটি ৮৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৮ টাকায় সেতু নির্মাণের কাজটি পায়। চুক্তি সম্পাদনের পর ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রী নিয়ে একাধিকবার সেতু নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে গেলেও প্রভাবশালীদের বাধার মুখে কাজ করতে পারেনি। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মওলা বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন জেলা পরিষদের কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে। ওই দফতরের মাধ্যমে সেতুটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা হবে তিনি জানান। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রশাসক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। অনুমোদিত হলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে দ্রুত সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।’
×