ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মিউচুয়াল ফান্ড রূপান্তর গাইডলাইন সংশোধন

বে-মেয়াদী ফান্ডও তালিকাভুক্ত হতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১৩ জুলাই ২০১৫

বে-মেয়াদী ফান্ডও তালিকাভুক্ত হতে পারে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বর্তমানে বে-মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ড স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয়। কারণ বিদ্যমান আইনে বে-মেয়াদী ফান্ডের তালিকাভুক্তির কোন সুযোগ নেই। তবে ভবিষ্যতে বে-মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তি হতে পারবে। বে-মেয়াদী ফান্ডের তালিকাভুক্তির এমন সুযোগ রেখে মিউচুয়াল ফান্ড রূপান্তরের গাইডলাইন সংশোধন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত ৮ জুলাই পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। গত ২৯ জুন কমিশন সভায় রূপান্তরের গাইডলাইন অনুমোদিত হয়েছিল। ভবিষ্যতে বে-মেয়াদী ফান্ডের তালিকাভুক্তির বিষয়ে কমিশন যদি কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সে আলোকে এ ধরনের ফান্ড তালিকাভুক্ত হতে পারবে। এ বিষয়ে বিএসইসির এক কর্মকর্তা বলেন, বে-মেয়াদী ফান্ডকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা হলে সেক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় তালিকাভুক্ত শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড বা অন্য কোন সিকিউরিটিজের ন্যায় হবে না। এক্ষেত্রে ক্রেতা সাধারণ বিনিয়োগকারী হলে বিক্রেতা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার হবে। আবার বিক্রেতা বিনিয়োগকারী হলে ক্রেতা হবে অবশ্যই ফান্ড ম্যানেজার। তিনি আরও জানান, অন্যান্য শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যায় বে-মেয়াদী ফান্ডের ইউনিট ক্রয় বা বিক্রয়মূল্য বাজার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বে-মেয়াদী ফান্ডের সর্বশেষ প্রকাশিত সম্পদমূল্যের (এনএভি) ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে। সম্পদ ব্যবস্থাপক চাইলে এনএভির ওপর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বেশি বা কম দরে ইউনিট ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারবে। বর্তমানে বে-মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানির প্রধান ও শাখা কার্যালয়ে কেনাবেচা হয়। এ ছাড়া কিছু সম্পদ ব্যবস্থাপক কিছু ব্যাংক শাখার মাধ্যমেও ফান্ড ইউনিট কেনাবেচা করে থাকে। এ জন্য কাগুজে ইউনিট সার্টিফিকেট লেনদেন হয়। তবে সংশোধিত গাইডলাইনে বলা হয়েছে, বে-মেয়াদীতে রূপান্তরের ক্ষেত্রে ফান্ডগুলো অবশ্যই ডিমেট (ইলেক্ট্রনিক সিকিউরিটিজ) হতে হবে। প্রস্তাবিত মিউচুয়াল ফান্ড রূপান্তর গাইডলাইনে বলা হয়েছে, মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডকে বে-মেয়াদীতে রূপান্তর করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ফান্ডের মেয়াদপূর্তির অন্তত ১৫০ দিন আগে রূপান্তর সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ সময় স্টক এক্সচেঞ্জে সংশ্লিষ্ট ফান্ডের লেনদেন স্থগিতের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। লেনদেন স্থগিতের পরদিন ফান্ডের যাবতীয় সম্পদ ও এর দায়ের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে ট্রাস্টির কাছে। পরবর্তীতে ট্রাস্টি নিরীক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং ইউনিট হোল্ডারদের সভায় এর অনুমোদন নেবে। এ ছাড়া ইউনিট হোল্ডারদের সভার পাঁচ দিন আগে স্কিমের পোর্টফোলিও (বাজারমূল্য ও খরচমূল্য হিসেবে এনএভি), তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানিতে বিনিয়োগ, এফডিআরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের তথ্যসংবলিত পোর্টফোলিও, রূপান্তর অথবা অবসায়নের খরচ, পূর্ববর্তী বছরের আর্থিক অবস্থা, লভ্যাংশ প্রদানের ইতিহাস, রূপান্তরের প্রক্রিয়া, প্রস্তাবিত ইউনিট ফান্ডের বৈশিষ্ট্যসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কমিশনে দাখিল করতে হবে। পরবর্তীতে যদি বে-মেয়াদী ফান্ডে রূপান্তরে ইউনিট হোল্ডারদের সম্মতি পাওয়া যায়, তবে ওই সভার খরচ ও ট্রাস্টি নতুন নির্বাচিত সম্পদ ব্যবস্থাপকের ওপর বর্তাবে। আর যদি রূপান্তরে সম্মতি না পাওয়া যায় তাহলে সে খরচ বিদ্যমান সম্পদ ব্যবস্থাপককে বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্রাস্টি একটি ফান্ডের রূপান্তরে ৬ লাখ টাকার বেশি ফি নিতে পারবে না। আর সম্পদ ব্যবস্থাপক রূপান্তর প্রক্রিয়া বাবদ মোট ফান্ডের শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশের বেশি নিতে পারবে না। বিদ্যমান মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালায় মেয়াদী ও বে-মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যূনতম আকার নির্ধারণ করা থাকলেও মেয়াদী থেকে বে-মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডের রূপান্তরের ক্ষেত্রে এর আকারের কোন বাধ্যবাধকতা না রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
×