ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর

বগুড়ায় কাজ না হতেই দুই কোটি টাকার বিল পাস!

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১২ জুলাই ২০১৫

বগুড়ায় কাজ না হতেই দুই কোটি টাকার বিল পাস!

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বগুড়া জোনের (বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ) ২৩টি কলেজের একই ধরনের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু না হতেই প্রায় দুই কোটি টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে। এই ২৩টি কলেজের নির্মাণ কাজের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩১ কোটি টাকারও বেশি। সরকারী টেন্ডার নির্দেশে বলা আছে কাজ শুরু হওয়ার দেড় বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে। খোঁজখবর করে দেখা গেছে অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী বগুড়ার ৪টি কলেজে ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেই কথিত কাজ দেখিয়ে আংশিক বিল পাস করে দিয়েছেন। এভাবে ১৯টি কলেজের উন্নয়নের ঠিকাদার ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিজনের নামে ৭ লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিল পাস করে সরকারী চেক উত্তোলন করার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন। যা গেল ৩০ জুনের আগে বিল হয়ে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই বিতরণ করা হয়েছে। এই বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের বগুড়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গির আলমের সঙ্গে কথা বললে জানান, ১৯টি নয় ৬টি কলেজের কাজ শুরু হওয়ায় ঠিকাদারদের ১২ লাখ টাকা করে বিল প্রদান করা হয়েছে। জুন ক্লোজিংকে সামনে রেখে নিয়মের কিছুটা ব্যত্যয় ঘটিয়ে উন্নয়নের স্বার্থেই এই বিল দেয়া হয়েছে। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের ২৩টি কলেজের একই ধরনের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩১ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয় মে মাসের ১৯ তারিখে। প্রতিটি কাজের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে। ২ জুন টেন্ডার দাখিলের শেষ সময়। একই দিন টেন্ডার উন্মোচন করার কথা। সরকারী কাজগুলোর নিয়ম ভেঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী ঢাকা থেকে নক্সা পাস করে এনে ১৯ জুন কাজের অনুমতি দিয়েই ৩০ জুনের মধ্যে আংশিক বিল পাস করে দেন। সরকারী কাজের শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে প্রবাদের মতো মাঠে কাজ নেই অথচ কাজ হয়েছে বলে বিল পাস করে একেবারে চেক প্রদানও হয়ে গেছে। এই অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নির্বাহী প্রকৌশলী সাফ জানিয়ে দেন, কোন অনিয়ম হয়নি। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মাত্র ৬টি বিল পাস করা হয়েছে। এই ৬টি বিল পাস করে চেক প্রদান করা অনিয়ম কি না এই বিষয়টিতে তিনি নিজেকে ডিফেন্ড করেন এভাবে- অনেক ঠিকাদারের প্রচুর পাওনা আছে। তাদের দিকে তাকিয়ে কিছুটা অনিয়ম হলেও চেক দেয়া হয়েছে, এই না হলে ঠিকাদার ইঞ্জিনিয়ার মধুর সম্পর্ক। কয়েক সূত্র জানায় কাজ না করেই যে ১৯ জনকে বিল প্রদান করা হয়েছে তার বিনিময়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বড় অঙ্কের অর্থ ‘উপহার’ দিয়েছেন ঠিকাদাররা। এদিকে বগুড়া সদর, শিবগঞ্জ, কাহালু সুখানপুকুর গাবতলির সোনারায় কলেজে গিয়ে দেখা যায় সেখানে কোথাও নামমাত্র ইট বালি ফেলা হয়েছে, কোথাও কাজই শুরু হয়নি। সুখানপুকুর সৈয়দ আহমেদ কলেজে গিয়ে দেখা যায় নির্বাহী প্রকৌশলী ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেই চলে এসেছেন। কাজ শুরু হয়নি। অথচ কাজের বিল পাস হয়েছে। উন্নয়ন কাজের অর্থ এভাবেই অপচয় হয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-কে বিঘিœত করা হচ্ছে।
×