ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ জামাতের পূর্ণ প্রস্তুতি, পাড়া মহল্লায় তৈরি হচ্ছে শুভেচ্ছা তোরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১২ জুলাই ২০১৫

ঈদ জামাতের পূর্ণ প্রস্তুতি, পাড়া মহল্লায় তৈরি হচ্ছে শুভেচ্ছা তোরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেষ হয়ে আসছে মাহে রমজান। দ্বারে সমাগত ঈদ। তাই দেশজুড়ে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। ঈদ কেনাকাটাও শেষের পথে। এরপরই শুরু হবে ঘরে ফেরার পালা। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ঈদ জামাতের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। দেশের প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। জাতীয় ঈদগাহের পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ-উল-ফিতর। আর কয়েকদিন পরই পালিত হবে ঈদ-উল-ফিতর। প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে ঈদ করতে রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষই ঢাকা ছেড়ে যাবে। ইতোমধ্যে বাসের অগ্রিম টিকেট দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগমী ১৪ জুলাই থেকে শুরু হবে ঈদ যাত্রা। ঈদের প্রস্তুতি নিতে ইতোমধ্যে অনেকেই সাধ্যমতো কেনাকাটা সম্পন্নও করছেন। এখন অপেক্ষা শুধু ঘরে ফেরার পালা। ইতোমধ্যে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। যাদের অফিস আদালত নেই এমন অনেকেই ঢাকা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন গ্রামের পথে। ঈদ-উল-ফিতর সামনে রেখে ইতোমধ্যে রাজধানীতেও ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। পাড়া মহল্লায় ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে তৈরি করা হচ্ছে তোরণ। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার টানাতেও দেখা গেছে। এদিকে রাজধানীতে চলছে ঈদ জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এবার প্রতিটি ওয়ার্ডে চারটি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ঈদ জামাত আয়োজনের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ঈদগাহ ময়দান ছাড়াও রাজধনীর প্রতিটি মহল্লার মসজিদগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে দেশের প্রধান ঈদ জামাত। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ বিভিন্ন ঈদগাহ ময়দানে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সরেজমিনে জতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে। বাঁশের তৈরি অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর ওপরে টাঙানো হবে বৃষ্টি নিরোধক ত্রিপল। নিরাপত্তার জন্য ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন প্রতি বছর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতের আয়োজন করে থাকে। রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ঈদগাহ মাঠের পরিচর্যা ও বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রতিবারের মতো এবারও পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনায় নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদ সদস্য, উর্ধতন সরকারী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকরাও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতে শরিক হবেন। এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে প্রতিবারের ন্যায় এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও জাতীয় সংসদ প্লাজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদেও ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ঈদ-উল-ফিতর উৎসব পালন করা হয়। শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৮ কিংবা ১৯ জুলাই ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হবে। ইসলামী বিধান অনুসারে ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে মুসলমানদের জন্য ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। এটি এক ধরনের সাদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে রোজার ভুলত্রুটি দূর করার জন্যে আদায় করা হয় ফিতরা। ইতোমধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফিতরার পরিমাণও নির্ধারণ করা হয়েছে। ফিতরা আদায়যোগ্য যে কেউ এবার সর্বনিম্ন ৬০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৫০শ’ টাকা পর্যন্ত ফিতরা আদায় করতে পারবে। নিয়মানুযায়ী ঈদের নামাজের পূর্বেই ফিতরা আদায় করতে হয়। তবে ভুলক্রমে ঈদের নামাজ পড়া হয়ে গেলেও ফিতরা আদায় করা যায়।
×