ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মিরপুরে রাবাদার গতিঝড়, প্রথম পেসার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের বিরল কৃতিত্ব- ৮/১৬/৬ ;###;তামিম , লিটন দাস , মাহমুদুল্লাহ , সৌম্য ২৭, মাশরাফি ৪ ও জুবায়েরকে ৫ রানে সাজঘরে পাঠান

অভিষেকেই হ্যাটট্রিক-বিশ্বরেকর্ড রাবাদার

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১১ জুলাই ২০১৫

অভিষেকেই হ্যাটট্রিক-বিশ্বরেকর্ড রাবাদার

মিরপুরে রাবাদার গতিঝড়, প্রথম পেসার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের বিরল কৃতিত্বÑ ৮/১৬/৬ ্র তামিম ০, লিটন দাস ০, মাহমুদুল্লাহ ০, সৌম্য ২৭, মাশরাফি ৪ ও জুবায়েরকে ৫ রানে সাজঘরে পাঠান মোঃ মামুন রশীদ ॥ তৃপ্তির হাসি চওড়া হতেই পারে চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্টের ঠোঁটে। দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বপ্রথম হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন ৪০ বছর বয়সী এ মিডিয়াম পেসার। এখন তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের বোলিং কোচ। আর বোলিং কোচ হিসেবে দলের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতেই নিজের শিষ্যকে দেখলেন একই কৃতিত্ব দেখাতে। তাঁর অর্ধেক বয়সী তরুণ ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে ধসিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে। ৮ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে অভিষেকেই বিশ্ব রেকর্ড গড়েন তিনি। তামিম ইকবাল ০, লিটন দাস ০, মাহমুদুল্লাহ ০, সৌম্য সরকার ২৭, অধিনায়ক মাশরাফি ৪ ও জুবায়ের ৫ রানে সাজঘরে ফেরেন লজ্জার আউট হয়ে। ইনিংসের শুরুতেই তিনি ওয়ানডে ইতিহাসের ৩৪তম বোলার হিসেবে ৩৯তম এ হ্যাটট্রিকের গৌরব অর্জন করেন। শুক্রবার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়ায় টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে ফেলেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রাবাদা। তিনি ইনিংসের চতুর্থ ওভারে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে যথাক্রমে তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে আউট করে বিশ্বের প্রথম পেসার হিসেবে অভিষেক ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব দেখালেন। দু’দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছিল। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ নামতে পারবে কিনা, সেটা নিয়েও সংশয় ছিল শুক্রবার ম্যাচের দিন সকাল থেকেই বৃষ্টি অব্যাহত থাকায়। অবশেষে বৃষ্টি থামল, বলও মাঠে গড়ালো। কিন্তু বৃষ্টির পরে যে ঝড় আসে সেটা স্তব্ধ করে দিল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের সিক্ত আবহাওয়ায় উপস্থিত বাংলাদেশী ক্রিকেটপ্রেমীদের। কারণ বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ওপর টর্নেডো বইয়ে দিলেন তরুণ ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা। মাত্র ২০ বছর বয়সী এ তরুণ পেসার হ্যাটট্রিক করে ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ইনিংস। অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করার বিরল এ কৃতিত্ব ওয়ানডে ইতিহাসে আর কোন পেসার করে দেখাতে পারেননি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে তামিম ইকবালকে সরাসরি বোল্ড, পঞ্চম বলে লিটন দাসকে বেহারডিয়েনের হাতে ক্যাচ ও ষষ্ঠ বলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এলবিডব্লিউ করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রাবাদা। অবশ্য সার্বিকভাবে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করার ঘটনা এটি মাত্র দ্বিতীয় নজির। বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম গত বছরের ১ ডিসেম্বর জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ঢাকায় অভিষেক ওয়ানডে খেলতে নেমেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন। সেটাই ছিল ওয়ানডে ইতিহাসের অভিষেকেই প্রথম হ্যাটট্রিকের ঘটনা। আট মাসের মধ্যেই তাঁর বিশ্বরেকর্ডে ভাগ বসালেন রাবাদা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এর আগে দুটি হ্যাটট্রিক হয়েছে এবং পক্ষেও দুটি। ২০০৫ সালের ১১ মে বার্বাডোজে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ল্যাঙ্গেভেল্ট দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন। অথচ এর আগে ১৯টি ওয়ানডে হ্যাটট্রিকের ঘটনা দেখেছিল বিশ্ববাসী। বিশ্বের ৩৪তম এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে মাত্র তৃতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের গৌরব দেখালেন রাবাদা। এখন প্রোটিয়াদের পক্ষে প্রথম ওয়ানডে হ্যাটট্রিককারী বোলার ল্যাঙ্গেভেল্ট নিজেই বোলিং কোচ। তাঁর শিষ্য হিসেবে রাবাদা হ্যাটট্রিক করলেন এবং হয়ে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে ওয়ানডে হ্যাটট্রিকের মালিক। ল্যাঙ্গেভেল্ট কোচ না হলে হয়ত আরও বিলম্বই হয়ে যেত! প্রোটিয়াদের পক্ষে চলতি বছরই দ্বিতীয় ওয়ানডে হ্যাটট্রিকের ঘটনা ঘটান অনিয়মিত স্পিনার জেপি ডুমিনি। চলতি বছর অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সিডনিতে ১৮ মার্চ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ডুমিনি। অবশ্য রাবাদার হ্যাটট্রিকটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সবেমাত্র দ্বিতীয় ঘটনা। ২০০৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ও একমাত্র হ্যাটট্রিক করেছিলেন শ্রীলঙ্কান পেসার চামিন্দা ভাস। সাড়ে ১২ বছর পর দ্বিতীয়বার ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকের শিকার হলো বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের পক্ষে এখন পর্যন্ত হ্যাটট্রিক হয়েছে চারটি।
×