ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষেপণাস্ত্র কনসোর্টিয়ামে জাপান

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১১ জুলাই ২০১৫

ক্ষেপণাস্ত্র কনসোর্টিয়ামে জাপান

জাপান ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির এক কনসোর্টিয়ামে যোগ দিতে আগ্রহী। এর ফলে টোকিও এক বহুজাতিক প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যোগ দেয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। জাপানের এ পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র উৎসাহিত করে এসেছে, কারণ এটি এশিয়াতে অনুরূপ অংশীদারিত্বে জাপানের নেতৃত্বে দেয়ার পথ সুগম করতে পারে। বিভিন্ন সূত্রে এ কথা বলা হয়। খবর ইয়াহু নিউজের। ১২ দেশ নিয়ে গঠিত ওই ন্যাটো কনসোর্টিয়াম সিম্প্যারো ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন দেখাশোনা করে এবং সেই বাবদ ব্যয় নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। এ উন্নত জাহাজবাহিত ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য হলো জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও এ্যাটাক বিমান ধ্বংস করা। মার্কিন অস্ত্র কোম্পানি রেথিওন এবং জেনারেল ডিনামিকস ওই সিম্প্যারো ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে থাকে। কনসোর্টিয়াম সম্পর্কে আরও কিছু জানতে জাপানী নৌবাহিনী কর্মকর্তারা মে মাসে হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটোর এ বৈঠকে যোগ দেন। ওই নৌবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের সূত্রে ওকথা জানা যায়। ওই উদ্যোগ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল দু’ জাপানী সূত্রে বলা হয়, ওই বিষয়ে টোকিওতে চলমান আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে, তবে কনসোর্টিয়ামে যোগদান প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের আরও শক্তিনির্ভর নিরাপত্তা এজেন্ডার সঙ্গে খাপ খায়। এ এজেন্ডার আওতায়ত গত বছর অস্ত্র রফতানির ওপর থেকে কয়েক দশকের পুরনো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। কনসোর্টিয়াম আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সিম্প্যারোর উন্নত সংস্করণ উদ্ভাবন করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ চারটি দেশ ১৯৬৮ সালে এ কনসোর্টিয়াম প্রতিষ্ঠা করে। জাপান যোগ দেয়ায় প্রকল্পের ব্যয় আরও বেশি সদস্যের মধ্যে ভাগ হবে। কিন্তু ওয়াশিংটন এতে এশিয়ার বহুজাতিক সামরিক শিল্প অংশীদারিত্বে নেতৃত্ব দিতে জাপানের ভূমিকাও দেখতে পাচ্ছে। যখন চীনের সামরিক আধুনিকায়ন ও শক্তি প্রদর্শন ওই অঞ্চলের অনেক দেশকে ভীত করে তুলছে, তখন জাপানের ওই ভূমিকা যুক্তরাষ্ট্রের চোখে পড়ছে। মার্কিন সূত্রে একথা জানা যায়। এরূপ অংশীদারি আনুষ্ঠানিক সামরিক জোটগুলোর বাইরেও নিরাপত্তা সম্পর্কের এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে। এসব জোটের বেশির ভাগেই ওয়াশিংটন ও এর বিভিন্ন আঞ্চলিক মিত্ররা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরূপ অংশীদারি এশিয়াতে বিরল। মার্কিন সূত্রে বলা হয়, আমরা মনে করি এ প্রকল্প জাপানকে ভবিষ্যতে আরও অস্ত্র রফতানি কর্মসূচী হাতে নেয়ার ভিত্তি গড়ে তোলার সুযোগ দেবে। আমরা ওই অঞ্চলে জাপানের এ ধরনের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে স্বাগত জানাই। এ বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হলে জাপানী নৌবাহিনী এক ই-মেইলে বলেছে, মার্কিন নৌবাহিনী সিম্প্যারো প্রকল্প নিয়ে আমাদের অবহিত রাখছে। আমাদের জাহাজভিত্তিক ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সামরিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের সামর্থ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনমতো সিদ্ধান্ত নিতে তথ্য সংগ্রহ করছি। বিশ্বের অন্যতম উন্নত সামরিক শিল্পের ভিত্তি জাপানের রয়েছে। কিন্তু মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের মতো কোম্পানিগুলো অস্ত্র রফতানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে কেবল সেলফ ডিফেন্স ফোর্সেসের জন্যই অস্ত্র তৈরি করে এসেছে। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর আবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে শুরু করেছেন। এ অঞ্চলের কয়েকটি দেশ বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীনা সাগরে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। জুন মাসে আবে সামরিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি বিনিময় করতে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো এক্যুইনোর মতৈক্যে পৌঁছান। আবে মে মাসে প্রতিরক্ষা যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা করতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে একমত হন। আর অস্ট্রেলিয়া এর পরবর্তী পর্যায়ের সাবমেরিনের সম্ভাব্য নির্মাতা হিসেবে জাপানকেই বিবেচনা করছে। এতে মার্কিন নৌকমান্ডাররা প্রকাশ্যে উৎসাহ যোগাচ্ছে। কারণ জাপান এ কাজ করলে ওয়াশিংটনের দু’এশীয় ঘনিষ্ঠ মিত্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীরতা হবে। জাপানী নৌবাহিনী সিম্প্যারো ক্ষেপণাস্ত্র এরই মধ্যে ব্যবহার করছে। ন্যাটো ও মার্কিন প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে এক সহ উৎপাদন চুক্তির আওতায় মিৎসুবিশি ইলেকট্রিক এ ক্ষেপণাস্ত্র স্থানীয়ভাবে সংযোজন করে থাকে। এটি পূর্ণ কনসোর্টিয়াম অংশীদারে উত্তরণ সহজতর করবে। মার্কিন সূত্রে এ কথা বলা হয়।
×