ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীসহ সারাদেশে ভারি বর্ষণ

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ১০ জুলাই ২০১৫

রাজধানীসহ সারাদেশে ভারি বর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে মৌসুমী বায়ু। বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হয়েছে। দিনভর বৃষ্টি, জলজট ও যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। নগরীর অনেক জায়গায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। রাস্তাঘাট ও অলিগলি হয়ে উঠে কর্দমাক্ত। কর্মজীবীদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। বৃহস্পতিবার দেশের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। তিনটি নদীর পানি প্রবাহিত হয় বিপদসীমার ওপর দিয়ে। আজ শুক্রবারও দেশে বৃষ্টিপাত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাঙ্গেয় পশ্চিম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এর একটির বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশের অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আজ শুক্রবার ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থ’ায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, সুরমা-কুশিয়ারা ও গঙ্গা নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস এবং পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতল আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীসমূহের পানি সমতল আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। পর্যবেক্ষণাধীন দেশের ৮৪টি পানি সমতল সেন্টারের মধ্যে বৃহস্পতিবার ৫২টি নদীর পানি বৃদ্ধি এবং ২৬টির পানি হ্রাস পাচ্ছিল। আর বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ৩টি নদীর পানি। বৃহস্পতিবার রাজধানীবাসীর সকাল শুরু হয় বৃষ্টির মধ্য দিয়ে। মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত চলতে থাকে টানা তিন ঘণ্টা ধরে। তারপর থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে রাত পর্যন্ত। সকালে বৃষ্টিতে প্রথমে দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী নগরবাসী। ঝিরঝিরে বৃষ্টি, আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটেছেন তারা। বৃষ্টি উপক্ষো করেই সকাল সাড়ে ন’টায় মগবাজার মোড়ে কর্মজীবী মানুষের ভিড়। নিকটস্থ দোকান ও রেস্টুরেন্টগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রীবাহী বাহনের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অনেকের হাতে ছাতা নেই। সামনে পেয়েও বৃষ্টির কারণে তাঁদের কেউ কেউ বাসে উঠতে পারেননি। রাজধানীতে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে ওই সব খানাখন্দ। এসব জায়গায় পা রাখতে গিয়ে অনেক পথচারীই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এভাবে বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে হাজারীবাগের নিম্নাঞ্চল, রাজধানী সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, ধানম-ির অনেক স্থানেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পুরান ঢাকা, পীরেরবাগ, সেনপাড়া পর্বতা, শেওড়াপাড়া, আদাবর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, মিরপুর, টিকাটুলি, বাসাবো, মুগদা, মধুবাজার, শ্যামলী, রামপুরা, রাজারবাগ, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, মৌচাক, মালিবাগ, মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার অজুহাত দেখিয়ে চালকরা অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দেন রিক্সা, অটো সিএনজি ও ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া।
×