ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঈদে ঘরে ফেরা

ট্রেনের অগ্রিম টিকেট হাতে পেয়ে রাতজাগা মানুষের মুখে হাসি

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১০ জুলাই ২০১৫

ট্রেনের অগ্রিম টিকেট হাতে পেয়ে রাতজাগা মানুষের মুখে হাসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদ মানেই উৎসব। আনন্দ। এই সময়ে প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেলেই উৎসবের আনন্দ পূর্ণতা পায়। পরিবারের সবাইকে কাছে পেতে ঘরে ফেরার বিকল্প নেই। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে টিকেট চাই-ই চাই। তাইতো ট্রেনের টিকেটের জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল রাতজাগা হাজারো মানুষের ভিড়। টিকেট নিশ্চিত করতে কতটুকু ত্যাগ ও দুর্ভোগের শিকার করতে হয়েছে, তা চোখে না দেখলে বোঝার নয়। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে রেলের অগ্রিম টিকেট বিক্রির প্রথম দিন ছিল বৃহস্পতিবার। আগেরদিন বিকেল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন অনেকে। ১৩ জুলাইয়ের টিকেট পেতে মশার প্রচ- উপদ্রবের মধ্যে রাত কেটেছে প্লাটফরমে শুয়ে। সেহ্রি খেয়েছেন এখানেই। কেউ তাস খেলেছেন। হই হুল্লোর করে সকালের দেখা মিলেছে কারও। আবার ‘সময় যেন কাটে না...’ এমন অসহ্য দীর্ঘশ্বাসের মধ্যেও সময় কাটাতে হয়েছে। এবার কালোবাজারির অভিযোগ না থাকলেও টিকেট দিতে বিলম্ব, সিøপ সংগ্রহ ও লাইনের বিড়ম্বনা, প্রথম শ্রেণীসহ (এসি) কেবিন না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। টিকেট কালোবাজারি ঠেকাতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি ছিল পুরো এলাকাজুড়ে। সাধারণ যাত্রীদের জন্য প্রতিদিন আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য টিকেট বরাদ্দ নয় হাজার ৩৫টি আসন। আজ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করবে। সকাল ৯টায় খুলেছে কাউন্টার। অল্প সময়ের মধ্যেই টিকেট হাতে পেয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরেছেন অনেকেই। বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ঘরমুখো মানুষ। যেন সোনার হরিণের দেখা। টিকেট হাতে পেয়ে সব কষ্টই যেন স্মৃতি থেকে মুছে গেছে। এবার নিরাপদে বাড়ি যাওয়া নিশ্চিত। তাই এবারের গন্তব্য বাসার দিকে। ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন টিকেটপ্রত্যাশী মানুষ। প্রথম দিনে বেশিরভাগ যাত্রী টিকেট পেয়েছেন। দুপুরের মধ্যে স্টেশনের কাউন্টারগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। ১৭ নম্বর কাউন্টার থেকে দেয়া হয় মহিলা টিকেট। বেলা ১২টার পর এই কাউন্টার ছিল ফাঁকা। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, নারীদের হয়রানি রোধে পৃথক কাউন্টার করা হয়েছে। তবে মহিলারা ইচ্ছা করলে যে কোন কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। আজ শুক্রবার ১৪ জুলাইয়ের টিকেট নিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে কমলাপুরে ভিড় জমে মানুষের। সর্বোচ্চ যাত্রী সেবার আশ্বাস রেলমন্ত্রীর ॥ কমলাপুর রেল স্টেশনে টিকেট বিক্রির প্রথম দিনের কার্যক্রম দেখতে এসে সর্বোচ্চ যাত্রী সেবার আশ্বাস দিলের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি বলেন, ঈদে যথাসময়ে ছাড়বে ট্রেন। ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাবেন যাত্রীরা। মন্ত্রীর এমন আশার কথায় ভরসা রাখতে বললেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আমজাদ হোসেনও। মন্ত্রী বলেন, বিগত সময়ের ঈদে কিছু ভোগান্তি হয়েছে। সব ট্রেনের সিডিউল ঠিক রাখা যায়নি। এবার আমরা সে অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগাব। তিনি বলেন, ট্রেনের ছাদে যাওয়া একটি অপরাধ। ছাদে যাতে কেউ না উঠতে পারেন সেজন্য বিশেষ নজরদারি থাকবে। সাধারণ যাত্রীদের জন্য ৬৫ ভাগ টিকেট ॥ এবার সংরক্ষিত টিকেট থাকবে মোট ৩৫ শতাংশ। এর মধ্যে ভিআইপিদের জন্য ৫ শতাংশ, স্টাফদের জন্য ৫ শতাংশ এবং ই-টিকেটিং ২৫ শতাংশ। আর ফিরতি টিকেট বিক্রি করা হবে ২০-২৪ জুলাই পর্যন্ত। যাত্রী সেবায় আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহন করে থাকে। পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ায় প্রতিদিন সারাদেশে আড়াই লাখের বেশি যাত্রী পরিবহনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য যাত্রীদের অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি এবং যে কোন প্রকার নাশকতা থেকে নিরাপত্তা দিতে সবসময় র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। কাজ করবে রেল পুলিশও। রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, সব ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হয় না। যেসব ট্রেন তুলনামূলক বেশি দূর যায় সেগুলোর সিডিউলে গতবার সমস্যা হয়েছে। যেমন-দিনাজপুরগামী দ্রুতযান ও একতায় গতবার সিডিউলে বিপর্যয় হয়েছে। এছাড়া রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস এগুলোরও সিডিউল ঠিক রাখা যায়নি। তিনি বলেন, এবার এগুলো যেন যথাসময়ে গিয়ে ঢাকায় ফেরত আসতে পারে সেজন্য আমরা বিকল্প ট্রেন অর্থাৎ ইঞ্জিন-বগি রাখব। যেমন-যদি দেখা যায়, রংপুর এক্সপ্রেস ঠিকসময়ে যেতে পারছে না তাহলে আরেকটি ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীদের তুলে নেবে। রংপুর এক্সপ্রেস তখন ঢাকায় সঠিক সময়ে আবার ফিরে আসতে পারবে। রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও ফেরিঘাটে অস্থায়ী র‌্যাব র‌্যাম্প ॥ দুপুরে কমলাপুর স্টেশনে আসেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা দিতে র‌্যাব তৎপর রয়েছে। যাত্রীরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য সব ধরনের নিরাপত্তা দেয়া হবে। এজন্য ট্রেন, বাস এবং লঞ্চের প্রধান প্রধান স্টেশনে অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, যাত্রীবোঝাই করে কোন লঞ্চ যেন ছাড়তে না পারে সেজন্য মাওয়ার পাড়ে দুটি এবং নদীর ওপারেও র‌্যাবের দুটি ক্যাম্প খোলা হয়েছে। কাওড়াকান্দি ঘাটেও র‌্যাব ক্যাম্প থাকবে। তিনি জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে ১০/১৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে যায়। তারা যেন নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারে এজন্য র‌্যাব নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এছাড়া ঈদের সময়ে ঢাকার ১০/১৫ হাজার বাসা-বাড়ি খালি থাকে। চুরি, ডাকাতিসহ বাসা বাড়িতে নিরাপত্তা দিতেও কাজ করবে র‌্যাব। উন্মুক্ত কোটায় নয় হাজার ৩৫ টিকেট ॥ রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কমলাপুর থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকেটের সংখ্যা ১৪ হাজার ৫১২টি। এর মধ্যে অনলাইন টিকেটে যাবে তিন হাজার ২৩৯ টিকেট। ভিআইপি কোটায় ৭৩৩ ও রেলওয়ে স্টাফদের জন্য সংরক্ষিত কোটায় বরাদ্দ ৭৩২ টিকেট। সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত কোটায় টিকেট বিক্রি হবে নয় হাজার ৩৫টি। রেলস্টেশনের ১৮ নম্বর কাউন্টার থেকে সিøপের মাধ্যমে ই-টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন যাত্রীরা। অভিযোগ ও তথ্যকেন্দ্র ॥ কমলাপুর রেলস্টেশনে র‌্যার-৩-এর পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে একটি অভিযোগ কেন্দ্র। দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রের ভেতরে রাখা বাক্সে কোন অভিযোগ পড়েনি। ক্যাম্পে কর্তব্যরত র‌্যাব সদস্য ডিএডি জহির জানান, ঈদের আগ পর্যন্ত এই ক্যাম্প থাকবে। স্টেশনের চারপাশজুড়ে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন র‌্যাবের সদস্যরা। তিনি জানান, টিকেট কালোবাজারিসহ যাত্রীরা কোন অভিযোগ করলে আমাদের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে দুপুর পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। এছাড়াও যাত্রী নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সহায়তার জন্য রেলওয়ে চট্টগ্রাম পুলিশের পক্ষ থেকে ঢাকা রেলওয়ে থানার মাধ্যমে পুলিশ তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখানেও দায়িত্ব পালন করছেন কয়েকজন। যে কোন সহায়তার জন্য ০১৭৬৯-৯৩৬৫৩৯ এই মোবাইল নম্বরে যাত্রীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে আরেকটি পৃথক সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনে। কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী দুপুরে জনকণ্ঠকে বলেন, প্রথম দিনের টিকেট নিতে যারা কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তারা পাচ্ছেন। কেউ হতাশ হয়ে ফিরে যাননি। দুপুর পর্যন্ত অনেক কাউন্টার ফাঁকা। অর্থাৎ এখনও টিকেট আছে। তিনি বলেন, ঈদে পাঁচ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। এর মধ্যে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুর, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জসহ ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে যোগ দিতে আরও দুই জোড়া ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত টিকেট থাকা সাপেক্ষে বিক্রি হবে। ঈদের বিশেষ ট্রেনের যাত্রার দিন দেয়া হবে স্টেন্ডিং টিকেট। ১৬ জুলাই থেকে বিক্রি হবে ফিরতি টিকেট। প্রথম দিনে কারো কাছ থেকে কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। সবাই শান্তিপূর্ণভাবে টিকেট সংগ্রহ করেছেন। ঈদের সময় ট্রেনের ছাদে কিংবা বাম্পারে ঝুলে না যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। টিকেট বিক্রির গতি কম এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সার্ভার চালু হতে সময় লাগে এমনটি একসঙ্গে সার্ভারে টিকেট বিক্রির চাপ পড়ায় সময় লাগে। তিনি জানান, ১৫ জুলাই থেকে ঈদের পূর্বদিন পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেন চলবে। ঈদের পর দুই দিন থেকে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ট্রেন চলানোর কথা জানান স্টেশন মাস্টার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি বলেন, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কিনতে পারবেন। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ৫ দিন ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি চলবে। আজ ১০ জুলাই ১৪ জুলাইয়ের, ১১ জুলাই ১৫ জুলাইয়ের, ১২ জুলাই ১৬ জুলাইয়ের এবং ১৩ তারিখে ১৭ জুলাইয়ের টিকেট দেয়া হবে। ঈদ-পরবর্তী সময়ে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৬ জুলাই ঈদ পরবর্তী ফিরতি টিকেট বিক্রি শুরু হবে। এদিন বিক্রি হবে ২০ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকেট, ১৭ জুলাই ২১ জুলাইয়ের, ১৮ জুলাই ২২ জুলাইয়ের, ১৯ জুলাই ২৩ জুলাইয়ের ও ২০ জুলাই ২৪ জুলাইয়ের ফিরতি টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন যাত্রীরা। কমলাপুরের ২০টি কাউন্টার থেকে চলতি ও অগ্রিম টিকেট দেয়া হচ্ছে। এবার রেলস্টেশনের বেশিরভাগ কাউন্টারে যাত্রীদের সঙ্গে টিকেট মাস্টারের কথা বলতে স্পিকার লাগানো হয়েছে। ট্রেনের যাবতীয় তথ্য ব্যানারে লিখে টানানো হয়েছে স্টেশনজুড়ে। টিকেট নিতে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, আগে একটি কাউন্টার থেকে চাহিদাপত্র নিয়ে তা লিখে লাইনে দাঁড়াতে হয়। চাহিদাপত্র দেয়ার পরও টিকেট দিতে বিলম্ব হয়। প্রথম দিনে বিক্রি হয় ১৩ জুলাইয়ের টিকেট। প্রথম দিনে ময়মনসিংহের তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকেট নিতে আসা মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, ভোর লাইনে দাঁড়িয়ে বেলা ১২টায় নির্ধারিত মূল্যে টিকেট পেয়েছি। তাঁর অভিযোগ টিকেট দেয়ার ক্ষেত্রে গতি কম। রাজশাহীর যাত্রী মিনার জানান, প্রথম দিনে কোন কেবিন পাওয়া যায়নি। কাউন্টার থেকে সব কেবিন বুকিং হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। খুলনার যাত্রী নিহার জানালেন, টিকেট নিতে আগের দিন রাতে লাইনে দাঁড়াই। সকাল ১০টার মধ্যে টিকেট পেয়েছি। এবার নিরাপদ ঘরে ফেরা। তবে ট্রেন সিডিউল ঠিক রাখার দাবি জানান তিনি। আজ থেকে বিআরটিসি বাসের টিকেট ॥ আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার থেকে। বিআরটিসির মতিঝিল, জোয়ারসাহারা, কল্যাণপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর দ্বিতল বাস ডিপো, গাজীপুর বাস ডিপো, নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো ও ঢাকার ফুলবাড়িয়া সিবিএস-২ থেকে যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট কিনতে পারবেন। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিআরটিসি। সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত টিকেট বিক্রি হবে। সড়ক সচিব জানিয়েছেন, দেশের সকল জেলায় বিআরটিসি স্পেশাল সার্ভিস চলবে। ৫০টি গাড়ি রিজার্ভ রাখা হবে। বিআরটিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৪ থেকে ২০ জুলাই বিআরটিসির বাসে ঈদের বিশেষ সেবা দেয়া হবে। বিআরটিসি সূত্র জানায়, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ডিপোসহ মোট ৯০০টি বাস এই সেবায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এর মধ্যে চার শতাধিক বাস ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলায় ছেড়ে যাবে। আন্তঃজেলা রুটে চলবে আরও চার শতাধিক বাস। বাসগুলো ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ডিপো থেকে যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। এছাড়া ঈদের আগের দিন সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী ডিপো থেকে যাত্রী চলাচলের সুবিধার্থে ৫৫টি বিআরটিসির বাস স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ের একটি হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এই ডেস্কের ফোন নম্বর হচ্ছে : ৯৫৬৪৩৬১ এবং মোবাইল নম্বর হচ্ছে : ০১৮১৮২০২১৮৬। যে কোন তথ্য জানতে এসব ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বিআরটিসির পক্ষ থেকে যাত্রীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিসির পরিচালক (কারিগরি) কর্নেল এ আর মোহাম্মাদ পারভেজ মজুমদার বলেন, ঈদ যাত্রীদের যাতায়াত নিশ্চিত করতে বিআরটিসির পক্ষ থেকে বিশেষ সেবার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। তিনি বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নেয়া হবে। কোন অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হবে না। বিআরটিসিতে অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিশের কোন সুযোগ নেই। প্রত্যেক টিকেট কাউন্টারে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টানানো থাকবে। যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়ায় টিকেট নিতে পারবেন। কমলাপুর বাস ডিপোর ম্যানেজার নায়েব আলী জানান, বিকেল পাঁচটার পরও কাউন্টারে লোক থাকবে। যে কোন যাত্রী ডিপো থেকে রাতেও বাসের টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন।
×