বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গণভবনে বসেছিল পেশাজীবীদের মিলনমেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। গণভবনের সামনে সবুজ চত্বরে স্থাপিত বিশাল প্যান্ডেলের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ ইফতার মাহফিলে বুদ্ধিজীবী, লেখক-সাহিত্যিক, বিভিন্ন সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক, শিল্পী, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সঙ্গীতশিল্পী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ যোগ দেন।
নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত সব পেশাজীবীর আড্ডায় মুখরিত হয়ে ওঠে গণভবন চত্বর। ইফতারের আগে প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও তাঁদের খোঁজখবর নেন। অনেকের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক খোঁজ নিতেও দেখা গেছে। অতিথিরাও তাঁর কুশলাদি জানতে চান। দেশকে এগিয়ে নিতে অসামান্য অবদান রাখায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান তাঁরা। পরে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উঠে দোয়া ও মিলাদে শরিক হন এবং ইফতারে অংশ নেন।
ইফতারের আগে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন এবং এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদ, চার জাতীয় নেতা ও ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ ও সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান।
ইফতার মাহফিলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কৃষিবিদ আমিরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক।
ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ ছাড়াও পেশাজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, মেয়র আনিসুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, বিএমএ মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, ফকির আলমগীর, বিশিষ্ট আইনজীবী এ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার বিদায় ঘণ্টা বেজেছেÑ ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। বিএনপিতেও শুরু হয়েছে ভাঙ্গন প্রক্রিয়া। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ওপর খালেদা জিয়ার ক্ষোভের বহির্প্রকাশই তা স্পষ্ট করেছে।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির মহড়াকক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘চলমান রাজনীতি ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ আরও বলেন, শুধু তৃণমূলেই নয়, শীর্ষ নেতাদের ওপরও খালেদা জিয়ার কোন আস্থা নেই। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা নেই। বিএনপি রক্ষার্থে দলের নেতারাই এখন চাচ্ছেন খালেদা জিয়া যেন বিএনপি থেকে সরে যান।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা রাখতে না পেরে ইতোমধ্যে তৃণমূলে বিএনপি নেতাকর্মীরা দল ছাড়ছে, আবার অনেকেই লুকিয়ে আছে। দেশের উন্নয়নে বা দেশের যে কোন সঙ্কট নিরসনে সরকারী ও বিরোধী দলের এক সঙ্গে কাজ করার নাম হলো ‘পলিটিক্স অব এ্যাকোমোডেশন’। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কংগ্রেস সরকারের সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছিল বিজেপি। পরবর্তীতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে এই চুক্তি বাস্তবায়ন করে। এটাই হলো পলিটিক্স অব এ্যাকোমোডেশন।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশকে উচ্চতায় নিয়ে যেতে হলে পলিটিক্যাল এ্যাকোমোডেশন দরকার। আওয়ামী লীগ তা বিশ্বাস করে। কিন্তু খালেদা জিয়া এতে বিশ্বাসী নন। তাঁর আছে পলিটিক্যাল ডিনাই। এ কারণে অচিরেই খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। তিনি বলেন, রাজনীতি ও আন্দোলনের পাশাপাশি নিজের সন্তানদের মানুষ করার ক্ষেত্রেও খালেদা জিয়া ব্যর্থ হয়েছেন। তবে তিনি শুধু ষড়যন্ত্রে পটু।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু প্রমুখ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: