ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাহাড় থেকে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় ॥ সিপিজি সদস্য জড়িত

পটিয়ায় গহীন জঙ্গলে সন্ত্রাসী আস্তানা

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৮ জুলাই ২০১৫

পটিয়ায় গহীন জঙ্গলে সন্ত্রাসী আস্তানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, ৭ জুলাই ॥ চট্টগ্রামের পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়া সীমান্তের জঙ্গলে গড়ে উঠেছে সন্ত্রাসীদের আস্তানা। কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ (সিপিজি) সদস্যদের পোশাক পরে প্রায় প্রতিদিন পটিয়া উপজেলার পাহাড় থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে নিরীহ লোকজন। পরে হাত-পা বেঁধে গহীন জঙ্গলের কমলাছড়ি এলাকায় উপজাতিদের একটি চায়ের দোকানে আটকে রেখে আদায় করছে মুক্তিপণ। ফলে পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে দেখা দিয়েছে সিপিজি সদস্য নিয়ে আতঙ্ক। রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ের বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ (সিপিজি) গঠন করা হলেও ওই সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য এখন নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে উপজাতিদের (মগ) একটি গ্রুপ। পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের ১০ জন মজুরকে গত বৃহস্পতিবার ধরে নিয়ে যাওয়ার পর গহীন জঙ্গলে সন্ত্রাসীদের এই আস্তানার তথ্য পাওয়া যায়। তবে মুক্তিপণ আদায় করতে না পারলেও দিনমজুরদের বন্দুকের বাঁট দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এই আতঙ্গে পাহাড়ের ঢালায় চাষাবাদ করা বিভিন্ন সবজি ক্ষেত, লেবু বাগান ও পেয়ারা বাগানের দিনমজুররা গত কয়েকদিন ধরে পাহাড়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বন বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পটিয়া-রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ী সড়ক হয়ে প্রতিদিন দিনমজুর ছাড়াও অসংখ্য লোক চলাচল করে থাকেন। পটিয়া সীমান্তে শ্রীমাই বিট ও রাঙ্গুনিয়া সীমান্তে রয়েছে কমলাছড়ি বিট। দুই বিটের মাঝামাঝি গহীন জঙ্গলে রয়েছে উপজাতিদের একটি চায়ের দোকান। সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের শীলছড়ি ব্লক, শ্রীমাই ব্লক, ঢোল ছড়া, কমলাছড়ি, ভাতখোলাসহ আশপাশের পাহাড়ী এলাকা থেকে দিনমজুর ও সবজি চাষীদের ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে। পাহাড়ের পটিয়া সীমানায় ঢুকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় ইতোমধ্যে রাঙ্গুনিয়া সিপিজি ১৪ জন সদস্যের মধ্যে (কমলাছড়ি-৮ জন ও কালীছড়ি-৬ জন) আবু তাহের ও নুরুল হককে সতর্কও করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। অভিযোগ উঠেছে, কয়েকজন সিপিজি সদস্যদের সহযোগিতায় উপজাতির একটি গ্রুপ গহীন জঙ্গলে আস্তানা গড়েছে। পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের দিনমজুর আবু তাহের (৪০), জাহেদুল হক (৪২), আবদুস সালাম (৪৪), মোঃ সোলতান ও মোঃ কালুসহ (২৫) ১০ দিনমজুরকে পটিয়া থেকে ধরে নিয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার গহীন জঙ্গলের কমলাছড়ি বিট এলাকার উপজাতির চায়ের দোকানে হাত-পা বেঁধে মুক্তিপণের জন্য মারধর করার পর এই তথ্য ফাঁস হয়। দক্ষিণ বন রেঞ্জের পটিয়া শ্রীমাই বিট কর্মকর্তা এসএম কাউছার হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সিপিজি সদস্যদের পোশাক পরে উপজাতির একটি গ্রুপ নিরীহ লোকজন ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে বলে শুনেছি। তা পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। মুক্তিপণ আদায় বন্ধ করতে হলে পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের সহযোগিতা দরকার। এ প্রসঙ্গে পটিয়া থানার ওসি রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী বলেন, পোশাক পরে নিরীহ লোকজনকে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×