ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী অর্থায়ন

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৮ জুলাই ২০১৫

জঙ্গী অর্থায়ন

দেশে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের ব্যাপক প্রসার ঘটে চলেছে। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ এশিয়ায় এই গোষ্ঠী নানা নামে নানাভাবে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলো জঙ্গীদের তৎপরতা বিভিন্ন সময় মোকাবেলা করে আসছে। আবার সার্কভুক্ত পাকিস্তান, আফগানিস্তানে এদের ঘাঁটি রয়েছে। উত্থানও এই অঞ্চলেই। এই জঙ্গীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ঘাঁটি গাড়তে তৎপর। এদের তৎপরতা বন্ধ করা গেছে তা নয়। মাঝে মাঝেই এসব দেশে সহিংসতা চালিয়ে জানান দেয় তারা নিজেদের অস্তিত্ব। অস্ত্রশস্ত্র, প্রশিক্ষণ, অপারেশনসহ এদের পেছনে ব্যয়ও প্রচুর। এই জন্য অর্থের অঢেল যোগানও রয়েছে। অর্থলোভ অনেককে এই পথে টেনে নিয়েছে, নিচ্ছেও। কারা তাদের অর্থের যোগানদাতা, কারা পৃষ্ঠপোষক, কাদের স্বার্থ পূরণে নৃশংসতা চালায়Ñ সেসব বিষয়ে তথ্যাদি তেমন মিলেছে বলা যাবে না। জঙ্গীদের অর্থ ও অস্ত্রের প্রধান উৎস মাদক পাচার, ব্যাংক লুট, অপহরণ করে পণ আদায়, চাঁদাবাজিসহ আরও নানাবিধ পথ ও পন্থা। জঙ্গীবাদে যারা অর্থায়ন করে তারা সন্ত্রাসবাদকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে ধর্মীয় উন্মাদনাকে ব্যবহার করছে। আল কায়েদা, আইএস, বোকো হারাম, আল শাবাব, তালেবান, জেএমবি, হুজি, আনসারুল্লাহ বাংলাটিম, হিজবুত তাহরীর ইত্যাদি দেশী-বিদেশী জঙ্গী সংগঠনগুলো তাদের তহবিল সংগ্রহ করছে মূলত সারা বিশ্ব থেকেই। অর্থের জোরে ছড়িয়েও দিচ্ছে বিশ্বব্যাপী নারকীয়তার পথে জঙ্গীদের। সামরিক প্রশিক্ষণ পাচ্ছে এ জঙ্গীরা। অত্যাধুনিক অস্ত্র চালনায় পারদর্শী যেমনি, তেমনি তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়েও দক্ষতা তাদের অত্যধিক। ইন্টারনেট তাদের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। জঙ্গী দমনে সব দেশই সোচ্চার। পাকিস্তানও জঙ্গী দমনে হাঁকডাক দিলেও মূলত জঙ্গী উৎপাদনে প্রধান কারখানাটিই এই পাকিস্তান। আর এসবের পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র। জঙ্গী দমনে বিভিন্ন দেশ কঠোর অবস্থা নেয়ার কথা বললেও জঙ্গী অর্থায়নের উৎস খুঁজে পাচ্ছে না। এ উৎস নির্মূল করা না গেলে জঙ্গী তৎপরতা কোনভাবেই দমন করা যাবে না। জঙ্গী সংগঠনগুলো কোন নির্দিষ্ট দেশে আর তাদের তহবিল রাখছে না। তারা অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যবহার করে আসছে। এক দেশ হতে অন্য দেশে জঙ্গীরা অর্থ পাচার করলেও এ অর্থ অনুসন্ধান দুরূহ হয়ে পড়ছে। জঙ্গীদেরও রয়েছে নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক, যার মাধ্যমে তারা অর্থায়ন করে আসছে। জামায়াত এদেশে যেভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে তাদের এই উৎস শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া গেলে এদেশে জঙ্গীবাদের উৎস নির্মূল করা যায়। জঙ্গীদের অর্থে অবাধ প্রবাহ শনাক্ত করে এর উৎস বন্ধ করা গেলে জঙ্গীবাদ প্রসারে আল কায়দার হুমকির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া যাবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে এবার মাঠে নামছে বাংলাদেশসহ ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটানের সমন্বয়ে গঠিত বিমসটেক। তারা অর্থায়ন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। ইতিবাচক এ তৎপরতা জঙ্গীর অর্থায়নের উৎস বন্ধ করতে পারবে বলে আশা করা যায়।
×