ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওয়ানডের জন্য মনোবল চাঙ্গা করা নৈপুণ্য দেখাতে চায় মাশরাফিরা

কামব্যাকই এখন লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৭:৪০, ৭ জুলাই ২০১৫

কামব্যাকই এখন লক্ষ্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশের মাটিতে একটানা ১১টি নির্ধারিত ওভারের ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। গত বছর নবেম্বর থেকে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৫ ওয়ানডে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ ওয়ানডের পর ১ টি২০ ও ভারতের বিপক্ষে ২ ওয়ানডে জিতেছে বাংলাদেশ। এরপর টানা দুটি ম্যাচ হেরে গেল। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচে হেরেছে। এতে করে ক্রিকেটারদের মনোবলে আঘাত আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আত্মবিশ্বাসে ঘাটতিও দেখা দিতে পারে। যা সামনের খেলাগুলোতে প্রভাব ফেলবে। তাই যে করেই হোক এখন কামব্যাকই লক্ষ্য বাংলাদেশের। সোমবার দুপুরে টিম হোটেলে এমন কথাই বলেছেন বাংলাদেশ দলের ওপেনার সৌম্য সরকার। রবিবার প্রথম টি২০তে ৫২ রানে হারের পর মাঝে একদিন মিলেছে। সেই দিনটিতে বিশ্রাম ছিল। তবে মুশফিক, সাব্বিরের মতো ব্যাটসম্যানরা ঠিকই অনুশীলন করেন। বাকিরা বিশ্রামেই থাকেন। তবে পুরোপুরি হোটেলবন্দী হয়েই থাকেননি। সুযোগটি শপিং করে কাজে লাগিয়েছেন। এর সঙ্গে দ্বিতীয় টি২০তে কিভাবে ভাল করা যায় সেই পরিকল্পনাই করা হয়েছে। সঙ্গে আত্মবিশ্বাসে যে ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে, তা যেন না হয় তা নিয়েই সবার মধ্যে কথা হয়েছে। প্রথম টি২০তে যেসব ভুল হয়েছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিতে চায় বাংলাদেশ দল এবং সেই শিক্ষার আলোকে কামব্যাক করাই এখন মূল লক্ষ্য। অবশ্য সাকিব যদি আরও কিছুক্ষণ উইকেটে থাকতে পারতেন, তাহলে প্রথম টি২০ জয় বাংলাদেশের হাতেও ধরা দিতে পারত। তাতে করে কামব্যাক নয়, এখন সিরিজ জয়ের ভাবনাতেই মশগুল থাকত বাংলাদেশ। তাই ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌম্য। বলেছেন, ‘ওদের বোলিং ও রকম কিছু না। সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। তবে, আমাদের ভুল ছিল-এটা বলব না। আমাদের পরিকল্পনা কাজে লাগেনি। ওপেনাররা কিছুক্ষণ উইকেটে থাকতে পারলে এবং সাকিব ভাই আর কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।’ প্রথম টি২০তে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৪৮ রানের মধ্যে বেঁধে ফেলার পরও কেন এভাবে হারতে হলো? এ প্রশ্নের জবাবে সৌম্য সরকার বলেন, ‘আসলে মূল সমস্যা হয়েছিল, আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। বোলিং ফিল্ডিংয়ে আমরা ভাল করেছি। পরিকল্পনা কাজে লাগিয়েছি। কিন্তু ব্যাটিংয়ে এসেই সব পরিকল্পনা উল্টে গেছে। কারণ হচ্ছে, আমাদের ওপর (তামিম+সৌম্য) দায়িত্ব ছিল অন্তত প্রথম ৬ ওভারে ৪০ থেকে ৫০ রান তুলে দেয়া। কিন্তু আমরা দু’জন সেটা পারিনি।’ সম্ভাবনা যে তখনও হারিয়ে যায়নি এবং মাঝপথে এসেই শেষ হয়ে যায় সেটা জানালেন সৌম্য, ‘তবুও সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু মাঝপথে এসে যখন দ্রুত মুশফিক ভাই আউট হয়ে গেলেন, তখনই পরের সবাই হতাশ হয়ে যায় এবং তাদের ওপর চাপ পড়ে বেশি। যে কারণে অন্যরা সেই চাপ নিতে পারেনি এবং আমাদের এভাবে হারতে হয়েছে।’ অনুশীলনে না গেলেও হোটেলে দীর্ঘসময় ধরে চলেছে টিম মিটিং। সেখানে খেলোয়াড়দের প্রতি কী বার্তা দেয়া হয়েছে? জানতে চাইলে সৌম্য বলেন, ‘আমাদের প্রতি একটাই বার্তা। সেটা হলো যার যে কাজ, সেটা যেন সঠিকভাবে শতভাগ করতে পারি। তাহলেই জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।’ বাংলাদেশ তো টানা জয়ের মধ্যে ছিল। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও হারতে হলো। এটা আসলে বাংলাদেশের ভাল পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতার ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলবে? সৌম্য বলেন, ‘আসলে আমাদের ধারাবাহিকতার কোন সমস্যা না এবং আমি মনে করি না এ বিষয়টা কোন প্রভাব ফেলবে। আমরা এই দুটা ম্যাচে ভাল খেলতে পারিনি। তাই ফলও ভাল হয়নি। কিছু ভুল ছিল আমাদের। এখন একটাই লক্ষ্য, সেই ভুলগুলো শুধরে, যেভাবে হোক কামব্যাক করা। টি২০তে ভাল করে ওয়ানডে সিরিজের আগে নিজেদের মনোবল বাড়ানো এবং প্রস্তুতি ভাল করে নেয়াটাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’ সৌম্য নিজেও তার পারফর্মেন্স নিয়ে কিছুটা হতাশ। বিষয়টা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে একটা সেঞ্চুরি পেয়েছিলাম। এরপর আর ইনিংসকে বড় করতে পারছি না। এ কারণে নিজের মধ্যেও কিছুটা হতাশা রয়েছে। এ নিয়ে কাজ করছি। কোচসহ সিনিয়র সবার সঙ্গে কথা বলছি, কিভাবে আরও ভাল করা যায়।’ দলে টি২০ স্প্যাশালিস্ট বলতে শুধু একজন, সাকিব আল হাসান। দলের অন্যদের সাকিব সহযোগিতা করেন কি না? জানতে চাইলে সৌম্য বলেন, ‘সাকিব ভাই আমাদের সবাইকেই সহযোগিতা করেন। তার কাছ থেকেই অনেক কিছু শিখতে পারছি আমরা। তবে, এটা ঠিক, তার একার ওপর পুরো দল নির্ভরশীল না। ভাল করতে হলে সবাইকেই ভাল করতে হবে।’ সৌম্য সরকারের মতে টি২০ শক্তির নয় বুদ্ধির খেলা। কিভাবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারণ, এই খেলাটি অনেক বেশি ক্যালকুলেটিভ। আপনি একটি বলে ছক্কা মারলেন, পরের বলেই হয় তো আউট হয়ে যেতে হবে। সুতরাং, অনেক হিসাব করে, পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হয়।’
×