ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রীসের জনগণ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে ॥ সিপরাস

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৭ জুলাই ২০১৫

গ্রীসের জনগণ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে ॥ সিপরাস

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কঠোর শর্ত সম্বলিত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে গ্রীসের জনগণ। রবিবারের গণভোটে ‘না’ ভোট সুস্পষ্টভাবে জয়ী হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্স সিপরাস বলেছেন, গণভোটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কঠোর শর্ত প্রত্যাখ্যান করে গ্রীসের জনগণ ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণভোটের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে। এতে ‘না’ ভোট পড়েছে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ। ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ। ভোটের ফলাফল শোনার পর না ভোটের হাজার হাজার সমর্থক রাস্তায় নেমে উৎসব করেন। তবে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা হুঁশিয়ার করেছেন, না ভোট জয়ী হওয়ার অর্থ গ্রীসের ইউরোজোন থেকে বেরিয়ে যাওয়া। সোমবার এশিয়ার পুঁজি বাজারে এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ঋণদাতাদের কঠোর শর্ত মেনে নিতে নারাজ গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী সিপরাস গত সপ্তাহে ৫ জুলাইয়ের গণভোটের ঘোষণা দেন। ঋণদাতাদের কর বাড়ানো, পেনশনে কাটছাঁট ও কৃচ্ছ্রসাধনের একগুচ্ছ প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়ে আসছিল সিপরাস সরকার। এরই মধ্যে গত ৩০ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের কিস্তি ১৫০ কোটি ইউরো পরিশোধের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। খবর এএফপির। ঋণখেলাপী হয়ে পড়ে গ্রীস। গ্রীসের অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকিস পদত্যাগ করেছেন। আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের সঙ্গে তার প্রায়ই বাগ্বিত-া হতো। প্রধানমন্ত্রী সিপরাস বলেন, ভোটের ফলাফল আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে তাকে অনেক সহায়তা করবে। গ্রীসের ক্ষমতাসীন সিরিজা পার্টি না ভোটের পক্ষে প্রচার চালায়। দলটির মতে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কঠোর শর্ত অবমাননাকর। সিপরাস রবিবার রাতে বলেন, গ্রীসবাসী প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্র ব্লাকমেইল হতে দিবে না। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, গ্রীসের জনগণ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণভোটের ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় গ্রীসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পানোস কামেনোস বলেছেন, জনগণ প্রমাণ করেছে, ভয় দেখিয়ে কারও স্বার্থ হাসিলের চেষ্টার কাছে তারা নতি স্বীকার করেনি। গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা সব সময় হুমকি দিয়ে এসেছেন, গ্রীস যদি ইউরোজোনে থাকতে চায়, তাহলে ‘হ্যাঁ’ ভোটের বিকল্প নেই। কিন্তু গ্রীসের ভোটাররা এই হুমকিকে সরাসরি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ইউরোজোন থেকে গ্রীসকে বের করে দেয়ার হুঁশিয়ারি তারা পরোয়া করেনি। ইউরোপীয় নেতাদের মুখের ওপর ‘না’ বলে দিয়েছে। তবে কয়েকজন ইউরোপীয় কর্মকর্তা ইতোমধ্যে হুঁশিয়ার করেছেন, আন্তর্জাতিক ঋণদাতারা না ভোটের অর্থ এই মনে করে যে গ্রীস অধিকতর আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। ভোটের পর গ্রীসের সঙ্গে অধিকতর আলোচনার ব্যাপারে ইউরোপীয় নেতারা ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন।
×