ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সেমাই

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ৬ জুলাই ২০১৫

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি  হচ্ছে সেমাই

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৪ জুলাই ॥ আসন্ন ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে গড়ে উঠেছে ভেজাল ও নিম্নমানের সেমাই তৈরির অর্ধ শতাধিক কারখানা। বিএসটিআইর অনুমোদন ছাড়াই যেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে এসব কারখানা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি এসব ভেজাল সেমাই ভোক্তাদের বিপদ ডেকে আনার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। রোজার শুরু থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেশকিছু সেমাই তৈরির কারখানা। ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্পনগরী ও আশপাশের এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা এসব কারখানায় খাদ্যদ্রব্য তৈরির জন্য বিএসটিআইর কোন অনুমোদন নেই। স্টিল, প্লাস্টিক, লোহাসহ বিভিন্ন কারাখানার ২/১টি রুম অস্থায়ী সেমাই তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ওইসব মৌসুমি কারখানা গড়ে তুলে ভেজাল ও নিম্নমানের লাচ্ছাসহ নানা ধরনের খাবার প্রস্তুত ও বিপণন করে চলেছেন। এখানে পণ্যের গুণগত মানের বিষয়টিও সংরক্ষণ করা হয় না। উৎপাদনে যাওয়া এসব অস্থায়ী কারখানায় গড়ে দৈনিক ২৫ থেকে ৮০ খাঁচি (প্রতি খাঁচিতে ১৮ কেজি) সেমাই উৎপাদন হচ্ছে। স্থায়ী কারখানাগুলোতে উৎপাদিত হচ্ছে গড়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ খাঁচি। এসব কারখানায় উৎপাদিত লাচ্ছা ও সেমাই রাতের আঁধারে চলে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলাসহ বিভিন্ন বাজারের খুচরা ও পাইকারি দোকানগুলোতে। সেখানে প্রতি খাঁচি লাচ্ছা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকায়। পরে তা সেখান থেকে বিভিন্ন এলাকার ছোট ছোট দোকানে চলে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কারখানাগুলোতে খুব গোপনে সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। যারা সেমাই তৈরির কাজ করে তাদের পোশাক আশাক ময়লাযুক্ত। কাজের সময় শ্রমিকদের হাতে গোবস ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও কোন শ্রমিককে গোবস ব্যবহার করতে দেখা যায় না। কাজ করতে করতে অনেকের ঘাম খামিরে প্রায় ঝড়ে পড়ে। এছাড়াও খোলা আকাশের নিচে সেমাই শুকানোর কারণে উড়ন্ত পাখির মলমূত্রও অনেক সময় সেমাইয়ে মিশে যায়। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম জানান, রং ও অন্যান্য কেমিক্যাল মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। খাদ্য দ্রব্যে মেশানো রং মানুষের পেটে গেলে তা গ্যাস্টিক, আলসার থেকে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
×