ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিরপেক্ষ ভোট হলে আওয়ামী লীগ ১০ আসনও পাবে না ॥ রিপন

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৫ জুলাই ২০১৫

নিরপেক্ষ ভোট  হলে আওয়ামী  লীগ ১০ আসনও পাবে না ॥ রিপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ থেকে উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্রগুলো তাদের ফান্ড সরিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিপন বলেন, ক্ষমতা হারালে আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার জন্য যে আসন দরকার তাও পাবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। কিন্তু আমরা চাই না ক্ষমতা হারানোর পর আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবেও না থাকুক কিংবা ধ্বংস হয়ে যাক। তবে তারা নিজেরাই নিজেদের পথকে সংকুচিত করছে এবং নিজেদের বিনাসের পথ তৈরি করছে। এক প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তাচ্ছিল্য করে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনীতি নাকি লেডিস ক্লাবে ঢুকে গেছে। আমরা নাসিম সাহেবের এ বক্তব্যর জবাবে বলতে চাই, বিএনপিকে মাঠে নামতে না দিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছেন। এটা কি আপনাদের ক্রেডিট না ফ্যাসিবাদী আচরণ, তা আপনার কাছেই জানতে চাই।’ রিপন বলেন, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, জাইকা ও ইউএনডিপি বাংলাদেশে একাধিক প্রকল্পের তহবিল প্রত্যাহার কিংবা বন্ধ করেছে। তিনি বলেন, সিটি করর্পোরশন নির্বাচন, উপজেলা, পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশ-বিদেশে কারও কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এ সব নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন সহযোগী দেশসমূহ সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেছিল। কিন্তু সরকারের আজ্ঞাবহ সেবাদাস নির্বাচন কমিশন তা করেনি। তদন্ত না করে তারা গেজেট প্রকাশ করেছে। কমিশন সরকারের সেবাদাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ কমিশন দিয়ে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়। তারা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এসব কারণে জনগণের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীরাও হতাশ হয়েছে। বাংলাদেশের সহযোগিতায় যে ফান্ড তারা দেয় তা দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা। সে দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়। রিপন বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীনসহ সকল কমিশনারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সকল গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। ওই নির্বাচন ছিল একটি ঘোষণা দেয়ার নির্বাচন। সে নির্বাচনে সামরিক ফরমানের মতো অনেককে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। তা হয়েছে সেবাদাস সিইসি রকিবউদ্দীন নামের লোকটির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ। এদিকে সুচিকিৎসার জন্য কারাবন্দী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান। রিজভী বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ দাবি করে তিনি বলেন বরাবরই তিনি একজন অসুস্থ মানুষ। গত পাঁচ মাসের অধিক সময় কারান্তরীণ থাকার ফলে তাঁর শারীরিক সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলেও সরকার তাকে যেতে দিচ্ছে না। ওমরাহ পালন করতে ৮ জুলাই সৌদি আরব যাচ্ছেন খালেদা জিয়া ॥ ওমরাহ পালন করতে ৮ জুলাই সৌদি আরব যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। একই সময়ে লন্ডন থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে যাবেন খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এরই মধ্যে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ওমরাহ পালনের যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে বলে শনিবার বিএনপি কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে। জানা যায় খালেদা জিয়া তার সফর সঙ্গীদের নিয়ে ৮, ৯ ও ১০ জুলাই পবিত্র মদিনা মনোয়ারায় অবস্থান করে মসজিদে নববিতে নামাজ পড়বেন। ১১ জুলাই ওমরাহ পালনের উদ্দেশে মক্কায় যাবেন। সেখানে ১১, ১২ ও ১৩ জুলাই অবস্থান করে ওমরা পালন করবেন। ১৩ জুলাই মক্কা মোকাররমায় পবিত্র লাইলাতুল কদরের নামাজ আদায় করবেন এবং ওই রাত ইবাদতের মাধ্যমে পার করবেন। এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছেলে তারেক রহমান, ছেলেবউ ডা. জোবাইদা রহমান ও নাতনি জায়মা রহমানও থাকবেন। সৌদি আরবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মধ্যে বিএনপির রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। ১৪ জুলাই খালেদা জিয়া দেশের উদ্দেশে এবং তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে সৌদি আরব ছাড়বেন বলে জানা গেছে। গাজীপুরের সিটি মেয়র মান্নানের মুক্তি দাবি ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নানের মুক্তির দাবি করেছে মান্নান মুক্তি পরিষদ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে আসন্ন ঈদের আগেই তাকে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, মেয়র মান্নান কারাগারে থাকার কারণে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অনেক উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে জনগণ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মান্নান মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক আহমেদ আলী রুশদী, সদস্য সচিব মাহমুদ হাসান রাজু, গাজীপুর বার এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ উজ্জামান, গাজীপুর সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বশির আহমেদ প্রমুখ।
×