ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ মিয়ানমার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অসম নিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠন তৎপরতা শুরু;###;ধৃত ১২ সাবেক হুজি জঙ্গীর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি;###;১ জেলার এক শ’ কর্মী সংগ্রহ করে জঙ্গী প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা

উপমহাদেশে একিউআইএসের নীলনক্সা ॥ বঙ্গে আইএস রাজ্য!

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৫ জুলাই ২০১৫

উপমহাদেশে একিউআইএসের নীলনক্সা ॥ বঙ্গে আইএস রাজ্য!

শংকর কুমার দে ॥ বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসমসহ কয়েকটি প্রদেশ নিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করার উদ্দেশে তৎপরতা শুরু করে ভারতীয় উপমহাদেশের আল কায়েদা (একিউআইএস)। এ জন্য সিরিয়া ও ইরাকের আইএস হেডকোয়ার্টারে যোগাযোগ করে জঙ্গীরা। সিরিয়া ও ইরাকের আইএস সদর দফতরে প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ থেকে জঙ্গী সংগ্রহ করে যাচ্ছিল। আইএস যেভাবে যুক্তরাজ্য থেকে ১২ সদস্যের একটি পরিবারকে জিম্মি করার মতো বাংলাদেশের কোন পরিবারকে অপহরণ করে জিম্মি করার নীল নকশার ছক তৈরি করে সংগঠনটি। এ জন্য বড় ধরনের বাংলাদেশের অন্তত ১০ জেলায় ১শ’ জঙ্গীকে যুক্ত করে তৎপরতা শুরু করে ভারতীয় উপমহাদেশের আল কায়েদা (একিউআইএস)। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি প্রদেশ ও দেশ নিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করার উদ্দেশে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত আইএসের হেডকোয়ার্টারে যোগাযোগ করে তারা। বড় ধরনের নাশকতার উদ্দেশে ‘দাওয়াতি তবলীগ’, ‘বায়াতে ফি ছাবিলিল্লাহ’, ‘দ্বীন কায়েমের সাথী’- মূলত এই তিন ধাপে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মী সংগ্রহ করে একিউআইএস। একিউআইএসের অন্য জঙ্গীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করছে র‌্যাব। একিউআইএসের বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী ও সাবেক হুজি নেতা মুফতি মাইনুল ইসলাম এবং একিউআইএসের উপদেষ্টা মাওলানা জাফর আমিনসহ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করার পর ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এই ধরনের তথ্য পেয়েছেন তদন্ত সংস্থা র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট। র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ শনিবার দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, একিউআইএসের গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, দেশের ভেতরে বরিশাল, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুরসহ অন্তত ১০ জেলায় তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা বিস্তৃত করে ১শ’রও বেশি কর্মী সংগ্রহ করেছে। এই সংগঠনটির নেতৃত্ব সিরিয়া ও ইরাকে যে একিউআইএসের যে হেডকোয়ার্টার আছে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেই কর্মী সংগ্রহ ও তৎপরতা শুরু করে। সিরিয়া ও ইরাকের সদর দফতরে বাংলাদেশের কর্মীদের পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে আইএস স্টাইলে ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারকৃতদের রাজধানীর দারুস সালাম থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব তথ্যাদি দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সহায়তাও করছে বলে জানান র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, যেভাবে সিরিয়া ও ইরাকে পৃথক ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে, তারাও সেই একইভাবে উপমহাদেশে একিউআইএস সংগঠন করে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশ নিয়ে পৃথক ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের জন্য তৎপরতা শুরু করে। রাজধানী ঢাকায় তারা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান চালু করে সংগঠনের ফান্ড তৈরির জন্য ঢাকার আশপাশে তৎপরতা চালায় তারা। আল কায়েদা ও আইএস শাখার (একিউআইএস) ‘দাওয়াতি তবলীগ’-এ মূলত যে তিন ধাপে কর্মী সংগ্রহ হতো; তার মধ্যে ‘দ্বীন কায়েমের সাথী’, ‘বায়াতে ফি ছাবিলিল্লাহ ও ‘শহিদী কাফেলা’ ‘আল্লাহর পথে দাওয়াতি কার্যক্রম’ চালাতে ইমানী দায়িত্ব পালনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাদের সিরিয়া ও ইরাকের সদর দফতরে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়। যাদের ইমান ‘শক্ত’ এবং জিহাদে ‘শহীদ’ হওয়ার জন্য প্রস্তুত, তারাই শহিদী কাফেলার অন্তর্ভুক্ত হতে পারত বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে র‌্যাবকে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, একিউআইএস ভয়ঙ্কর জঙ্গী তৎপরতার রেশ এখন বাংলাদেশের দিকে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে গ্রেফতারকৃতদের। গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানে তাদের শাখা গঠন করার পর সিরিয়া ও ইরাকের সদর দফতরের নির্দেশে বাংলাদেশের ভেতরে শাখা গঠন করে কর্মী সংগ্রহের মাধ্যমে তৎপরতা শুরু করে তারা। এ জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কারাগারসহ বিভিন্ন কারাগারে আটক জেএমবি, হুজি, হিযবুত, আনসারুল্লাহ বাংলাটিমসহ জঙ্গী সংগঠনগুলোর নেতৃস্থানীদের ছাড়িয়ে আনার জন্য কারাগারভিত্তিক বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নেয়া হয়। কারাগারে আটক জঙ্গী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে চিঠিপত্রকে বেছে নেয়া হয়। র‌্যাবের অভিযানে তাদের দেয়া চিঠি আটক হয়ে যাওয়ার পর কারাগারে নাশকতার পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়। সিরিয়া ও ইরাকে সক্রিয় এই জঙ্গী সংগঠনটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা এবং উপসাগরীয় এলাকায় ভয়ঙ্কর জঙ্গী তৎপরতায় যুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশে তৎপরতা শুরু করার পর্যায়ে ধরা পড়ে একিউআইএসের বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী ও সাবেক হুজি নেতা মুফতি। র‌্যাব-৪ বুধবার রাজধানীর সদরঘাট থেকে একিউআইএসের বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিম ওরফে নানা ওরফে বদিউল, উপদেষ্টা মুফতি জাফর আমিন ওরফে সালমান, সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, মোঃ মোশাররফ হোসেন ও আব্দুল রহমান বেপারীকে আটক করে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সক্রিয় সদস্য আল আমিন ওরফে ইব্রাহিম, মোজাহিদুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও মোঃ হাবিব উল্লাহকে আটক করা হয় এবং মিরপুর-১-এর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৮ নম্বর বর্ধনবাড়ির ভাড়া করা বাসায় অবস্থানরত মোঃ শহিদুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেনকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনাসহ নাশকতার জন্য মজুদ করা বিস্ফোরকদ্র্রব্য ও ক্ষুদ্রাকৃতির অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ জানান, একিউআইএসের জঙ্গী সংগঠনটিতে যারা অর্থ যোগান ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছে তাদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যেই একিউআইএসের অন্য জঙ্গীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালানা করা হচ্ছে। একিউআইএসের বড় ধরনের নাশকতার নীল নকশাসহ সার্বিক তৎপরতার বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ১২ সদস্য ॥ যুক্তরাজ্য প্রবাসী ১২ সদস্যের ওই পরিবার দেড়মাস ধরে যুক্তরাজ্য থেকে নিখোঁজ থাকার বিষয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশী একটি পরিবার চরমপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাছে রয়েছে। পরিবরাটির ১২ সদস্য হচ্ছেন, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান (৭৫) এবং তার স্ত্রী মিনেরা খাতুন (৫৩), তাদের কন্যা রাজিয়া খানম (২১) এবং পুত্র মোহম্মাদ জায়েদ হুসাইন (২৫), মোহাম্মদ তৌফিক হুসাইন (১৯), মোহাম্মদ আবিল কাশেম সেকার (৩১) ও তার স্ত্রী শাইদা খানম (২৭), মোহাম্মদ সালেহ হুসাইন (২৬) ও তার স্ত্রী রোশনারা বেগম (২৪) এবং ১-১১ বছর বয়সী তিন শিশু। বিবিসি ধারণা করে বলেছে, বাংলাদেশী ওই পরিবারের পক্ষে আইএসের কোন এক যোদ্ধা পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পরিবারটিতে তিন শিশুও রয়েছে, যাদের বয়স ১-১১ বছর। বিবৃতিতে বলা হয়, পরিবারটিকে জিম্মি করা হয়েছে এবং আইএসে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশ হয়েছিল তা ‘লজ্জাজনক’। এমনকি বিবৃতিতে বলা হয়, যে কোন সময়ের চেয়ে এখন নিরাপদ রয়েছে পরিবারটি। বিশ্বের সব মুসলিমকে আইএসে যোগ দিতে এবং ‘আল্লার প্রতি অনুগত’ থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। বিবৃতিপত্রে বাংলাদেশী পরিবারটির সদস্য মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের দুটো ছবিও যুক্ত রয়েছে। বিবিসি বলছে, বিবৃতিপত্রে উল্লেখিত তথ্যাদির সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তারা সিরিয়া নাকি ইরাকে রয়েছেন তাও স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ায় রয়েছেন তারা। গত ১৭ মে লুটন থেকে বাংলাদেশী পরিবারটি নিখোঁজ হয়। এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, তারা সিরিয়া পাড়ি দিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, আইএসের হয়ে যুদ্ধ করছেন এমন এক ব্রিটিশ নাগরিক তাদের বিবৃতিপত্রটি দিয়েছেন। সেখানে লেখা রয়েছে- পরিবারটি এমন এক ভূমিতে এসে পৌঁছেছে, যে ভূমি দুর্নীতিমুক্ত এবং হয়রানিমুক্ত। কেউ তাদের বাধ্য করেনি আইএসে যোগ দিতে। পরিবারটির নিখোঁজ হওয়ার খবর পুলিশকে দিয়েছিলেন মান্নানের প্রথম পক্ষের দুই ছেলে যারা লুটনে বাস করেন। পরিবারটি ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশে যুক্তরাজ্য ছাড়ে। বাংলাদেশ থেকে তারা ১১ মে ইস্তাম্বুল যান। তিনদিন পর তাদের হিথরোতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা আর ফেরেনি। ধারণা করা হচ্ছে, মিস খানম নিষিদ্ধঘোষিত আল মুহাজিরুনের সদস্য। এই সংগঠনের বেশ কিছু সদস্য লুটনে রয়েছেন। মোহাম্মদ সেকার (৩১) ও মোহাম্মদ তৌফিক হুসাইন (১৯), নিখোঁজ। এর আগে গত ৯ জুন ৯ শিশুসহ তিন ব্রিটিশ বোন সিরিয়া পাড়ি দিয়েছিল বলে খবর পাওয়া গিয়েছিল। আইএসের একটি সূত্র বিবিসিকে জানায়, দুটো দলে ভাগ হয়ে ওই পরিবারটি সিরিয়ায় পৌঁছেছে। এরও আগে স্কুলপড়ুয়া তিন ব্রিটিশ বালিকা সিরিয়ায় পাড়ি দেন। এদের মধ্যে দুইজন বাংলাভাষী ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ জুন সিরিয়া ও ইরাকে খেলাফত রাষ্ট্র ঘোষণা করে আইএস। বর্তমানে দেশ দুটোর বড় অংশ তারা দখলে নিয়েছে। উদ্ধার করা চিঠির সারাংশ ॥ আল কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করার ব্যাপারে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অপারেশন কমান্ডার হুজি নেতা জান্দালের লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। চিঠিটি জান্দাল একটি মামলার শুনানিকালে আদালত প্রাঙ্গণে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) বাংলাদেশী প্রধান সমন্বয়ক ও হুজি নেতা মাওলানা মাইনুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। ওই চিঠিতে দলের সদস্যদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা ও নির্দেশনা লিখেছেন জান্দাল। চিঠিটি কারাগারে বসে জান্দাল নিজ হাতে লিখেছেন। ওই চিঠিতে জান্দাল বলেছেন, ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও একিউআইএস বাংলাদেশী প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা মাইনুল ইসলামকে উদ্দেশ করে লিখেছেন যে, ‘আমি অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি যে, জেলখানা থেকে আমরা যত কথা মোবাইলের মাধ্যমে বলে থাকি, সব গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন শুনে থাকে। এর অনেক প্রমাণও আমরা পেয়েছি। তাই আপনাদের, আমাদের সকলের মঙ্গলের জন্য কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে জিহাদী কোন বিষয়, সাথীদের বিষয় মোবাইলে আলাপ না করে প্রত্যেকের জন্য একটি করে ফেক নাম রাখতে হবে। যে নামে আমরা তাকে ডাকব।’ চিঠিতে হুজি সদস্য আলতাফের ছদ্মনাম আল মামুন, হাবিবের ছদ্মনাম ত্ত্বহা, ফেদাউল ইসলামের ছদ্মনাম লেলিন, মুফতি জাফরের ছদ্মনাম সালমান রাখেন জান্দাল। আবার ঐ চিঠিতে মওলানা মাইনুল ইসলামকে উদ্দেশ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা (তিনিসহ কয়েকজন) জেল থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করছি, আর এ কাজে আপনাকে ও হাবিবকে কাজে লাগাব বলে ভাবছি। আপনারা রাজি থাকলে কি করতে হবে পরে চিঠি দিয়ে জানাব। এই ব্যাপারটা আপনারা দুজন ছাড়া কেউ যেন না জানে। এমনকি লেলিন ভাইও নয়। তাকে যদি বলতে হয় তো আমি বলব। কারণ, তাকে বলতে গেলে মোবাইলে বলতে হবে যা খুবই ক্ষতিকর। আপনারা রাজি কি-না তা জানতে আমি শুধু আপনাকে জিজ্ঞাস করব। আপনারা নতুন বই কিনতে রাজি কি-না এ বিষয়ে হাবিবের সঙ্গে কখনই মোবাইলে কথা বলবেন না। সরাসরি দেখা করে বলবেন। তাতে যত দেরিই হোক না কেন। লেলিনকে যা বলতে বলেছি তা আপনার মোবাইল থেকে বলবেন না, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমার সঙ্গে চিঠি দিয়ে শেয়ার করবেন। একটি কাগজের ব্যাগের নিচে আঠা দিয়ে চিঠি রাখবেন এবং ব্যাগে কিছু একটা দিয়ে কোন উকিল বা ড্রাইভারের কাছে দেবেন। যেমন আজ আমি দিয়েছি। আমাদের এই কোর্টে বিভিন্ন বিভাগের গোয়েন্দা থাকে। তাই ওই দিনের মতো সরাসরি কথা না বলাই ভাল।’
×