ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভিলিয়ার্সকে নিয়েই যত আতঙ্ক!

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৫ জুলাই ২০১৫

ভিলিয়ার্সকে নিয়েই যত আতঙ্ক!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ডি ভিলিয়ার্স এখন যে কোন দলের জন্যই মূর্তিমান আতঙ্ক। বাংলাদেশের জন্যও কি নয়? তাই বলে এমন আতঙ্ক! বাংলাদেশ কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহের কথাই ধরুন না, তিনি বলেছেন, ‘এবির (ডি ভিলিয়ার্স) জন্য একটা কথাই বলা যায়, বল করা আর প্রার্থনা করা, যাতে সে আউট হয়! সে সম্ভবত এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান। পরিপূর্ণ এক ব্যাটসম্যান। ওর মতো ব্যাটসম্যানের জন্য পরিকল্পনা করা যায় না। ভাল জায়গায় বল রেখে ওকে আটকে রাখা যায়। যতটা সম্ভব উইকেটে ওকে বেঁধে রাখার পরিকল্পনা করা যায়। এতে যদি কাজ হয়। আর যাই হোক, সেও তো মানুষ!’ হাতুরাসিংহের এ কথাগুলোতেই বোঝা যাচ্ছে, ভিলিয়ার্সকে নিয়ে কতটা ভয়ও কাজ করছে। আবার বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক এ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে স্পিনার এ্যারন ফাঙ্গিসোই যেমন বলে দিয়েছেন, ‘আমি ভবিষ্যদ্বাণী করব না। কিন্তু সে (ভিলিয়ার্স) খুব ভাল খেলোয়াড়। আমার মনে হয়, সে তাই করবে যা তার করা উচিত। এই সিরিজে আমাদের জয়ের জন্য যা দরকার সে তাই আমাদের দেবে।’ ডি ভিলিয়ার্স বর্তমানে দ্রুততম অর্ধশতক, শতক এবং দেড় শতক রানের অধিকারী। সর্বশেষ বিশ্বকাপেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দানবীয় ইনিংস খেলে ৬৬ বলে করেছিলেন ১৬২ রান। এর আগের সিরিজেই ৪৪ বলে করেছিলেন ১৪৯ রান। তাই ডি ভিলিয়ার্সকে নিয়ে আলাদা করে ভাবতেই হচ্ছে টাইগারদের। ডি ভিলিয়ার্স যদি তার ছন্দে খেলেন তাহলে চরম দুর্ভোগই অপেক্ষা করছে বাংলাদেশী বোলারদের জন্য। তাই ভিলিয়ার্সকে দ্রুত আউট করাই এখন বাংলাদেশের বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। সেই চ্যালেঞ্জ শুধু বাংলাদেশই নয়, এখন বিশ্বের সব দলকেই নিতে হয়। কিন্তু এমনটি কেন হচ্ছে? শুরুতে ভিলিয়ার্স তেমন আলোচনায় না এলেও বর্তমানে তাকে নিয়েই তো সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা অলরাউন্ডারদের একজন জ্যাক ক্যালিস সেই রহস্যের কথা বলেছেন। জানিয়েছেন ভিলিয়ার্সকে বর্তমানে এ অবস্থায় দেখে বিস্মিত না হওয়ার বিস্ময়কর তথ্য! বলেছেন ভিলিয়ার্সের বদলে যাওয়ার কাহিনীও, “রাতারাতি যারা নায়ক বনে যায়, তাদের গড়ে উঠতে আসলে অনেক সময় লাগে। পুরনো এই প্রবাদ এবি ডি ভিলিয়ার্সের ক্ষেত্রে একদম সত্য। বছরের পর বছর ধরে সে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে চলেছে। রেকর্ড ভাঙ্গার প্রদর্শনী মেলে ধরেছে। যদিও গোটা বিশ্বের আগ্রহ ও মনোযোগের কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে সাম্প্রতিক সময়ে। লোকে ওকে নিয়ে কথা বলছে। সাম্প্রতিক সময়ে গতিটা আসলেই বাড়িয়েছে এবি। তবে সত্যি বলতে, আমি একটুও বিস্মিত নই। ২১ বছর বয়সেই ও যা পারত, আর কেউ তা পারত না। কথাটি অবশ্য ওর আট বছর বয়স থেকেই বলা হচ্ছিল। মাত্র একটিই সমস্যা ছিল। এটা শেখা যে, ‘কখন ও কোথায়’। সবকিছুই করতে পারত সে, সবকিছু। শুধু জানত না কখন, কোন্ পরিস্থিতিতে করতে হবে। সেটা বুঝতে পারল ২০০৮ সালে। আমি বলব ওর ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে মিডঅনে আলতো এক ক্যাচ দিয়ে আউট হলো বাজেভাবে। এরপর অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ ও কোচ মিকি আর্থার ওর সঙ্গে কথা বলল। একদম খোলামেলা কথা, কোন রকম শিথিলতা ও সহানুভূতি না দেখিয়ে। ওরা বলেছিল যে, ‘তোমার এখন সময় হয়েছে প্রতিভার প্রমাণ পারফরমেন্সে দেখানোর। করে দেখাও।’ হেডিংলিতে পরের ম্যাচেই এবি ১৭৪ করল। আমাদের জয়ের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল ওই ইনিংস। তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, বুঝতে শিখেছিল যে প্রতিভার পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়।’ শুরু হয়ে গেল ভিলিয়ার্সকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো। যে আতঙ্কে এ সিরিজে ভুগবে বাংলাদেশও!”
×