ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এবারের বিষয় ॥ স্থবির রাজপথ

সমাজ ভাবনা

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২ জুলাই ২০১৫

সমাজ ভাবনা

রাজপথের সেবা নিশ্চিত হোক শাহ আলম বাচ্চু যারা রাজপথ নিয়ন্ত্রণ করে তারাই জনগণের চলাচলের নিরাপদ পথ দেবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ আমরা নিজের স্বার্থে দেশ ও দশের স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছি। প্রত্যেক জায়গায় আজ স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। রাজপথে যানজট যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়েছে। যানজট বা রাজপথ স্থবির কেন হচ্ছে তা মন ও মগজ দিয়ে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। রাজপথে যারা লাল নীল বাতি জ্বালিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে তারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। সামান্য পরিমাণ অর্থের জন্য গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে পেছনের গাড়ি সামনে, সামনের গাড়ি পেছনে চলতে সাহায্য করে। অবৈধ গাড়িগুলো নিরাপদে চলাচল করে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত নগরায়ন যানজট সৃষ্টিতে বেশি দায়ী। লক্ষ করলে দেখা যায় সারাবছর রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলতেই থাকে। এছাড়া বিভিন্ন লাইন যেমন ওয়াসার পানির লাইন, বিটিসিএলের লাইন, ডেসকো, পিডিবির লাইন, তিতাস গ্যাস কোম্পানির লাইন নিয়ম না মেনেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। এতে যানজট সৃষ্টি হয়। দিন দিন আমাদের দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে। কর্মসংস্থানের জন্য গ্রাম থেকে শহরে লোকজন ঝুঁকছে বেশি। এতে মানুষের চাপ বাড়ছে। অনুমোদনহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। তাছাড়া রাস্তার ট্রাফিক আইন না মানা, অবৈধভাবে ফুটপাথ দখল করা, ইচ্ছেমতো গাড়ি ছাড়ার প্রবণতা। রাস্তার মাঝে কাউন্টার তৈরি করে লাইন ধরে লোক উঠানো; ফ্লাইওভার ব্যবহার না করা। রাজনৈতিক ব্যক্তির জনসভা বা ঘনঘন তোরণ নির্মাণ ইত্যাদি কারণে আজ রাজপথ যানজট স্থবির। এই যানজটে মানুষ আজ ভোগান্তির শীর্ষে অবস্থান করছে। জীবন হয়ে উঠছে দুঃসহ ও যন্ত্রণাময়। রাজপথ হচ্ছে স্থবির। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে ব্যাহত। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। অসুস্থ’ ব্যক্তি বেশি অসুস্থ হচ্ছে কারণ সঠিক সময়ে হাসপাতালে যেতে পারছে না। সারাদিন কাজ করে নির্বিঘেœ বাসায় ফিরতে পারছে না। অফিসে দেরি হওয়ায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন অনেকে। নানা সমস্যা এই যানজটের জন্য হচ্ছে। স্কুল কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেশি। কারণ তাদের ক্লাসে সময়মতো যেতে পারছে না। এরকম হাজারও সমস্যা আর ভোগান্তির কারণ যানজটে রাজপথ স্থবির। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে দরকার সবার আগে মানবিকতা ও দায়িত্ববোধ। আমরা যেখানেই যে পদে থাকি না কেন আমাদের মানবিকতাকে উর্ধে তুলে রাজপথের সেবা করতে হবে। এর অপকার সম্পর্কে বলতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। রাজপথে যারা দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে। রাধানগর, পাবনা থেকে কষ্টের রাজপথ বেনজীর পায়েল জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েই চলেছে নিত্য নতুন যানবাহন। গলি থেকে রাজপথ শুধু যান বাহন আর যানবাহন। এমন সময় ছিল মানুষকে হেঁটে যেতে হতো মাইলের পর মাইল। এখন ঘর থেকে দ’ুপা ফেলতে পেয়ে যায় নানা ধরনের যানবাহন। রাস্তার আকার আয়তনের চেয়ে এত বেশি যানবাহন বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ভারে রাস্তাঘাট হয়ে যাচ্ছে স্থবির। যানজট মানুষকে আরও অলস বানিয়ে দিচ্ছে। এই রমজান মাসে আরও বেড়ে গেছে যানজট। মানুষ সারাদিন রোজা নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের পর উর্ধশ্বাসে বাড়ি ফেরে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ইফতারি করবে। সাক্ষাত হবে এ আশায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস রাজপথের এই যানজট দেয়াল হয়ে বাদ সাধে পথচারীদের মাঝে। যথাসময় হাসপতালে পৌঁছতে না পারায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কত মা ও শিশু। কত রোগীকে বিদায় নিতে হয় অসময়ে এই রাজপথে। প্রতিনিয়ত নীরব রাজপথ এত কষ্ট, যন্ত্রণা সইতে সইতে স্থবির হয়ে পড়ছে। কুড়িগ্রাম থেকে যানজটের কবলে গোটা দেশ অমিত দাস যানজট আধুনিক যান্ত্রিক নাগরিক জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো থেকে শুরু করে বিশ্বরোড, মহাসড়ক তথা প্রায় প্রতিটি জনপদের জনগণই আজ যানজটের কবলে জিম্মি হয়ে পড়েছে। রাজপথে যানজট কোন ছোটখাটো সমস্যা নয় যে, রাতারাতি এর সুরাহা বা এর সমাধান বাতলে দেয়া যাবে। মনে হচ্ছে, বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যানজট সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। বিশেষ করে রাজধানীতে এবং যোগাযোগ খাতে পরিবর্তন আসছে। মহাখালী ফ্লাইওভার ও কুড়িল ফ্লাইওভার নির্মাণ, বেশি যানজট হয় এমন পয়েন্টসমূহ শনাক্ত করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহÑ এ রকম রোডগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। এমনকি ঢাকা-ময়মনসিংহ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। নগরে বসবাস করতে গিয়ে নাগরিক জীবনে যেমনি অনেক আরাম-আয়েশ, বিলাস-ব্যাসন পাওয়া যায় তেমনি অনেক হ্যাপাও রয়েছে। কবিগুরু রবিঠাকুর তাঁর নগর সঙ্গীত কবিতায় ঠিক এভাবে বললেনÑ ওই রে নগরী জনতারণ্য-শত রাজপথ, গৃহঅগণ্য, কতই বিপণি কতই পণ্য, কত কোলাহল কাকলি! কত-না অর্থ কত অনর্থ আবিল করিছে স্বর্গমর্ত, তপনতপ্ত ধূলি-আবর্ত উঠিছে শূন্য আকুলি। এটা আমাদের নগরগুলোর স্বাভাবিক চিত্র যে, ফুটপাথ ও কর্মব্যস্ত কলকোলাহল কোরবানির পশুর হাট, মেলা বসানো অবৈধ দখলদাররা রাস্তার পাশে সরকারী জমিগুলো অবৈধভাবে দখল করে থাকে, যা যানজটের প্রধান কারণ। তাছাড়া গ্রাম থেকে কাজের সন্ধানে শহরে লোকজনের স্থানান্তর এবং অপরিকল্পিত নগরায়ন যানজট সমস্যাকে দিন দিন বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে ক্লান্তিহীন কর্মব্যস্ত আধুনিক যান্ত্রিক মানুষ অস্বাভাবিক অবিরাম গতিতে ছুটে চলেছে। তার দম নেয়ার একদম অবকাশ নেই। কেননা সে সময়কে বাঁচাতে চায়, গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে চায় দ্রুত। বাহন হিসেবে সে বেছে নেয় রিক্সা, অটোরিক্সা, বাস, হোন্ডা, ট্রাক, প্রাইভেটকার, সিএনজি। হাঁটার সামান্য পথটুকুও মানুষ এখন আর হাঁটতে চায় না। সকাল-সন্ধ্যায় শহরগুলোতে রাজপথ দাবড়ে বেড়ায় অজস্র যানবাহন। এই গতিময় রাজপথও কখনও কখনও থমকে যায় আটকে থাকা গাড়ির ভিড়ে। সৃষ্টি হয় দুঃসহ স্থবিরতা, রাজপথে যার নাম অসহনীয় যানজট। গাড়ির ভিড়ে একটানা বাজতে থাকা গাড়ির হর্ন, ধুলাবালি, পোড়া পেট্রোল, ডিজেলের উতকট গন্ধ, কার্বনডাই অক্সাইডে মনে হয় যেন এখনই দম বেরিয়ে যাবে, জীবন প্রদীপ নিভে যাবে অক্সিজেনের অভাবে। গরমের দিনে অবস্থা আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, মানুষ ক্লান্ত হয়ে হাঁসফাঁস শুরু করে দেয়। সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে রাজপথের যানজটকে সামাজিক সমস্যা বলেই অভিহিত করব। কেননা তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ, যার ওপর অত্যধিক জনসংখ্যার চাপ রয়েছে। তাছাড়া এখানে উন্নত বিশ্বের মতো নগরগুলোও পরিকল্পিত উপায়ে গড়ে ওঠেনি। এখানে শহরের আয়তন, লোক সংখ্যা, রাস্তার পরিমাণ, রাস্তায় চলাচলকৃত যানবাহনের সংখ্যাÑ এগুলোর মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। আর এই সমন্বয়হীনতা যানজটের মতো একটি ভারসাম্যহীন জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে আমি মনে করি সওজ, রাজউক, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিআরটিসি, বিটিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে যানজট নিরসনে। বাংলাদেশে সব খাতের মতো যোগাযোগ খাতেও রয়েছে দুর্নীতির দৌরাত্ম্য। বিভিন্ন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্তাব্যক্তি দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে। লাইসেন্সবিহীন গাড়ি রয়েছে, অদক্ষ নবিস চালকও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছে। রোড পারমিট পাচ্ছে। এগুলো নিশ্চয়ই সমীচীন নয়। জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, কোন্ কোন্ রোডে যানবাহনের ধারণক্ষমতা কেমন। তাই আমি বলব রাজপথের উন্নয়নের পাশাপাশি ট্রাফিক আইন বলবৎ করতে হবে, ট্রাফিক সার্জেন্টকে কর্তব্যপরায়ণ সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। রাজপথে স্থবিরতা বা যানজট প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলেও এ কথা নিঃসঙ্কোচে বলা যায় এটা মানবসৃষ্ট সামাজিক দুর্যোগ। চন্দ্রনাথ ডিগ্রি কলেজ, নেত্রকোনা বড় অপচয় মাইকেল হেম্ব্রম একজন মনীষী বলেছেন যে, ‘পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অপচয় হচ্ছে সময়ের অপচয়।’ যানজটের ফলেই নষ্ট হচ্ছে কত হাজারও মানুষের মহামূল্যবান কর্মঘণ্টা। আবার কত মুমূর্ষু রোগীকে হারাতে হয় তাদের মূল্যবান জীবন। কত চাকরিজীবীকে অফিসে হতে হয় অপদস্ত। কত স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীদের খেতে হয় স্যারদের বকুনী। কেউই পৌঁছতে পারে না ঠিকমতো তাদের গন্তব্যস্থলে। কিন্তু এই স্থির রাজপথ, স্থবির হয়ে সব কিছুর নীরব সাক্ষী হয়ে রয়ে যায়। কাকরাইল, ঢাকা থেকে যানজট লাঘবের উপায় রহমান তৌহিদ রাজধানী ঢাকার ট্রাফিক জ্যামে বসে কারও কারও মনে হতে পারে ফ্লাইওভার, ওভারপাস, ফুটওভার ব্রিজ আর আধুনিক সিগনাল বাতির কোন প্রয়োজন আছে কি? এগুলো না থাকলেই বোধ হয় জ্যাম আরও কম হতো। রাস্তার মোড়ে হাত উঁচিয়ে সেই বাঁশি ফু দেয়া ট্রাফিক, তারপর ইচ্ছেমতো সুইচ অফ অন করে লালবাতি সবুজবাতির খেলা। রিক্সাওয়ালার ওপর চড়াও হওয়া আর টু পাইস কামানো। এ কথা সত্য, লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা বাস, টু স্ট্রোক ইঞ্জিনের বেবি ট্যাক্সির চোখ জ্বলার দিন শেষ করে আধুনিক ঢাকার জনপরিবহন একটা পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। রাজধানী ঢাকার যানজট নিয়ে যতই রসিকতা করি আর বিরক্তিই প্রকাশ করি না কেন, এটা নিয়েই আমাদের থাকতে হবে। কেউ কেউ মনে করছে, এটাই ভবিতব্য। কেউ কেউ আবার মনে করেন, যানজট নিরসন করা সম্ভব না হলেও ভোগান্তি কিছুটা লাঘব করা যেতে পারে। এ রকম এক নগণ্য নাগরিক যানজট লাঘবের কিছু উপায় তুলে ধরছে- ১. রাজধানীতে চলাচলের উপযুক্ত যানবাহন চিহ্নিতকরণ। লেগুনা মার্কা যানবাহন ব্যাটারিচালিত রিক্সার মতো অপসারণ করতে হবে। ফিটনেসবিহীন বা অতিপুরাতন যানবাহন রাজধানী থেকে বিদায় করতে হবে। অনুকূল পরিবেশ পেলে এ খাতে নতুন বিনিয়োগে অর্থের অভাব হবে না। ২. রিক্সা চলাচল মহল্লার মধ্যে সীমিত রাখার ব্যবস্থা করা। মূল সড়কগুলোতে কোনভাবেই রিক্সা বাইপাস দেয়া যাবে না। ফলে দূরের রাস্তায় রিক্সা ভ্রমণ নিরুৎসাহিত হবে। ৩. মূল সড়কগুলোতে গণপরিবহন সংখ্যা বাড়াতে হবে। সরকারী প্রতিষ্ঠান বিআরটিসির বাস সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। ৪. ট্রাফিক বিভাগকে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। দক্ষ জনবল, আধুনিক সিগনাল সিস্টেম, ডিএমপি কমান্ড সেন্টার সবই আছে, তবুও মাঝে মাঝেই কোন কিছুই কাজ করে না। প্রয়োজন সমন্বয় আর পেশাদারিত্ব সদিচ্ছা। ৫. ফুটপাথ ও রাজপথ অবৈধ মালামাল ও হকারমুক্ত করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আর বিশেষ দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলের মিছিল ও সমাবেশজনিত যানজট নিরসন করার জন্যও প্রয়োজন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগ, ঢাকা থেকে বেদখল রাস্তায়... গোপেশ চন্দ্র সূত্রধর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হওয়ায় সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত ইত্যাদির মূল কেন্দ্র। ফলে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণির মানুষই এই ঢাকা শহরে দিকে প্রতিনিয়ই ধাবিত হচ্ছে। এছাড়া আরও একটি কারণ,Ñ আজ গ্রামে যারা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে তারও কৃষির মৌসুম শেষ হলে পর তাদের আর অন্য কোন কর্মসংস্থান না থাকায় তারাও জীবিকার তাগিদে ঢাকা কিংবা অন্য কোন শহরের দিকে পা বাড়াচ্ছে। এইভাবে শহরগুলোতে যেমন জনসংখ্যা বাড়ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। অন্য দিকে সারা বছর ধরেই চলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রাস্তা খুঁড়াখুঁড়ির কাজ। কোন সময় গ্যাস লাইনের, কোন সময় টেলিফোন লাইনের, কোন সময় ওয়াসার পানির লাইনের কাজ চলছে। এদের একটার পর একটার কাজ সারা বছর ধরেই লেগে আছে। এর মূল কারণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা। অপরদিকে অপরিকল্পিতভাবে আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠার কারণে রাস্তার প্রশস্ততা কমে গিয়েও যানজট সৃষ্টি করছে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, কোথাও কোথাও কিছু কিছু অনৈতিক মানুষ নিজের বিবেক ও নীতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে দোকানপাট তৈরি করেছেন। যার ফলে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যেখানে গাড়ি পার্ক করার কথা নয়, সেখানেও গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়। ট্রাফিক পুলিশ তা দেখেও যেন দেখছেন না। তাদের কর্তব্যের অবহেলার কারণও কম দায়ী নয়। এই সমস্ত কারণেই ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরগুলোতে যানজট সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করে এই সমস্যা নিরসন করা খুবই জরুরী। সিলেট থেকে
×