ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৃষ্টি কমেছে, বেড়েছে নদী ভাঙ্গন- জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ২৯ জুন ২০১৫

বৃষ্টি কমেছে, বেড়েছে নদী ভাঙ্গন- জনদুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টির পরিমাণ হ্রাস পেলেও বেড়েছে নদী ভাঙ্গন। কমেনি জনদুর্ভোগ। রবিবারও দেশের অনেক জেলায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকে। কক্সবাজারসহ বেশকিছু জেলার বন্যার উন্নতি ঘটেছে। তবে রবিবারও পানিবন্দী থাকে অনেক জেলার কয়েক লাখ মানুষ। যমুনা নদীর ভাঙনে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অজুর্নাসহ ৪টি ইউনিয়নের ৫ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণে রবিবারও মংলা বন্দরে পণ্য উঠানামা ব্যাহত হয়। দিনভর আকাশ মেঘলা থাকলেও রাজধানীতে তেমন বৃষ্টিপাত ছিল না। তবে নগরীর নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর হয়নি। আজ সোমবারও দেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে। জুনে ইতোমধ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, লঘুচাপটি বর্তমানে বিহার এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশের অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর-প্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তরপূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। আজ সোমবার রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। রবিবার সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পাওয়া শুরু করতে পারে। রবিবার পর্যবেক্ষণাধীন ৮৪টি পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে ৪১টির পানি হ্রাস পায় এবং বেড়ে যায় ৩৭টির পানি। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ২টি নদীর পানি। রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রেকর্ড হয় ৫শ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মাসে ইতোমধ্যে সারাদেশে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৫ হাজার মিলিমিটার ছাড়িয়ে গেছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল থেকে জানান, যমুনা নদীর ভাঙনে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অজুর্নাসহ ৪টি ইউনিয়নের ৫ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় সরকারী বা বেসরকারীভাবে তেমন কোন ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি। ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় প্রশাসন। তীব্র ভাঙনে শত বছরের অজুর্না গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে থাকলেও টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজের প্রস্তাবনা পাঠিয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম উদাসীনতায় যমুনা নদীর ভাঙনে প্রতিদিনই মানুষ নতুন করে গৃহহীন হয়ে পড়ছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অজুর্না, গাবসারা, নিকরাইল, গোবিন্দাসী ইউনিয়নগুলোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ইউনিয়নগুলোর মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিগত ২০১২ সালে উপজেলার খানুরবাড়ি গ্রামে ভাঙন পরিদর্শনকালে স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান পিংনা-জোকারচর পর্যন্ত গাইড বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। অন্যদিকে গোবিন্দাসী, গাবসারা ও নিকরাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি হারানো পরিবারগুলো এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি। নেয়া হয়নি ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ। আর এসব গৃহহীন মানুষের ঠাঁই হয়েছে বিভিন্ন সড়কের ওপর। তারা সেখানে কোন রকমে দিনাতিপাত করছে। বসতভিটা হারানো পরিবারগুলো জানান, এমপির দেয়া বক্তব্যের যদি বাস্তবায়ন হতো তাহলে কয়েক হাজার পরিবার ও খানুরবাড়ি হতে কোনাবাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারের গাইডবাঁধ নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেত। ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলালুজ্জামান সরকার বলেন, বসতভিটা হারানো ৩১টি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিল থেকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। স্থায়ী ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজ বলেন, অজুর্না গ্রাম রক্ষা এবং ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক বাঁধের ৬শ’ মিটার কাজের জন্য জরুরীভিত্তিতে দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকার একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাবনার অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। স্টাফ রির্পোটার, বাগেরহাট থেকে জানান, টানা এক সপ্তাহের ভারি বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ায় দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মংলায় জাহাজে পণ্য বোঝাই খালাস কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের কারণে রবিবারও মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল, হাড়বাড়িয়া এবং বহির্নোঙ্গরে অবস্থান করা মোট ১১টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) কাজী গোলাম মোক্তাদের বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে জাহাজে পণ্য বোঝাই ও খালাস কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। বর্তমানে মংলা বন্দরে পণ্য খালাসের জন্য গম, কয়লা, সার ও ক্লিংকারবাহী (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) ১১টি বিদেশী জাহাজ অবস্থান করছে। বৃষ্টিপাতের কারণে এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’ টানা বৃষ্টিতে মংলা শহরতলীর মিয়াপাড়া, শেলাউনিয়া, কুমারখালী, জয়বাংলাসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। একটানা বৃষ্টির পানিতে শহরের প্রধান প্রধান রাস্তায় হাঁটু পানির কারণে জনসাধারণের চলাচলে খুব সমস্যা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে লঘুচাপে প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। প্রচ- ঢেউয়ের কারণে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলো টিকতে পারছে না। বৈরী আবহাওয়াতেও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলো সুন্দরবনের কচিখালী, সুপতি, দুবলাচর, নারকেলবাড়িয়াসহ বনের ছোট ছোট বিভিন্ন নদী ও খালে আশ্রয় নিয়েছে বলে বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে। স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, অব্যাহত বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যশোরের জনজীবন। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন জেলার নি¤œাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। সপ্তাহখানেক ধরে যশোরে থেমে থেমে আষাঢ়ের বৃষ্টি শুরু হলেও গত তিনদিন ধরে চলছে বর্ষণ। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় তলিয়ে গেছে শহরের রাস্তাঘাটও। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। যশোর শহর ঘুরে দেখা গেছে, ভারি বর্ষণে শহরের বেজপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, টিবি ক্লিনিকপাড়া, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ শহরের নি¤œাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার ড্রেনের পচা পানি উপচে রাস্তায় এবং আশপাশের বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও মাছের ঘের। এ মাছ ছড়িয়ে পড়ায় ড্রেন ও সড়কের উপরেই সৌখিন মৎস্যশিকারীদের দেখা গেছে। শনিবার ও রবিবারের বৃষ্টিপাতের পর পানি তার ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। এমনটা আগে কখনও হয়নি। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, বর্ষার সময় ওই এলাকার সড়ক ও ড্রেনের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় ড্রেন আটকে দেয়া হয়েছে। এজন্য পানি নামতে না পারায় গোটা বেজপাড়া এলাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যশোর এমএম কলেজের শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন নান্নু জানান, এমএম কলেজের দু’পাশের গেটেই হাঁটু পানি জমেছে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী কলেজ গেট পর্যন্ত এসেই আবার বাড়ি ফিরে গেছেন। নিজস্ব সংবাদদাতা থেকে জানান, টানা চারদিনের প্রবল বর্ষণে কুষ্টিয়ায় জনজীবন হয়ে পড়েছে অচল। অতি বৃষ্টির কারণে শহরের অধিকাংশ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক পরিবার হয়ে পড়েছে পানিবন্দী। মানুষজনের প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছে ব্যহত। শহরের কোর্টপাড়া, থানাপাড়া, আড়ুয়াপাড়া, মজমপুর, কুঠিপাড়া প্রভৃতি এলাকার রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। অনেক দোকানপাটে পানি ঢুকেছে। কুষ্টিয়া পৌর এলাকার চর মিলপাড়া এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার শিকার হয়েছে ভয়াবহ জলবদ্ধতার। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি নিষ্কাশন তেমন কাজ করছে না। এ জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতে পৌর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে জানান, কক্সবাজারে শনিবার থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কমে গেছে প্লাবিত নিন্মাঞ্চল ও ভিটা-বাড়ির পানি। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি নিষ্কাশন হওয়ায় দ্রুত উন্নতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। বন্যা দুর্গত এলাকায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। ৫দিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কক্সবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল প্লাবিত হয়। ঝড়ো হাওয়া, পাহাড় ধ্বস, পানিতে ডুবে ও গাছ চাপায় ৩ দিনে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক গ্রামের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রাণ বাঁচায় অনেকে। বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র ও বিভিন্ন স্থানে স্বজনদের বাড়ি-ঘরে অবস্থানরত বহু মানুষ ত্রাণ সামগ্রী পায়নি এখনও। বন্যা দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে অভিযোগ করেছেন জনপ্রতিনিধিদের অনেকে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম এবং পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় কক্সবাজার জেলার সদর, পেকুয়া, চকরিয়া, রামু, মহেশখালী, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার প্লাবিত বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। রামু উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ নেতা রিয়াজ উল আলম বলেন, সরকারীভাবে যে বরাদ্দ দুর্গত এলাকায় দেয়া হচ্ছেÑ তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। অবশ্য কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ত্রাণও বিতরণ করা হচ্ছে। কক্সবাজারে সপ্তাহ ধরে চলা টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে জেলার সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া উপজেলার প্রায় ৪০টি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৭ লাখ মানুষ। প্রশাসন ও নিজস্ব উদ্যোগে বন্যা কবলিতরা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, রামু ও পেকুয়া উপজেলায় বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার সহস্রাধিক বাড়িঘরে এখনও বসবাস উপযোগী হয়ে উঠেনি। অন্তত ১৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। দুর্গত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত ও মারা যাওয়া পরিবারে সহায়তাও দেয়া হচ্ছে। কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু তালেব রবিবার জনকণ্ঠকে বলেন, সদর উপজেলার চৌফলদ-ী, খরুলিয়া, ঈদগাঁও, ইসলামপুর, পোকখালী, বাংলাবাজার ও ভারুয়াখালী এলাকায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধ। এখনও কিছু কিছু বাড়ি পানির নিচে রয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানিয়েছেন, সরকারী ১৪১ আশ্রয়কেন্দ্রে ৬৫ হাজার দুইশ’ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অনেক এলাকায় মানুষ নিজ উদ্যোগে আত্মীয়স্বজনের বাসা ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়।
×