ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যতদিন সম্ভব খেলতে চান মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৭ জুন ২০১৫

যতদিন সম্ভব খেলতে চান মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর ডিসেম্বরে আবার ফিরেছেন নেতৃত্বে। দীর্ঘদিন ইনজুরিতে ভোগার পর ফেরা মাশরাফি বিন মর্তুজার অধীনে সতীর্থ ক্রিকেটাররাও যেন জ্বলে উঠেছেন। জিম্বাবুইয়ে ও পাকিস্তানকে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর মাশরাফি ভারতের বিরুদ্ধে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতিয়েছেন বাংলাদেশকে। বিশ্বকাপেও তার নেতৃত্বে উদ্ভাসিত নৈপুণ্য দেখিয়েছে টাইগাররা। তবে ভারতের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ জিতলেই ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার যোগ্যতা অর্জিত হবেÑ এমন একটি পরিসংখ্যান ছিল। নয়ত অপেক্ষা করতে হবে আগামী মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হোমসিরিজে প্রয়োজনীয় পরিমাণ জয়ের জন্য। ভারতের বিরুদ্ধেই সেটা করে ফেলেছে মাশরাফি বাহিনী। এখন তার লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার। চলতি বছর বিশ্বকাপ শেষে ফিরেই ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত এই পেসার জানিয়েছিলেন আগামী বছর টি২০ বিশ্বকাপ শেষেই অবসরে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাফল্যে নিজেও দারুণ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। এখন নতুন করে ভাবছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য যে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল সেটাতে জেতার পর এখন ৮ দলের এ আসরে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মাশরাফি। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ দলের (টেস্ট ও ওয়ানডে) অধিনায়ক হয়েছিলেন মাশরাফি। কিন্তু সিরিজ শুরুর প্রথম টেস্টেই ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যান। অধিনায়ক হন সাকিব আল হাসান। ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময়ই এভাবে ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে তাকে। সে কারণে নিরবচ্ছিন্নভাবে অধিনায়কত্বও করতে পারেননি। অবশেষে গত বছর এমন সময়ে নেতৃত্বে ফিরলেন যে সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ঘোর অমানিশায় পতিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের পুরোটাই ছিল বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতার বছর। পরাজয়ের গ্লানি সঙ্গী হয়েছে সহযোগী সদস্য দেশ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও। ডিসেম্বরে অবশেষে নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকুর রহীম বহাল থাকলেও মাশরাফি দলের ওয়ানডে ও টি২০ অধিনায়ক হিসেবে ফেরেন। আর নড়াইল এক্সপ্রেসের প্রত্যাবর্তনেই জ্বলে ওঠে বাংলাদেশ দল। জিম্বাবুইয়েকে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে নিজেদের আবারও ফিরে পায় টাইগাররা। এরপর থেকে আর সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েনি। পাকিস্তান ও ভারতের মতো ক্রিকেট পরাশক্তিরাও পদানত হয়েছে মাশরাফির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের কাছে। ২২ ওয়ানডে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ১৫টিতেই জিতিয়েছেন তিনি। আর সে কারণেই ক্যারিয়ারটাকে আরও প্রলম্বিত করার ইচ্ছাটা বেড়েছে তার। যতদিন সম্ভব খেলতে চান তিনি। অথচ ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপের পরই অবসরে যাওয়ার চিন্তা করছিলেন এমন গুঞ্জন ছিল। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সেটা আসলে খুব গুরুত্ব দেয়ার মতো কিছু ছিল না। আমি নিজের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি নিয়ে ভাবছিলাম। আমি ভেবেছিলাম তেমন দীর্ঘ সময় আমি খেলতে পারব না। কিন্তু এখন আমরা এটা (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) অর্জন করেছি। কেন আরও কঠোর পরিশ্রম করব না আমরা? বিশ্বকাপের পরই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দ্বিতীয় বড় আসর। আমি টুর্নামেন্টটা খেলতে পারলে খুব ভাল বোধ করব। এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার জন্য নিজের প্রচেষ্টা আরও বাড়াব আমি। আরও কঠোর পরিশ্রম করতে চাই, নিজেকে ফিট রাখতে চাই যেন সে পর্যন্ত খেলতে পারি।’ বাংলাদেশ ২০০৬ সালে সর্বশেষবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছিল। সেটা ছিল টাইগারদের চতুর্থ অংশগ্রহণ। এখন পর্যন্ত মাত্র এক ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। আর ২০০৯ ও ২০১৩ সালে র‌্যাঙ্কিং খুব নিচুতে থাকার কারণে খেলতে পারেনি। আর সে কারণেই ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে মাশরাফি বলেছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে সেটা হবে আজীবনের একটা প্রাপ্তি।’
×