ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তিন মাস ধরে বোমাবর্ষণ করেও ব্যর্থ সৌদি জোট

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২৬ জুন ২০১৫

তিন মাস ধরে বোমাবর্ষণ করেও ব্যর্থ সৌদি জোট

সৌদি আরব ও এর জোটভুক্ত দেশগুলো দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনের ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে প্রায় তিন মাস যাবত। দেশের অধিকাংশ শহর দখলকারী শিয়া বিদ্রোহীদের হটাতে এবং সৌদি অতিথিশালায় আশ্রয় নেয়া ইয়েমেনী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় পুনর্প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ বিমান অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সৌদিজোট। কিন্তু এ বোমাবর্ষণ উস্কে দিচ্ছে কেবল ইয়েমেনের ক্রোধকেই। খবর নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের। সৌদিজোটের বিমান অভিযানে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি এ পর্যন্ত। উপরন্তু, হুতি বিদ্রোহীরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং সংঘাতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ২ হাজার ৬শ’র বেশি মানুষ। আরব অঞ্চলের দরিদ্রতম এ দেশটিতে মানবিক সঙ্কট বৃদ্ধির জন্য সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বোমাবর্ষণ এবং সমুদ্রপথ সীমিতকরণকে দায়ী করেছে ত্রাণ সংস্থাগুলো। সংক্ষিপ্ত মেয়াদের জন্য হলেও একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য গত সপ্তাহে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বৈঠক ব্যর্থ হলে কেবলই স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, এ সংঘাত অবসানে বাস্তবসম্মত কৌশলের অভাব রয়েছে সৌদি আরবের। বিশ্লেষকদের মতামত এবং বিভিন্ন এলাকায় ইয়েমেনীদের সাক্ষাতকার থেকে এ কথা জানা যায়। তাদের অনেকেই বলেছেন, সৌদি হস্তক্ষেপের কারণে সমস্যা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সমাধানে পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। লেবাননের বৈরুতে কার্নেগি মিডলইস্ট সেন্টারের ইয়েমেনী অতিথি শিক্ষক ফারিয়া আল-মুসলিমী বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে, সৌদি আরব ইয়েমেন অভিযান শুরু করার আগে প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করেনি। তারা ভেবেছিল, বিষয়টা বাস্তবে সহজ হবে। কিন্তু সে রকম হলো না। সফলতা অর্জনের জন্য সৌদি আরব অত্যন্ত নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে সৌদি আরবকে এবং বেসামরিক নাগরিকদের নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হতার সঙ্গে তা পর্যবেক্ষণ করছে। ইয়েমেনে আল কায়েদা শাখার ঘাঁটি রয়েছে। এ জঙ্গী গোষ্ঠী পাশ্চাত্যের কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক গ্রুপ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন যাবত এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জিহাদীরা গত সপ্তাহে রাজধানী সানায় বেশকিছু মারাত্মক হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আসিরী সোমবার এক সাক্ষাতকারে জোটের অগ্রগতির সমর্থনে বলেছেন, বোমা হামলায় হুতিদের সামরিক শক্তি হ্রাস পেয়েছে এবং তাদের অনেক ভারি অস্ত্র ধ্বংস হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের অধৈর্য হওয়া উচিত হবে না। তিনি দেশটির বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার জন্য হুতিদের দায়ী করেন। ২০১২তে আরব বসন্ত আন্দোলনে ইয়েমেনী প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহয়ের পতনের পর একটি অন্তর্বর্তী পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে এ সংঘাত শুরু হয়।
×