ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিদেশী বিনিয়োগে শীর্ষ দশে ভারত

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৬ জুন ২০১৫

বিদেশী বিনিয়োগে শীর্ষ দশে ভারত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জাতিসংঘের খতিয়ান বলছে, ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে বিদেশী লগ্নি বেড়েছে ভারতে। ২০১৪-য় বিদেশী লগ্নি টানার প্রতিযোগিতায় ভারত ফের প্রথম দশটি দেশের তালিকায় ঢুকে পড়েছে। তার স্থান এখন নবম। তবে সেখানেও প্রথম আটটি দেশের তুলনায় ভারত যথেষ্ট পিছিয়ে। ২০১৪ সালে ভারতে ৩,৪০০ কোটি ডলার বিদেশী লগ্নি এসেছে। ২০১৩ সালে যা ছিল ২,৮০০ কোটি ডলার। গোটা বিশ্বে কোন দেশে কত বিদেশী লগ্নি ঢুকছে, বৃহস্পতিবার তার খতিয়ান ‘ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট-২০১৫’ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনসিটিএডি)। নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় এসে বিদেশী লগ্নি টানতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ঘোষণা করে ভারতে কারখানা তৈরির জন্য বিদেশী শিল্পপতিদের আহ্বান জানিয়েছেন মোদি। যে-দেশেই যাচ্ছেন, সেখানেই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র প্রচারকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি। বিমা, রেল পরিকাঠামো, প্রতিরক্ষার মতো ক্ষেত্রে বিদেশী লগ্নির দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। তবে রিপোর্ট প্রকাশের পরে জাতিসংঘের এ সংস্থার অর্থনীতিবিদ প্রেমিলা নাজারেথ বলেন, ভারতের লগ্নি-পরিবেশ ভাল করার চেষ্টা, নাকি অন্য দেশগুলো এখনও মন্দার প্রকোপ থেকে বেরোতে পারেনি বলেই ভারতে বিদেশী লগ্নি আসছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নিজেই বারবার বলছেন, ভারত হলো গোটা বিশ্বে গুটিকতক উজ্জ্বল জায়গাগুলোর মধ্যে একটা, যেখানে লগ্নিকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহী হচ্ছেন।’ বিদেশী লগ্নির পরিসংখ্যান দেখিয়ে নাজারেথের যুক্তি, ‘ভারতের আগে যে আটটি দেশ রয়েছে, তার সব ক’টিতেই গত বছরে ওই লগ্নি ৫ হাজার কোটি ডলারের অনেক নিচে। ভারত তাদের থেকেও পিছিয়ে। গত কয়েক বছরের হিসেবে ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত অন্য দেশগুলোর থেকেও বেশ পিছিয়ে তারা।’ মোদি সরকারের জন্য অবশ্য আশার কথাও রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে। সেখানে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে অর্থাৎ ২০১৫ সালে বিদেশী লগ্নির রেখচিত্র উর্ধমুখী থাকার সম্ভাবনাই বেশি। বিশেষ করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচীর হাত ধরে কারখানা ক্ষেত্রের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও দাবি, চলতি বছরে রেকর্ড পরিমাণ বিদেশী লগ্নি আসবে। ইতোমধ্যেই তার ইঙ্গিত মিলছে। শেষ পরিসংখ্যান বলছে, গত এপ্রিল মাসে দেশে ৩৬০ কোটি ডলার লগ্নি এসেছে। যা মার্চের তুলনায় ৭১ শতাংশ বেশি। ইউপিএ-জমানার কর সংক্রান্ত নীতি, ব্যবসা ও বিনিয়োগের প্রক্রিয়ায় জটিলতা বিদেশী লগ্নির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে অভিযোগ তাদের। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি সরকার ভারতে চীনা বিনিয়োগ টানতেও উৎসাহী। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে দিলি ও আমদাবাদে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন মোদি। নিজেও চীন সফরে গিয়ে বলেছেন, ভারতে রফতানি না-করে চীনা সংস্থাগুলো ভারতেই কারখানা তৈরি করুক। অন্যান্য ক্ষেত্রেও লগ্নি করুক চীন। তবে জাতিসংঘের রিপোর্ট বলছে, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় লগ্নি করতেই বেশি আগ্রহী চীন। চীনের লগ্নিতে ভর করেই পাকিস্তানে বিদেশী লগ্নির পরিমাণ ২০১৩ থেকে ২০১৪-য় ৩১ শতাংশ বেড়েছে। চীন-পাকিস্তান শিল্প করিডর থেকেও পাকিস্তান লাভবান হবে। এপ্রিল মাসে দু’দেশের চুক্তি অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছরে পাকিস্তানে ৪৫৬০ কোটি ডলার লগ্নি করবে চীন। একইভাবে শ্রীলঙ্কাতেও পরিকাঠামোয় বিপুল লগ্নি করছে তারা।
×