ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বন্দরে পণ্য ওঠানামা ব্যাহত

চট্টগ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৫ জুন ২০১৫

চট্টগ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে টানা তিনদিনের ভারি বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে নগরীর নিচু এলাকাগুলো। নগরীর বাইরে বিভিন্ন উপজেলায়ও পানিতে সয়লাব হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে ডুবে গেছে খাল বিল, ফসলী জমি, পুকুর-জলাশয়। মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃষ্টিপাত আরও দুয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো থেকে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। গত সোমবার থেকে চট্টগ্রামে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। শুরুতে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কম থাকলেও ক্রমেই তা ভারি বর্ষণে রূপ নেয়। একটানা বর্ষণের ফলে দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। অনেক সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলও কমে যায়। এতে করে বেকায়দায় পড়ে কর্মজীবী মানুষ। বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। কিছু প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা ব্যাহত হয়। বিশেষ করে বহির্নোঙ্গরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য লাইটারিং সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। কারণ, ছোট লাইটার জাহাজগুলো বহির্নোঙ্গর পর্যন্ত যেতে পারছে না প্রচ- ঢেউ, স্রোত ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে। একটানা বর্ষণে জলমগ্ন হয় মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, হামজারবাগ, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, ছোটপুল, হালিশহর, আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকা, প্রবর্তক মোড়, কাপাসগোলা, বাদুড়তলা, চকবাজার, তিন পুলের মাথা, সাগরিকা, চাক্তাই, রাজাখালিসহ নিচু এলাকাগুলো। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবনের নিচ তলায় পানি ঢুকে পড়ে। এতে করে জীবনযাত্রায় দুর্বিষহ ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় মৌসুমী বায়ু প্রবল থাকার কারণে বুধবার দুপুর ১টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি বর্ষণ হতে পারে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ু বিস্তার লাভ করেছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ পর্যন্ত। সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। বছরের এ সময়টিতে এ ধরনের আবহাওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদগণ বলেন, লঘুচাপের প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি না হলেও ঝড়ো হাওয়াসহকারে বৃষ্টিপাত হবে। বুধবার সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং শুরু করে জেলা প্রশাসন। দুপুরে মাইকিং করা হয় নগরীর আকবর শাহ, শাপলা আবাসিক এলাকা, বিশ্ব কলোনী, ফারুক চৌধুরী মাঠ, টাইগার পাস, লালখান বাজার মতিঝর্না, বাটালি হিল, বায়েজিদ বোস্তামীসহ বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায়। চট্টগ্রামে মোট ১৩ পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস রয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। পটিয়া প্রাইমারি ট্রেনিং সেন্টারে হাঁটু পানি নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া থেকে জানান, টানা দু’দিনের মুষলধারে বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের পটিয়া প্রাইমারি ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিআই) হাঁটু পরিমাণ পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পটিয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছে। পিটিআইর প্রীতিলতা হল, আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ হল ও রোকেয়া হলের বিভিন্ন রুমে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়েছে।
×