ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইফতারে দেশীয় ফল

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৫ জুন ২০১৫

ইফতারে দেশীয় ফল

রমজান মাসে ইফতারে সাধারণত অনেকের মধ্যে তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। সঙ্গে থাকে দেশী-বিদেশী ফলমূলও। তবে এবার ইফতারের তালিকা অন্যবারের তুলনায় একটু ব্যতিক্রম। এবার তালিকায় বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে দেশীয় ফলফলাদি। সাধারণত এ সময় ঢাকার বড় বড় রেস্তরাঁর সামনে কিংবা রাস্তার পাশে, এমনকি অলি-গলিতে বসা ইফতার সামগ্রীর দোকানে ভিড় থাকে। প্রথম দিন থেকেই এসব দোকানের ইফতার সামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু এবার চিত্র কিছুটা ভিন্ন। এখন ক্রেতা মৌসুমী ফল কিনতে ফলের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। ইফতারে দেশীয় ফলের আধিক্যের সংবাদটি সুখবরই বলা চলে। রোজা এমন সময় শুরু হয়েছে যখন বাজারভর্তি মৌসুমী ফল। ফলের দামও বেশ সস্তা। তাই ইফতারিতে এবার সবচেয়ে বেশি ফল খাওয়া হচ্ছে। এই মৌসুমী ফলের কারণে ইফতারে ভাজা জিনিস কম খাচ্ছেন অনেকেই। ভাজা ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ আইটেম বাদ দিয়ে মৌসুমী ফলকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। ফলের বাজারে আম, জাম, কাঁঠাল ও আনারসের ছড়াছড়ি। এই মৌসুমী ফলই কমিয়ে দিল ইফতার পণ্যের দাম। পেঁয়াজু ও বেগুনির পরিবর্তে মুড়ির সঙ্গে এখন অনেকের পছন্দ আম ও কাঁঠাল। এ কারণে অন্য ভোগ্যপণ্যের দামও কমতে শুরু করেছে। বলা চলে ভোগ্যপণ্যের বাজার এখন স্থিতিশীল। বলা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির কারণে বাজারে ফরমালিন ব্যবহারের প্রবণতাও অনেকটাই কমেছে। মানুষও এখন এই বিষয়ে বেশ সতর্ক। তবে ইফতারির খাদ্যমানের ব্যাপারে অভিযোগ এখনও ব্যাপক। রমজানে ঘরে ঘরে ইফতার সামগ্রী তৈরি হলেও বাজারে তৈরি ইফতার সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিছু আইটেম সব সময়ই বাইরে থেকে কেনা হয়। রয়েছে বিশেষ স্থানের ঐতিহ্যবাহী কিছু ইফতার সামগ্রীর আকর্ষণও। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ইফতারির বাহার-বৈচিত্র্যের দিকে যত গুরুত্ব দেয়া হয়, মানের দিকে ততটা নয়। মানহীন ভেজাল খাদ্য বিক্রি, অপরিচ্ছন্নভাবে খাবার তৈরি ও বিপণন রমজানের আদর্শ পরিপন্থী হলেও এ নিয়ে কোন কোন ব্যবসায়ীর দায়িত্বশীল মনোভাব থাকে না। অবশ্য কেমিক্যালযুক্ত ফলের কথা প্রায়ই শোনা যায়। ইফতারের ফলফলাদি যাতে কেমিক্যাল তথা ভেজালমুক্ত হয় তার নিশ্চয়তা দরকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। রমজানের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে যাচ্ছে, বাজারে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হলেও এখনও যেন তা পুরোপুরি সামগ্রিক হয়নি বা বাজারে কার্যকর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। মানহীন ভেজাল খাদ্য বিক্রি, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য বিক্রি বন্ধে বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ক্রেতাদেরও সচেতন হওয়া দরকার।
×