ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাদিয়া তবাস্সুম বৃষ্টি

চিকিৎসা সেবার আড়ালে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৫ জুন ২০১৫

চিকিৎসা সেবার আড়ালে

‘জ্ঞানার্জনে এসো সেবার্থে যাও’- এমন একটি সুন্দর প্রতিজ্ঞা দিয়ে যখন শুরু হয় একজন চিকিৎসকের শিক্ষাজীবনÑ তখন কেন আজ আমাকে লিখতে হবে তাদের থেকে পাওয়া কিছু অমানবিক আচরণের কথা! অতিরিক্ত মুনাফামুখিতা আজ দেশের প্রায় প্রতিটি মূল্যবান খাতকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। মানুষের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান হলো তার জীবন, কেবল বাণিজ্য করার জন্য যখন গড়ে ওঠে একেকটি বহুতল ভবন তখন জীবন বাঁচাতে গিয়ে জীবন হারানোর ঘটনা আজ খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ক্লিনিকের পাওনা মেটাতে পারছে না বলে প্রিয়জনের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হচ্ছে না এমন ঘটনাও আজ সমাজে ঘটছে। সেবা করার উদ্দেশ্যে থাকা চিকিৎসক অথবা সেবক সেবিকা খুঁজে পাওয়া আজ খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। শুধু মানব সেবার দৃঢ় প্রত্যয় বজায় রাখতে খুব অল্পসংখ্যক মানুষই সক্ষম হয়। প্রতিটি মানুষেরই বেঁচে থাকার জন্য পাঁচটি মৌলিক অধিকার রয়েছে। যার মধ্যে চিকিৎসাসেবা অন্যতম। আর সেই চিকিৎসাসেবা পেতে একজন সাধারণ মানুষকে বহু প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। কথায় বলে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আর সুস্থতার জন্য আমাদের সবাইকে কখনও না কখনও হতে হয় চিকিৎসক কিংবা সেবক-সেবিকার শরণাপন্ন। কোন মানুষের অতি মূল্যবান জীবন যখন বাঁচা-মরার ঠিক সন্ধিক্ষণে তখন সে একজন ডাক্তারের ওপরই সবটুকু ভরসা রাখে। ঠিক তখনই সেই মানুষটির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিছুসংখ্যক চিকিৎসক আছেন যারা খুব ভালভাবে তাদের বাণিজ্যের পরিকল্পনা করে নেন। সাধ্যের বাইরে অর্থ চেয়ে বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়া হয় মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করা মানুষকে অথবা লাখ লাখ টাকা বিল চার্জ ধরা হয় ক্লিনিকের বিল কাউন্টারে। অবশেষে কেউ বেঁচে যায় অথবা সবকিছুর শেষেও ইতি টানে একটি প্রাণ। একটি অনাগত ভবিষ্যতের জন্ম নিয়েও আজ চলছে তুমুল বাণিজ্য। লোভের মাত্রা যখন অতিলোভকেও ছাড়িয়ে যায়, যখন সেবা খাতের মতো অত্যন্ত মূল্যবান একটি খাতকেও বাণিজ্য আজ গ্রাস করতে চলেছে। তখন কেবল একটি কথাই বলার থাকে, সেদিনটি আর কত দূর যেদিন প্রতিটি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও সেবক-সেবিকার একমাত্র লক্ষ্য থাকবে প্রতিটি মানুষকে সেবা দিয়ে একটি সুন্দর জীবনের প্রদীপ জ্বেলে দেয়া। দেওয়ানপাড়া, জামালপুর থেকে
×