(পূর্ব প্রকাশের পর)
সম্ভাব্য উত্তর :
ক. ১৯৮৪ সালের ২রা মার্চ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।
খ. ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পরেই পাকিস্তানের জন্ম। পাকিস্তান দু’ভাগে বিভক্ত ছিল। পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানিদের প্রতি অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক যে বৈষম্য প্রদর্শন করছিল তার বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবী পেশ করেন। ছয় দফা কর্মসূচিকে বাঙালির মুক্তির সনদ বলা হয় কারণÑ
১। এটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজস্বরূপ।
২। এটি স্বৈরতন্ত্রের নিশ্চিত পতনের উপায় দেখিয়ে দেয়।
৩। এটি বাঙালি জাতিকে আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ করে।
৪। এটি ফেডারেশন গঠনের মাধ্যমে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবস্থা প্রণয়নের মাধ্যমে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী করে।
৫। এর ফলে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ঘটে।
৬। ’৭০ এর নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলরূপে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।
এই দফা বাঙালির মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে তাদের ব্যর্থ ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে আন্দোলনমুখি করে। তাই একে বাঙালির মুক্তির সনদরূপে আখ্যায়িত করা হয়।
গ. বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রমনার রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চ যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার প্রভাব বা তাৎপর্য নিম্নরূপ:
পাকিস্তানী শাসকদের প্রতিক্রিয়া :
ইয়াহিয়া খান ১৫ই মার্চ ঢাকায় আসেন ও বঙ্গবন্ধুকে আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ জানান। এর আড়ালে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করে জাহাজ ভরে পাকিস্তান হতে সৈন্য-অস্ত্র-রসদ আনা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিন সময় নষ্ট করে আলোচনা অসমাপ্ত রেখে ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার ও গণহত্যার নির্দেশ দিয়ে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’Ñ এর প্রভাবে বাঙালি জনমনে আন্দোলন দুর্বার হয়ে ওঠে। ২৩ শে মার্চ পাকিস্তান প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা সর্বত্র ওড়ানো হয়। উদ্যোমী তরুণরা পাড়া -মহল্লায় স্থানীয় অস্ত্রের মহড়া ও সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে। গ্রেফতারের পূর্বে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা ওয়্যারলেসযোগে পৌঁছে দিয়ে তা প্রচারের নির্দেশ দেন। ফলে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
তাই বলা যায়, ৭ই মার্চের ভাষণ একদিকে পাকিস্তানীদের ভিত কাঁপিয়ে দেয় অন্যদিকে বাঙালি জনতার মনে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা জাগিয়ে ছিল।
ঘ. ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জনতার মনে স্বাধীনতার বীজ বুনে দেন। ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক তথা সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দেয় এবং অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করতে থাকে।
গ্রামের ও শহরের পাড়া, মহল্লায় উৎসাহী তরুণরা বাঁশ ও স্থানীয় হাতিয়ারের সাহায্যে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ ও মহড়া দিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু বেসরকারি সরকার চালু রাখেন। ৩৫ টি চিঠির আওতায় চলা প্রশাসনে পাকিস্তানি সরকার ব্যবস্থা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। বাঙালির মনে আসে স্বাধীনতার অনুভূতি আর হাতে আসে বাস্তবতার সার্বভৌমত্ব। পূর্বে বাংলার সামগ্রিক ব্যবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের ছাপ পরিলক্ষিত হয়। তাই ৭ই মার্চের ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে আপামর বাঙালি প্রত্যক্ষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তি ছিনিয়ে আনতে প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করে।
মুক্তিযুদ্ধে সকলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া আত্মোৎসর্গের বিনিময়ে হলেও স্বাধীনতা লাভ করার মহান উদ্দেশ্যের ফলেই অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময় ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের দাম, দুঃসহ যন্ত্রণা আর অপরিমেয় ক্ষয়ক্ষতি সকলের অংশ গ্রহণের দিকেই আঙ্গুল নির্দেশ করে। যার বিনিময়ে আমরা পেয়েছি বিজয়। একটি স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশ।
বহুনির্বাচনী প্রশ্ন :
১। ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সংগঠিত ও সংঘবদ্ধ আন্দোলন ছিল কোনটি?
ক. নীল বিদ্রোহ খ. ফকির বিদ্রোহ
গ. সিপাহি বিদ্রোহ ঘ. বারাসাত বিদ্রোহ
২। ফকির মজনু শাহের মৃত্যুর পর ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলন স্থিমিত হয়ে পড়ে কেন?
ক. অর্থের অভাবে খ. জমিদারদের অত্যাচারে
গ. অস্ত্রের অভাবে ঘ. নেতৃত্বের অভাব ও অন্তর্দ্বন্দ্বে
৩। নীল বিদ্রোহের শিক্ষণীয় বিষয় কী?
ক. সমাজের নিম্নশ্রেণীর মানুষেরাও আন্দোলনকে সফল করতে পারে
খ. শিক্ষিতরাই কেবল আন্দোলন করতে পারে
গ. আন্দোলনই একমাত্র শান্তির পথ
ঘ. অশিক্ষিত ও দুর্বল কৃষক দ্বারা আন্দোলন সম্ভব নয়
৪। বাংলার সৈয়দ আহমদ কাকে বলা হয়?
ক. নওয়াব আব্দুল লতিফকে খ. হাজী মুহম্মদ মুহসীনবে
গ. সৈয়দ আমীর আলীকে ঘ. দুদু মিয়াকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: