ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ার্কস্টেশনের মনিটরে পিই রেশিও চান ব্রোকাররা

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ২৩ জুন ২০১৫

ওয়ার্কস্টেশনের মনিটরে পিই রেশিও চান ব্রোকাররা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়ার্কস্টেশনের মনিটরে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিওর তথ্য দেখতে চান ব্রোকাররা। তারা মনে করেন, শেয়ার কেনাবেচার সময় মনিটরে পিই রেশিও দেখা গেলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন বিনিয়োগকারীরা। এতে শেয়ারের অতি মূল্যায়নের প্রবণতাও কিছুটা কমবে। বাজারে স্বচ্ছতা বাড়বে। বর্তমানে বিভিন্ন তথ্য দেখা গেলেও, একই পেজে পিই রেশিও দেখা যায় না। পিই রেশিও দেখার জন্য ভিন্ন অপশনে যেতে হয়। কিন্তু লেনদেন চলাকালে প্রবল ব্যস্ততার মধ্যে এটি সম্ভব হয় না। বাজারের বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী ক্ষুদ্র আকারে বিনিয়োগ করায় একটি ওয়ার্কস্টেশনে অনেক বিনিয়োগকারী একসঙ্গে কেনাবেচা করেন। একজন অনুমোদিত প্রতিনিধি বা ট্রেডারকে এক ডজনের বেশি গ্রাহককে সেবা দিতে হয়। এমন অবস্থায় একটি কোম্পানির পিই রেশিও খুঁজতে অন্য পাতায় গেলে, ওই সময়ে অস্থির হয়ে উঠেন অন্য বিনিয়োগকারীরা। উল্লেখ্য, পিই রেশিও একটি শেয়ারের আয়ের বিপরীতে তার বাজারদর কতটা বেশি তা প্রকাশ করে। ধরা যাক, ক নামের কোন কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩০ টাকা। আর এর শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ২ টাকা। তাহলে শেয়ারটির পিই রেশিও দাঁড়াবে ১৫। কোম্পানিটি যদি তার আয়ের পুরোটাই বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ হিসেবে দিয়ে দেয়, তাহলে বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ ফেরত পেতে সময় লাগবে ১৫ বছর। পিই রেশিও যত বেশি, সেই শেয়ারকে বিনিয়োগের জন্য তত ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়। এ কারণে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বেশি পিইধারী শেয়ার কেনায় নিরুৎসাহিত করতে মার্জিন ঋণে শর্ত আরোপ করেছে। শর্ত অনুসারে, কোন কোম্পানির শেয়ারের পিই রেশিও ৪০ পৌঁছালে সেটি কেনার জন্য গ্রাহকদের কোন ঋণ সুবিধা (মার্জিন ঋণ) দিতে পারে না মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউস। ডিএসইর ওয়ার্কস্টেশনে শেয়ার কেনা বা বেচার জন্য অর্ডার সাবমিট করার পেজ খুললে, শেয়ারটি সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য দেখা যায়। উপরের দিকে থাকে কোম্পানির কোড নাম্বার ও তার নাম। এর পর শেয়ারটির সর্বশেষ দাম, দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দাম, তখন পর্যন্ত লেনদেন হওয়া শেয়ার সংখ্যা, আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস, কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ইত্যাদি তথ্য থাকে। কিন্তু এর শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস, পিই রেশিওর মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে না। স্টেকহোল্ডাররা মনে করেন, হোমপেজে বিদ্যমান তথ্যগুলোর পাশে সহজেই পিই রেশিওর তথ্য দেয়া সম্ভব। আর সেটি সম্ভব না হলে নিচের দিকে একটি কলাম করে সেখানে সর্বশেষ প্রান্তিকের ইপিএস, এ্যানুয়ালাইজড ইপিএস, ফ্লোটিং শেয়ার সংখ্যা এবং পিই রেশিও দেয়া যায়। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, হোম পেজে পিই রেশিও দেখা গেলে তা বাজারে স্বচ্ছতা বাড়াতে সহায়তা করবে। কারণ কোনো শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করলে অথবা কোন গুজবে প্ররোচিত হলে অনেক বিনিয়োগকারী ওই শেয়ার কেনার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেন। তারা খোঁজ নেন না শেয়ারটির পিই রেশিও কত, ওই মূল্যস্তরে শেয়ারটি কেনা নিরাপদ কি না। কিন্তু হোম পেজে পিই রেশিও দেখা গেলে তিনি হয়ত একবারের জন্য হলেও ভাববেন, শেয়ারটি কেনা কতটুকু যৌক্তিক।
×