স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ গত ১৪ জুন থেকে মহাধুমধামে নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ পালিত হলেও নৌ-দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নৌপথ সু-রক্ষায় কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা নিয়ম কানুনের কথা অবহিত করার পাশাপাশি যাত্রীদের সচেতন করতে এ সপ্তাহটি পালন করা হয়ে থাকে। এ বছর ‘সচেতন হই নৌ দুর্ঘটনা পরিহার করি’ সেøাগান নিয়ে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। এখানকার নৌ-বন্দর জুড়েও ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে রাখার পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, বাস্তবে এ কর্মসূচী নৌ-পথ সুরক্ষায় বা যাত্রী নিরাপত্তায় কোন উপকারেই আসে না। অভিযোগ রয়েছে, মনিটরিং ছাড়াই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে বেপরোয়াভাবে নৌযান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এমনকি মেঘনার ডেঞ্জার জোন থেকে শুরু করে ঢাকা-বরিশাল রুটে নৌযান চলাচল করছে ইচ্ছেমাফিক। প্রতিবছর বর্ষা, ঈদ ও কোরবানির মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে নৌ-দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ দুর্ঘটনার পরপরই বিআইডব্লিউটিএ ও সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরসহ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় নানা তৎপরতা শুরু করলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই তা থমকে যায়। নৌযান মালিকরা তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী নৌযান পরিচালনা করতে থাকেন।
সূত্রমতে, ১৫ মার্চের পর মেঘনার ডেঞ্জার জোনে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নিয়ম থাকলেও লঞ্চ মালিকরা তার তোয়াক্কা করছেন না। দৌলতখান-আলেকজান্ডার, মনপুরা-হাতিয়া, বেতুয়া-তজুমদ্দিন, ইলিশা-মজু চৌধুরীর হাট, মীর্জাকালু ও হাকিমউদ্দিনসহ বিভিন্ন রুটে চলছে অবৈধভাবে একতলা লঞ্চ। এসব রুটে এ মৌসুমে সি-ট্রাক চলাচলের কথা থাকলে তা কৌশলে বিকল দেখিয়ে পরিচালনা করা হয় একতলা লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। এবারও বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবিতে প্রায় দশজনের প্রাণহানি ঘটেছে। বর্ষা মৌসুমে ওই নদীতে ট্রলারে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সূত্রে আরও জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় না থাকার সুযোগে প্রভাবশালী নৌ-যান মালিকরা এ মৌসুমে যাত্রী জিম্মি করেই হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল টাকা। শুধু মেঘনার ডেঞ্জার জোন নয়; অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ঢাকা-বরিশাল রুটে রোটেশন পদ্ধতিতে চলাচল করছে দোতলা লঞ্চ।
জানা গেছে, ঢাকা ও বরিশাল উভয় প্রান্ত থেকে বিআইডব্লিউটিএ’র রুট পারমিট অনুযায়ী প্রতিদিন সাতটি করে লঞ্চ ছাড়ার কথা থাকলেও যাত্রীদের জিম্মি করে উভয় প্রান্ত থেকে ৩ থেকে ৪টি করে লঞ্চ পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: